ঢাকা     সোমবার   ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

গুম হওয়া ৫ জনের সন্ধান মেলেনি

রণজিৎ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:০৮, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গুম হওয়া ৫ জনের সন্ধান মেলেনি

কুষ্টিয়ার ম্যাপ

কাঞ্চন কুমার
কুষ্টিয়া, ১৮ ফেব্রুয়ারি : কুষ্টিয়ায় গুম হওয়া পাঁচজনের সন্ধান আজও মেলেনি। শহরজুড়ে ছিল গুম আর আতঙ্ক। এ পর্যন্ত গুম হয়েছে পাঁচজন।

তবে মানবধিকার সংগঠনগুলোর দাবি গুমের সংখ্যা আরো বেশী। গুমের হাত থেকে রক্ষা পায়নি জনপ্রতিনিধি, ছাত্র, সন্ত্রাসী কেউই। স্বজনরা বুঝে নিয়েছেন তাদের মধ্য থেকে গুম হওয়াদের আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। তারপরও তারা সন্ধান চান।

কুষ্টিয়া পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলেক মাহমুদ ২০১০ সালের ২ এপ্রিল গুম হন। তার নির্বাচনী এলাকা কাটাইখানার মোড়ের একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বসে থাকা অবস্থায় মাইক্রোবাসে করে কতিপয় সশস্ত্র ব্যক্তি আইনশৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে তাকে তুলে নিয়ে যায়।

ঘটনার পর তার দুই ভাই আব্দুল মালেক ও তুফান ধর্না দিতে থাকেন আওয়ামী লীগ নেতাসহ বিভিন্ন জনের কাছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তার সন্ধান পাননি তারা।

কুষ্টিয়ার মানুষ নিশ্চিত হয়ে গেছেন তাকে হত্যা করে গুম করা হয়েছে। কিন্তু এরপরও পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন অপেক্ষায়। তাদের বিশ্বাস আলেক ফিরে আসবে তাদের মাঝে। এদিকে আলেক মাহমুদ না থাকলেও তার ওয়ার্ডটি শূন্য ঘোষণা করা হয়নি। কারণ এখন পর্যন্তু আলেকের মৃত্যু সনদ পাওয়া যায়নি।

দৌলতপুর উপজেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী পান্না বাহিনীর প্রধান পান্নার ছোট ভাই ছানাকে সিরাজগঞ্জের একটি বাড়ি থেকে আইনশৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে কতিপয় সশস্ত্র ব্যক্তি তুলে নিয়ে যায়।

২০১১ সালের প্রথম দিকে তাকে তুলে দিয়ে যাওয়া হলেও এখন পর্যন্তু তার কোনো সন্ধান পায়নি তার পরিবার।
কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ছানার স্ত্রী। কিন্তু তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ছানার বড় ভাই শিফাত ও পান্না ক্রসফায়ারে নিহত হয়। ছানার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকা-ের বিস্তার অভিযোগ ছিল।

প্রায় একই সময় দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের মেম্বার নূর মহম্মদকে লালনগর বাজার থেকে সাদা পোশাকধারী কতিপয় অস্ত্রধারী আইনশৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ।

মেম্বর নূর মহম্মদের বিরুদ্ধে তার ভাগ্নে পূর্ব বাংলা কমিউনিষ্ট পার্টি লাল পতাকার প্রধান ক্রসফায়ারে নিহত আনোয়ারকে সহযোগিতা করার অভিযোগ ছিল। আনোয়ার যে সকল মানুষকে অপহরণ করতো তাদের মুক্তিপণ আদায় করতেন নূর মহম্মদ। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকা-ের বিস্তার অভিযোগ ছিল।

সর্বশেষ ১২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্র ওয়ালিউল্লাহ ও আল মুকাদ্দাস । তারা দুজন ঢাকা থেকে কুষ্টিয়ায় ফেরার পথে নবীনগর থেকে আইনশৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে কতিপয় ব্যক্তি বাস থেকে নামিয়ে নেয়। ঘটনার পর থেকে ওই দুই ছাত্রের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ঘটনার পর নানা কর্মসূিচ পালন করে বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দেয়।

কিন্তু আন্দোলনকারীরা বুঝে গেছে তাদের বন্ধুরা আর ফিরে আসবে না। এই ভাবে একের পর এক গুমের ঘটনায় কুষ্টিয়ায় সর্বমহলের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। কেউ নিজেকে নিরাপদ মনে করেন না।

রাইজিংবিডি / রণজিৎ

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়