ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

জাবিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

জাবি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১৯, ২৯ অক্টোবর ২০২৫   আপডেট: ১৬:১৯, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
জাবিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের অপতৎপরতা ও নাশকতার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু), ছাত্রদল ও ছাত্রশক্তির উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়কে এ মিছিল করা হয়েছে। মিছিল শেষে তারা বটতলায় মানববন্ধন করেন তারা।

আরো পড়ুন:

নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের অপতৎপরতা বিরুদ্ধে রাত ৯টায় বিক্ষোভ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। বিক্ষোভ মিছিল টিএমএইচ গেইট থেকে ডেইরি গেইট হয়ে ঢাকা আরিচা মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে ক্যাম্পাসের বটতলা হয়ে রবীন্দ্র চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

একই সময় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা জাতীয় ছাত্রশক্তি।

এছাড়া রাত ১০টায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু)।

বিক্ষোভে তারা প্রশাসনের উদাসীনতার সুযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিলের প্রতিবাদ ও জুলাইয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতা ও শিক্ষক-কর্মকর্তাদের রাষ্ট্রীয় আইনে বিচার দাবি করে। জাকসুর কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়েছে শাখা ইসলামি ছাত্রশিবির।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ছাত্রলীগের চামড়া তুলে দেবো আমরা’, ‘আলিফ-শ্রাবন যেই গেটে, ছাত্রলীগ কেনো সেই গেটে’, ‘বিচার বিচার বিচার চাই, ছাত্রলীগের বিচার চাই’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেনো বাহিরে’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।

মিছিল শেষে জাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) মাজহারুল ইসলাম বলেন, “২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরে আওয়ামীলীগ তার রক্তপিপাসু রূপ দেখানোর মাধ্যমে তাদের ফ্যাসিবাদী যাত্রা শুরু করেছিল। তারপর পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলার গণহত্যা, সাইদি সাহেবের রায়কে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ড এবং ২৪ এর গণহত্যার মাধ্যমে সেই ফ্যাসিবাদী রক্তপিপাসার সিলিসিলা বজায় রেখেছিল। আমরা আজ দেখেছি ছাত্রলীগ নামের কিছু কুলাঙ্গার নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ব্যানারে সামনে এসেছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই যে সন্ত্রাসীদের আমাদের চব্বিশের শহীদেরা রক্ত দিয়ে নিষিদ্ধ করেছে, তারা আজীবন নিষিদ্ধই থাকবে।”

তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গাফিলতির কারণেই ছাত্রলীগ আজ নাশকতা পরিকল্পনা করার সুযোগ পাচ্ছে। আপনারা অতিদ্রুত ছাত্রলীগের আশ্রয়দাতাদের চিহ্নিত করুন, অপরাধীদের বিচার করুন। অন্যথায় ছাত্রলীগ পুণর্বাসনের দায় আপনাদের নিতে হবে।”

জাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, “জাকসুর আগেও আমরা জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিচার নিয়ে সোচ্চার ছিলাম, জাকসুতে নির্বাচিত হওয়ার পরেও আমরা বিচারের দাবি থেকে এক চুলও সরে আসিনি। জুলাই হামলার বিচারের জন্য গঠিত তদন্ত কমিটিতে যেসব শিক্ষক রয়েছেন, তারা যদি জুলাই হামলায় জড়িত শিক্ষকদের বিচার এবং নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে মামলা না করেন, তাহলে আমরা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাওয়ার আগে আপনাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাব।”

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যদি আর কখনো নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মী ক্যাম্পাসের ত্রিসীমানায় কোনো ধরনের কর্মসূচি দেওয়ার দুঃসাহস দেখান, তাহলে আপনারা এখান থেকে জীবিত হয়ে মায়ের কোলে ফিরে যেতে পারবেন না। এখনো আমাদের অনেক মায়ের সন্তান বিভিন্ন হাসপাতালের মর্গে আছেন, অনেক জুলাই যোদ্ধা এখনো হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে। আর আপনারা এখানে মানববন্ধন করার দুঃসাহস দেখান, আপনাদের দুঃসাহসকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করবো আমরা।”

ছাত্রশক্তি আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে শাখা ছাত্রশক্তির নেতা ও জাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আহসান লাবীব বলেন, “এনাম ও সোহলের মতো ছাত্রলীগের কুখ্যাত সন্ত্রাসীরা এই ক্যাম্পাসে প্রধান ফটকের সামনে মিছিল করে। অথচ প্রক্টর অফিস এ বিষয়ে অবগত না! প্রক্টর অফিস কেন জানে না? নিরাপত্তা অফিস কেন জানে না? তাহলে কি আমরা ধরে নেব সেই নিরাপত্তা অফিসের ইন্ধনে সেই প্রোগ্রামগুলো হচ্ছে?”

তিনি বলেন, “আমরা জানি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা অফিসের কাজ হলো শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এই নিরাপত্তা অফিসারদের আমরা দেখেছি জুলাই আন্দোলনকারীদের তথ্য ছাত্রলীগের কাছে বিলিয়ে দিতে। আন্দোলনকারীরা কোথায় আছে তাদের সেই তথ্য পৌঁছে দিত ছাত্রলীগের কাছে, যাতে আমরা হামলার শিকার হই, সেই ব্যবস্থা নিরাপত্তা অফিসাররা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনের উচিত নিরাপত্তা অফিস থেকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের এই দালালকে সরানো এবং উপাচার্য অফিস থেকে আওয়ামী পাণ্ডাগুলোকে সরানো।”

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়