অস্ট্রেলিয়ায় দুই মুসলিম নারীকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম
অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ গত সপ্তাহে মেলবোর্নের একটি শপিং সেন্টারে দুই মুসলিম নারীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে ৩১ বছর বয়সী এক নারীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেছে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
মেলবোর্নের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাসকো ভ্যালের ওই নারীকে বুধবার আদালতে হাজির করা হবে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দুই ভুক্তভোগীকে তাদের মাথা ঢাকা পোশাকের কারণে হামলা করেছিলেন।
ওই নারীর বিরুদ্ধে এপিং শপিং সেন্টারে হিজাব পরিহিত ৩০ বছর বয়সী এক গর্ভবতী নারীকে গলাটিপে হত্যার চেষ্টা এবং এর ১০ মিনিট পর হিজাব পরিহিত ২৬ বছর বয়সী আরেক নারীকে ধাক্কা ও চড় মারার অভিযোগ আনা হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে ইহুদি-বিরোধী একাধিক হামলার ঘটনার পর, দেশটির সরকার ঘৃণামূলক অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর নতুন আইন পাস করার দুই সপ্তাহ পর এটি ঘটল।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এই ঘটনাকে ‘নিন্দনীয়’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি এই সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছেন যে, তার সরকার মুসলিম-বিরোধী হামলার ঘটনাগুলোকে ইহুদি-বিরোধী হামলার তুলনায় কম গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি বিশ্বাসের ভিত্তিতে মানুষের ওপর সব হামলাকে গুরুত্বের সঙ্গে নিই এবং তাদের সকলেরই আইনের পূর্ণ শক্তির মুখোমুখি হওয়া উচিত।”
গতকাল মঙ্গলবার, অস্ট্রেলিয়ার ইসলামোফোবিক বিরোধী সংগঠনের মুখপাত্র আফতাব মালিক দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন এবিসি নিউজকে বলেছেন, “সকল ধরনের ঘৃণা বন্ধ করা উচিত এবং দেশটির নেতাদের মেলবোর্নে এই ঘটনার নিন্দা জানানো উচিত।”
চলতি সপ্তাহের শুরুতে, অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেশন অব ইসলামিক কাউন্সিলের সভাপতি রাতেব জেনেইড দেশটিতে মুসলমানদের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সরকারের প্রতিক্রিয়াকে ‘খুব অপর্যাপ্ত’ বলে সমালোচনা করেন।
অস্ট্রেলিয়ার সরকার ফেব্রুয়ারির শুরুতে পাস হওয়া নতুন আইনকে ‘ঘৃণামূলক অপরাধের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের সবচেয়ে কঠোর আইন’ হিসাবে বর্ণনা করেছে।
নাৎসি স্যালুটের মতো ঘৃণার প্রতীক ব্যবহারের জন্য এক থেকে ছয় বছর পর্যন্ত বাধ্যতামূলক কারাদণ্ডের বিধান রাখা রয়েছে।
ইহুদির ওপর হামলা দেশটিতে তীব্র বিতর্কের বিষয় হয়ে ওঠার পর আইন সংস্কার করা হয়।
গত সপ্তাহে, ইসরায়েলি রোগীদের চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করা ও হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে অস্ট্রেলিয়ার দুই স্বাস্থ্যকর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
ঢাকা/ফিরোজ