মিটফোর্ডে খুন হওয়া ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু বানিয়ে ছাড়লো ভারতীয় সংবাদমাধ্যম
রাজধানীর মিটফোর্ড (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) হাসপাতালের সামনে খুন হওয়া ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে (৩৯) হিন্দু বানিয়ে ছেড়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম। রবিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে, প্রেস ট্রাস্প অব ইন্ডিয়া এবং এনডিটিভি অনলাইন এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।
মূলধারার ভারতীয় তিনটি সংবাদমাধ্যমই একই ধরনের শিরোনাম করেছে।
ইন্ডিয়া টুডের সংবাদমাধ্যমটির শিরোনাম ছিল, “বাংলাদেশে হিন্দু ব্যবসায়ীকে কংক্রিটের স্ল্যাব দিয়ে পিটিয়ে হত্যা; হামলাকারীরা শরীরের উপর নাচছে।” এই প্রতিবেদনের সঙ্গে গত বছর সংখ্যালঘুদের একটি বিক্ষোভ সমাবেশের ছবি যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
৯ জুলাই স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে লালচাঁদ ওরফে সোহাগকে একদল সন্ত্রাসী পিটিয়ে হত্যা করে। পরে তার মৃতদেহের ওপর পাথর নিক্ষেপ করা হয়। এই নৃশংস ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার গ্রামের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার ৭ নম্বর ঢলুয়া ইউনিয়নের বান্দরগাছিয়ায় জানাজা শেষে সোহাগের লাশ দাফন করা হয়।
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনটির শিরোনামে সোহাগকে হিন্দু দাবি করা হলেও পুরো প্রতিবেদনের ভেতরে কোথাও তার ধর্মপরিচয় কিংবা বিস্তারিত পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি। প্রেস ট্রাস্প অব ইন্ডিয়া এবং এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনও একইরকম, অর্থাৎ একটি প্রতিবেদনই কিছুটা সম্পাদনা করে প্রকাশ করেছে তিনটি সংবাদমাধ্যম।
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ১০ জুলাই দেওয়া একটি মন্তব্য জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদে জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট থেকে ৩৩০ দিনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় দুই হাজার ৪৪২টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে। সহিংসতার ধরণগুলোর মধ্যে রয়েছে হত্যা, গণধর্ষণসহ মহিলাদের উপর নির্যাতন, উপাসনালয়ে আক্রমণ, ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার, সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল, জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর উপর আক্রমণ এবং বিভিন্ন সংগঠন থেকে জোরপূর্বক পদত্যাগ।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অসংখ্য মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে আসছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।
ঢাকা/শাহেদ