ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

রাখাইনের আরেকটি শহর দখল আরাকান আর্মির

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১২, ১৯ মার্চ ২০২৪   আপডেট: ১৪:২৩, ১৯ মার্চ ২০২৪
রাখাইনের আরেকটি শহর দখল আরাকান আর্মির

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রাথেডং শহর দখলে নিয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মি (এএ)। রাথেডংয়ে অবস্থানরত তিনটি জান্তা ব্যাটালিয়নের অবশিষ্ট সৈন্যদের তাড়িয়ে শহরটি দখলে নিয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি।

সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতি।

আরাকান আর্মির বলছে, জান্তাবাহিনী তাদের দখলে থাকা এলাকা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কন্সক্রিপশন (সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য) আইনের আওতায় যোগ দেয়া রোহিঙ্গাদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। স্থল ও সমুদ্রপথের পাশাপাশি আকাশপথেও বোমাহামলা চালাচ্ছে। তবে রাথিডংয়ে টিকতে পারেনি জান্তা বাহিনী।

এক বিবৃতিতে আরকান আর্মি জানিয়েছে, দুই সপ্তাহের তীব্র লড়াইয়ের পরে রোববার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যায় জান্তার হালকা পদাতিক ব্যাটালিয়ন ৫৩৬, ৫৩৭ এবং ৫৩৮-এর প্রায় ২০০ সৈন্য নৌকায় করে পালিয়ে গেছে। জান্তা সৈন্যদের রেখে যাওয়া বিপুল পরিমাণের অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।

বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি আরও জানিয়েছে, তারা নিকটবর্তী বুথিডাং শহরে জান্তা বাহিনীর লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন ৫৫২-এর সদর দপ্তর দখলের প্রচেষ্টাও বাড়িয়েছে।

জান্তাবাহিনী এ বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি। তবে এর আগে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি যতবার বিভিন্ন শহর, গ্রাম বা অঞ্চল দখলের দাবি করেছে, তার সবগুলোই সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে। 

গত বছরের ১৩ নভেম্বর রাজ্য থেকে জান্তা সেনাদের তাড়ানোর জন্য একটি বড় আকারের আক্রমণ শুরু করার পর থেকে রাখাইন রাজ্যের অর্ধেকেরও বেশি দখল করেছে আরাকান আর্মি। গোষ্ঠীটি রাখাইন রাজ্যের ১৭টি টাউনশিপের মধ্যে ছয়টি নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং রাথেডং সহ তিনটি শহর দখল করেছে, তবে শহরগুলো এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশটির নির্বাচিত অং সান সুচির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা দখল করে। এরপরই দেশটিতে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভ দমনে নৃশংস পদ্ধতি বেছে নেয় জান্তা। তাদের নিপীড়ন-নির্যাতন ও হামলায় অন্তত সাড়ে চার হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। বন্দী করা হয়েছে ২৫ হাজার মানুষকে। জান্তা বাহিনীর নৃশংস হামলায় মিয়ানমার জুড়ে অন্তত ৭৮ হাজার বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে।

২০২৩ সালের অক্টোবরের শেষ দিক থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর জোট পিপলস ডেমোক্রেটিক ফোর্স (পিডিএফ)। পিডিএমভুক্ত তিন গোষ্ঠী ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএ), আরাকান আর্মি (এএ) এবং তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (টিএনএলএ) এই সংঘাতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এই তিন গোষ্ঠী একত্রে থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স নামেও পরিচিত।

গত প্রায় চার মাসের সংঘাতে মিয়ানমারের অন্তত ৪০টি শহর এবং গুরুত্বপূর্ণ শান প্রদেশসহ অন্তত ৫টি প্রদেশ দখল করে নিয়েছে পিডিএফ।

/ফিরোজ/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়