বিজিবি-চোরাকারবারি সংঘর্ষে নিহত ২
সুলতান মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম
দিনাজপুর জেলার মানচিত্র
দিনাজপুর প্রতিনিধি : দিনাজপুরের বিরামপুরে বিজিবি-চোরাকারবারিদের সংঘর্ষে মো.শাহিন আলম (২৫) এবং মো. সুলতান আলী (২৩) নামের দুজন নিহত হয়েছে। এ সময় বিজিবির সদস্যদের গুলিতে ১৫ জন আহত হয়েছে। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহত মো. শাহিন আলম উপজেলার পূর্ব জগন্নাথপুর গ্রামের মো. সুকুর দফাদারের ছেলে এবং হোটেল ব্যবসায়ী মো. সুলতান আলী একই এলাকার মো. আব্দুর রশিদের ছেলে।
মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় বিরামপুর রেল স্টেশনের পূর্ব পাশে এ সংঘর্ষ হয়।
বিরামপুর থানার ওসি মো. আমিরুজ্জামান জানান, ঈশ্বরদী থেকে রুপসা ট্রেনে করে চোরাকারবারিরা ভারতীয় কাপড় নিয়ে আসছিল। এ খবর পাওয়ার পর বিজিবি ট্রেনে অভিযান চালিয়ে অবৈধ মালগুলো আটক করে। পরে চোরাকারবারিরা সংঘবদ্ধ হয়ে বিজিবি সদস্যদের ওপর হামলা চালায় এবং বিজিবির এক সদস্যকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বিজিবি আত্মরক্ষার্থে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। এ সময় দুজন নিহত হয়।
সুলতান আলীর চাচা মমিনুল ইসলাম জানায়, আমার ভাতিজা দীর্ঘদিন ধরে রেল স্টেশনে চায়ের দোকান চালায়। সে কখনো চোরাকারবারের সঙ্গে জড়িত ছিল না। বিজিবি সদস্যরা তার দোকানের কর্মচারী শাহিনকে চোরাকারবারি বলে আটক করে নেওয়ার সময় সুলতান আলী বাধা দেয়। এ সময় বিজিবি সদস্যরা তাকে গুলি করে। সুলতান আলী ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে শাহিনকেও গুলি করে বিজিবি সদস্যরা।
২৯ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কোরবান আলী জানান, চোরাকারবারীরা বিজিবির ওপর হামলা চালালে এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসন কাজ করছে। সব বিজিবি সদস্যকে বিরামপুর রেল স্টেশন এলাকা থেকে সরিয়ে বিজিবি ব্যারাকে নেওয়া হয়েছে।
বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এস এম মনিরুজ্জামান আল মাসুদ বলেন, ‘দোষী বিজিবি সদস্যকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখী করা হবে।’ তিনি ভাঙচুর বা সহিংসতা না করতে স্থানীয়দের প্রতি অনুরোধ জানান।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান আবুর নেতৃত্বে রাত ৮টার দিক নিহতদের লাশ নিয়ে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ করে স্থানীয়রা। তারা বিরামপুর মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে। এ সময় রাস্তায় শত শত গাড়ি আটকা পড়ে। সেখানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বিজিবির গুলিতে সাধারণ দোকানদার মারা যাবে, এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না। এর আগেও বিজিবির গুলিতে সাধারণ মানুষ মারা গেছে, তার কোনো বিচার হয়নি।’
রাইজিংবিডি/দিনাজপুর/৩০ জুন ২০১৫/সুলতান মাহমুদ/রফিক
রাইজিংবিডি.কম