ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

মার্চের এদিনেও পুলিশের গুলিতে নিহত ৭

শাহ মতিন টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:২৬, ১১ মার্চ ২০২১   আপডেট: ০৯:৩৫, ১১ মার্চ ২০২১
মার্চের এদিনেও পুলিশের গুলিতে নিহত ৭

যশোরে পাকবাহিনীর গুলিতে আহত স্কুলছাত্রকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে (৫ মার্চ ’৭১)- ফাইল ফটো

একাত্তরের মার্চের এদিনটি ছিল বৃহস্পতিবার। মার্চের উত্তাল অসহযোগ আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আজ ছিল চতুর্থ দিবস। সারাদেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুর ডাকে সর্বাত্মক অসহযোগ পালন করেন।

হাইকোর্টের বিচারপতিসহ সরকারি ও আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানের সকল স্তরের কর্মচারীরা তাদের সংশ্লিষ্ট বিভাগের অফিস বর্জন করেন। আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো, অসহযোগ সমর্থনকারী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংস্থা, পেশাজীবীগণ, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বঙ্গবন্ধুর কর্মসূচীর সমর্থনে সোচ্চার। 

সাত মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ মোতাবেক যে সব যানবাহন চলার কথা সেগুলো চলাচল  করে। যে সব বেসরকারি অফিস খোলা থাকার কথা সে সব খোলা থাকে। যথারীতি সরকারি দপ্তরগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ মেনে চলে এবং সর্বত্র যা দৃশ্যমান হয় সেটি হচ্ছে, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে সমগ্র বাংলাদেশ পরিচালিত হচ্ছে। স্বাধিকারের দাবিতে অটল-অবিচল সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে যাচ্ছে।

এদিকে গত কয়েক দিন ধরেই বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সর্বত্র ‘সংগ্রাম পরিষদ’ গড়ে তোলার কাজ চলতে থাকে। কোন গণশত্রু  বা স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি যেন কোথাও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য দলের স্বেচ্ছাসেবকগণ বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে রাজধানীতে নৈশকালীন টহল কার্যক্রম শুরু করে।

বর্ষীয়ান মজলুম নেতা মওলানা ভাসানী এদিন টাঙ্গাইলে এক জনসভায় সকল রাজনৈতিক পক্ষকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সাত কোটি বাঙালীর নেতা শেখ মুজিবের নির্দেশ পালন করুন।

ন্যাপ প্রধান অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে তার সঙ্গে একান্ত বৈঠকে মিলিত হন। পাঞ্জাব প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব খুরশীদ হক বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার বাসভবনে এক বৈঠক করেন। বৈঠকে খুরশীদ হক আগের দিন রাওয়ালপিন্ডিতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সঙ্গে তার বৈঠকের বিস্তারিত বঙ্গবন্ধুকে অবহিত করেন।

এদিন ছাত্র ইউনিয়ন দেশবাসীকে সংগঠিত করতে একটি লিফলেট ছাড়ে। সেখানে তারা পাক হানাদারদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানায়। 

এদিন ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের উপ-আবাসিক প্রতিনিধি মি. কে. উলফ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার বাসভবনে সাক্ষাত করেন। বঙ্গবন্ধু তাকে যতদিন খুশি বাংলাদেশে থাকার অনুরোধ করে বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী দেশে গণহত্যা চালানোর পাঁয়তারা করছে। এ অবস্থায় মানবতা রক্ষায় তাদের দেশ না ছাড়তে অনুরোধ করেন।

বরিশালে এদিন কারাগার ভেঙ্গে ২৪ কয়েদী পালিয়ে যায় এবং পুলিশের গুলিতে ২ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়। কুমিল্লাতেও পুলিশের গুলিতে ৫ জন নিহত ও শতাধিক লোক আহত হয়।

ঢাকা/টিপু

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়