ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ভারতীয় সিনেমায় জয়া, ঘোর আপত্তি জুঁই বিশ্বাসের

বিনোদন ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪১, ১৬ জুলাই ২০২৫   আপডেট: ১৩:২০, ১৬ জুলাই ২০২৫
ভারতীয় সিনেমায় জয়া, ঘোর আপত্তি জুঁই বিশ্বাসের

জয়া আহসান, জুঁই বিশ্বাস

দেশের সীমানা ছাড়িয়ে ওপারেও নিজের প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছেন অভিনেত্রী জয়া আহসান। বাংলাদেশের অনেক তারকাই এখন কলকাতার সিনেমা, ওয়েব সিরিজে কাজ করছেন। তবে জয়া আহসান সেখানে অনেকটা ব্যতিক্রম। ভারতীয় বাংলা সিনেমার গণ্ডি পেরিয়ে বলিউডেও কাজ করছেন এই অভিনেত্রী। 

ভারতীয় সিনেমায় বাংলাদেশি শিল্পীদের কাজ করা নিয়ে আপত্তি তুলেছেন কলকাতা পৌর করপোরেশনের নারী কাউন্সিল জুঁই বিশ্বাস। বিশেষ করে জয়া আহসানের কাজ নিয়ে ঘোর আপত্তি জানিয়েছেন। জুঁই অভিনেত্রী না হলেও শোবিজ অঙ্গনে পরিচিত মুখ। এই অঙ্গনের তারকাদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। 

আরো পড়ুন:

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) জুঁই তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। তাতে জয়ার কাজ করা নিয়ে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন। জুঁই বলেন, “আমরা পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরা কী জেগে ঘুমিয়ে আছি? আমাদের শিল্পী, কলাকুশলী, ইভেন্ট অর্গানাইজাররা বাংলাদেশে কাজ করতে পারছেন না, আটক করে রাখা হচ্ছে, অথচ জয়া আহসানকে ভারতে রেড কার্পেট দিয়ে অভিনয়ের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের কোনো শিল্পীর কি প্রতিভা নেই, জয়া যে চরিত্রটি করেছেন সেখানে অভিনয় করার মতো? কেন ভারতীয় জাদুঘরে তার মিউজিক অ‌্যালবাম রিলিজ হয়?” 

জুঁইয়ের এই বক্তব্য নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো খবরও প্রকাশ করেছে। বুধবার (১৬ জুলাই) সকালে জুঁই তার ফেসবুকে আরেকটি স্ট্যাটাস দেন। এতে জুঁই বলেন, “এটি সত্যি যে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় দেখা গেছে, পশ্চিমবঙ্গের শিল্পীরা বাংলাদেশে কাজ করতে গেলে প্রশাসনিক জটিলতা, ভিসা জট বা এমনকি ডিটেনশন-এর মতো ঘটনাও ঘটছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক ও দুশ্চিন্তার বিষয়। যদি দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান হয়, তাহলে সেটা দুই-পক্ষের হওয়া উচিত—না যে এক তরফা উদারতা দেখাতে হবে, না এক তরফা বন্ধুত্ব মেনে নিতে হবে।” 

উদাহরণ হিসেবে আবারো জয়া আহসানকে টেনে আনেন জুঁই বিশ্বাস। তার ভাষায়, “বাংলাদেশ যদি ভারতীয় শিল্পীদের জন্য সুযোগ সীমিত করে রাখে, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠবে, ভারত কেন বাংলাদেশি শিল্পীদের জন্য দরজা খোলা রাখছে? জয়া আহসান নিঃসন্দেহে একজন প্রতিভাবান অভিনেত্রী, কিন্তু প্রশ্নটা প্রতিভার নয়—প্রশ্নটা ন্যায়বিচার ও ভারসাম্যের। যখন ভারতীয় শিল্পীরা সীমাবদ্ধতায় ভোগেন, অথচ বাংলাদেশি শিল্পীরা এখানে বড় সুযোগ পান, তখন তা সবার চোখে বৈষম্য বলে মনে হয়।” 

প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে জুঁই বিশ্বাস বলেন, “এখানে পশ্চিমবঙ্গের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা কি সেই চরিত্রগুলো করতে অক্ষম? অবশ্যই না। তাহলে বারবার বিদেশি শিল্পীদের এমন ‘বাড়তি’ গুরুত্ব দেওয়ার যুক্তি কী? প্রযোজক-পরিচালকরা দেশ বিরোধী কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা উচিৎ নয় কি? যেকোনো শিল্পচর্চা অবশ্যই মুক্ত হওয়া উচিত। কিন্তু তার মধ্যে দেশীয় শিল্পীদের সুযোগ দেওয়াটাও দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। যখন তাদের কাজের সুযোগ বিদেশি শিল্পীদের দিয়ে দেওয়া হয় (যেখানে সেই দেশ ভারতীয় শিল্পীদের আটকে দেয়), তখন সেটি দায়বদ্ধতার অভাব বলেই মনে হয়।” 

প্রতীকী সহযোগিতা নয়, স্থায়ী নীতিগত অবস্থান দরকার বলে মনে করেন জুঁই। তার মতে, “যদি পাকিস্তানি শিল্পীদের ভারত নিষিদ্ধ করে, তাহলে বাংলাদেশি শিল্পীদের জন্য শর্তহীন মঞ্চ কেন? একতরফা সংস্কৃতিক দান কি আর রাজনীতি বা কূটনীতিতে কার্যকর? এটি নিছকই অর্থনৈতিক ক্ষতির প্রশ্ন নয়। এটি একটি ‘সফট পাওয়ার’ বা সাংস্কৃতিক ক্ষমতার প্রশ্ন। যখন ভারতের শিল্পীরা অন্য দেশের বাজারে প্রবেশ করতে পারে না, অথচ বিপরীতে সেই দেশের শিল্পীরা ভারতে ব্যবসা, সম্মান এবং সুযোগ পান, তখন এটা কেবল ‘বাণিজ্য’ নয়—ভারসাম্যহীনতা ও আত্মমর্যাদার প্রশ্ন। আমরা উদারতা দেখাচ্ছি—কিন্তু তার মূল্য দিচ্ছে নিজেরাই। উদারতা কূটনৈতিক সম্পর্কের একটি দিক হতে পারে, কিন্তু তার ভিত্তি হওয়া উচিত পারস্পরিকতা। বন্ধুত্ব কাঁধে কাঁধ রেখে চলে, হাঁটু গেড়ে নয়।”

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়