এনডিবির সদস্য হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ

নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এনডিবি) সদস্য হওয়ার পথে বাংলাদেশ। উদীয়মান পাঁচটি বড় অর্থনীতির জোট ব্রিকসের উদ্যোগে ছয় বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয় এনডিবি। ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার নামের আদ্যক্ষর নিয়ে নামকরণ হয় ব্রিকস জোটের। 

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি)  দুপুর ২ টায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবং এনডিবির প্রেসিডেন্ট মি. মার্কোস ড্রাদো ট্রয়জোর সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল সভা হয়।  সভায় বাংলাদেশ সরকারের অর্থ বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এবং এনডিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশ নেন।

সভার শুরুতে অর্থমন্ত্রী এনডিবির প্রেসিডেন্টকে সভায় অংশ নেওয়ায় ধন্যবাদ জানান।  অর্থমন্ত্রী ও এনডিবির প্রেসিডেন্টের মধ্যে পারস্পারিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের গত ১২ বছরের অভাবনীয় অর্জন অবহিত করে বলেন, সদস্য পদের জন্য যেসব শর্ত রয়েছে তার সবগুলোই বাংলাদেশের রয়েছে।  আশা করছি, খুব শিগগিরই বাংলাদেশ এনডিবির সদস্য পদ অর্জন করতে পারবে। এনডিবির প্রেসিডেন্টও বাংলাদেশের অগ্রগতির বিষয়ে একমত পোষণ করেন। 

তিনি সক্রিয়ভাবে বাংলাদেশের প্রস্তাব বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন।  খুব শিগগিরই তিনি পরিবারসহ বাংলাদেশ সফর করবেন বলেও জানান।

এনডিবির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০১৫ সালের ২১ জুলাই।  ব্যাংকের মোট মূলধন ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার।  আর প্রাথমিক মূলধন ৫ হাজার কোটি ডলার।  ২০১৬ সাল থেকে এনডিবি অবকাঠামো এবং টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে ব্রিকসভুক্ত দেশে ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে।  এছাড়া, ব্যাংকের অবকাঠামো, সেচ, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, পয়:নিষ্কাশন, সবুজ জ্বালানি এবং নগর উন্নয়ন খাত সংশ্লিষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়নে ঋণ দিয়ে থাকে।  ইতিমধ্যে কোভিড-১৯ মহামারির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার লক্ষ্যে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কার্যক্রমে ব্যাংক অংশ নিয়েছে।  ২০২০ সালে ব্যাংকটি একসঙ্গে ৭২টি প্রকল্পে ২৫.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন দিয়েছে।

এনডিবির সদস্য পদ অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য ব্যাংকের পণ্য এবং পরিষেবা ক্রয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ, সহনীয় সুদ হারে ঋণ নেওয়ার সুযোগ তৈরি, ব্যাংকের কৌশল, নীতি, পদ্ধতি ও কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার সুযোগ এবং সদস্য দেশের নাগরিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।

আগামী ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়ার পর সহজ শর্তে ঋণ পাওয়ার সুযোগটি সীমিত হয়ে যাবে।  এছাড়া পাঁচ বছর মেয়াদী ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০২১-২০২৫), টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি), ভিশন-২০৪১, ডেল্টাপ্ল্যান বাস্তবায়ন এবং কোভিড-১৯ পরবর্তী চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার লক্ষ্যে এনডিবি বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন অর্থায়নের উৎস হিসেবে সূচনা করবে বলে আশা করা যায়।

সভায় বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী এবং এনডিবির প্রেসিডেন্টের মধ্যে এনডিবিতে বাংলাদেশের ভূমিকা, নতুন ব্যাংকের ঋণের শর্তাসহ বিনিয়োগ খাত এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। পরবর্তীতে এনডিবির সদস্যভুক্তির মূল কার্যক্রমে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হবে।