ঢাকা     মঙ্গলবার   ০৭ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৪ ১৪৩১

মাহে রমজান: কোরআন চর্চার মাস

এমদাদুল হক তাসনিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪৫, ১৫ এপ্রিল ২০২২   আপডেট: ১২:৫০, ১৫ এপ্রিল ২০২২
মাহে রমজান: কোরআন চর্চার মাস

মাহে রমজান কোরআন নাজিলের মাস। কোরআন চর্চার মাস। রমজানের সঙ্গে কোরআনের সম্পর্ক অত্যন্ত সুনিবিড়। এ মাসের বৈশিষ্ট্য যেমন মাসব্যাপী সিয়াম সাধনা, তেমনি এর অন্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এ মাসেই পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছে। তাই রমজানকে যেমন রোজার মাস বলা হয়, তেমনি কোরআন চর্চার মাসও বলা হয়। 

রমজান মাসে দিনের বেলা রোজা পালনের ফরজ বিধান যেমন রয়েছে, তেমনি রাতের বেলা তারাবির নামাজে কোরআন তেলাওয়াত করা ও তেলাওয়াত শোনার সুন্নাত বিধানও বিদ্যমান। রমজান ও কোরআনের সম্পর্কসূত্র উল্লেখ করে পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারায় ইরশাদ হয়েছে, ‘রমজান সেই মাস, যে মাসে কোরআন নাজিল হয়েছে।’ 

শুধু কোরআনই নয়, এ মাসের সঙ্গে মহাগ্রন্থ আল কোরআন ও অন্য আসমানি কিতাবগুলোর নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা মানবজাতির হেদায়েতের জন্য যে চারটি আসমানি কিতাব নাজিল করেছিলেন, সবই মাহে রমজানে নাজিল করেছেন। তাওরাত, জাবুর, ইঞ্জিল এবং সর্বশেষ কোরআনে কারিম রমজান মাসেই অবতীর্ণ হয়েছে। এ মাসেই পবিত্র কোরআন লাওহে মাহফুজ থেকে নিচের আসমানে নাজিল হয়েছে। আল্লাহ রমজানের পরিচিতি তুলে ধরে বলেছেন, ‘মাহে রমজান, যে মাসে অবতীর্ণ করা হয়েছে আল কোরআন, বিশ্বমানবতার কল্যাণ ও হেদায়েতের জন্য।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৫)

প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি রমজানে হজরত জিবরাইল (আ.) কে অবতীর্ণ পূর্ণ কোরআন একবার শোনাতেন এবং হজরত জিবরাইল (আ.) ও নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লামকে অবতীর্ণ পূর্ণ কোরআন একবার শোনাতেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনের শেষ রমজানে হজরত জিবরাইল (আ.)কে পূর্ণ কোরআন মজিদ দুবার শোনান এবং হজরত জিবরাইল (আ.)ও মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পূর্ণ কোরআন দুবার শোনান। (সহিহ বুখারি)

এতে বোঝা গেল রমজান শুধু কোরআন নাজিলের মাস নয়; বরং রমজান হলো- কোরআন শিক্ষণ প্রশিক্ষণ, কোরআন পঠন-পাঠন ও কোরআন চর্চার মাস এবং সর্বোপরি রমজান মাস হলো জীবনের সর্বক্ষেত্রে কোরআন অনুশীলন ও বাস্তবায়নের মাস।

কোরআন হলো কালামুল্লাহ বা আল্লাহর বাণী। কোরআন তেলাওয়াত হলো আল্লাহর সঙ্গে কথা বলা। কোরআনে কারিম তেলাওয়াতের মাধ্যমে বিরাট সওয়াব অর্জন করার সুযোগ রয়েছে। এর সঙ্গে অনেক উপকারিতাও রয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআনের একটি হরফ পাঠ করে, তাকে একটি নেকি প্রদান করা হয়। প্রতিটি নেকি দশটি নেকির সমান। আমি বলি না যে, আলিফ-লাম-মীম একটি হরফ। বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ, মীম একটি হরফ।’ (তিরমিজি) তাছাড়া পবিত্র কোরআন শিক্ষার মাধ্যমে দুনিয়া ও আখেরাতে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করা যায়। হজরত উসমান (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি সেই, যে নিজে কোরআন শিক্ষা করে ও অপরকে শিক্ষা দেয়।’ (সহিহ বোখারি)

কোরআন তেলাওয়াত ও চর্চার আরও একটি বড় লাভ হলো, কেয়ামতের ভয়াবহ অবস্থার সময় কোরআন তেলাওয়াতকারীর পক্ষে সুপারিশ করবে। এটা বিরাট সৌভাগ্যের বিষয়। হজরত আবু উমামা রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা কোরআন তেলাওয়াত করো। কারণ কোরআন কেয়ামতের দিন তেলাওয়াতকারীর জন্য সুপারিশ করবে।’ (সহিহমুসলিম) আল্লাহ তায়ালা মাহে রমজানে বেশি বেশি কোরআন চর্চার তাওফিক দান করুন। আমিন।

লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, মাসিক ইসলামী বার্তা
 

/তারা/ 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়