ঢাকা     বুধবার   ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১৭ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

হিন্দু দম্পতিদের প্রতি আসামের মুখ্যমন্ত্রী, ‘একটি নয়, দুই-তিনটি সন্তান নিন’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:০১, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫   আপডেট: ২০:০৫, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
হিন্দু দম্পতিদের প্রতি আসামের মুখ্যমন্ত্রী, ‘একটি নয়, দুই-তিনটি সন্তান নিন’

ভারতের আসাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা।

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা হিন্দু দম্পতিদের একাধিক সন্তান নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। 

তিনি বলেছেন, “হিন্দু দম্পতিদের কেবল একটি নয়, অন্তত দুটো বা তিনটি সন্তান জন্ম দেওয়া উচিত। আর মুসলিমদের সন্তান জন্ম দেওয়ার হার কমানো উচিত।” তার দাবি, ধর্মীয় সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে হিন্দুদের মধ্যে জন্মহার ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে।

আরো পড়ুন:

বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে হিমন্ত শর্মা বলেন, “রাজ্যের ধর্মীয় সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় জন্মহার বেশি, কিন্তু হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে জন্মহার ক্রমশ কমছে। এখানে একটি বড় পার্থক্য তৈরি হয়েছে।”

এই কারণেই তিনি হিন্দু পরিবারগুলোকে বেশি সন্তান নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছেন উল্লেখ করে বলেন, “সেজন্যই আমরা হিন্দু জনগণকে অনুরোধ করছি, একটি সন্তানে থেমে না থেকে অন্তত দুটি সন্তান নিতে। যারা পারবেন, তারা তিনটি সন্তানও নিতে পারেন।”

একইসঙ্গে তিনি যোগ করেন, “আমরা মুসলিমদের বলি ৭-৮টি সন্তান না নিতে, আর হিন্দুদের বলি আরো সন্তান নিতে। তা না হলে ভবিষ্যতে হিন্দুদের বাড়িঘর দেখার কেউ থাকবে না।”

তার দাবি, আসামের জনমিতি বা জনসংখ্যার ভারসাম্য দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রী পরিসংখ্যান তুলে ধরে দাবি করেন, ২০২৭ সালের আদমশুমারিতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ‘মিঞা’ মুসলিমদের জনসংখ্যা ৪০ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। তিনি তার ছাত্র রাজনীতির সময়কার কথা উল্লেখ করে বলেন, এক সময় তাদের জনসংখ্যা ছিল মাত্র ২১ শতাংশ, যা ২০১১ সালের আদমশুমারিতে বেড়ে ৩১ শতাংশ হয়েছে।

হিমন্ত শর্মা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “তাদের (বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মুসলমান) জনসংখ্যা ৪০ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে চলেছে। সেই দিন আর বেশি দূরে নেই যখন অসমীয়াদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম দেখবে যে তাদের নিজস্ব জনসংখ্যা ৩৫ শতাংশের নিচে নেমে গেছে।”

জনসংখ্যা বৃদ্ধির এই প্রবণতাকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, “ওরা (বাংলাদেশ) প্রায়ই বলে যে উত্তর-পূর্ব ভারতকে বিচ্ছিন্ন করে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত করা উচিত। উত্তর-পূর্ব ভারত দখল করতে তাদের কোনো যুদ্ধ করার প্রয়োজন নেই। তাদের জনসংখ্যা ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেলেই এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদের কাছে চলে যাবে।”

হিমন্ত শর্মা তার বক্তব্যে বিরোধী দল কংগ্রেসকেও একহাত নেন। তিনি জানান, কংগ্রেসের একজন মুখপাত্র মুসলমানদের জন্য ৪৮টি আসন সংরক্ষণের দাবি করেছিলেন।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বিজেপি হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে খিলঞ্জিয়া অসমীয়াদের জন্য আসন সংরক্ষণের দাবি জানায়, কিন্তু কংগ্রেস কেবল মুসলমানদের জন্য সংরক্ষণ চায়।” তিনি অভিযোগ করেন, “কংগ্রেস ওই মুখপাত্রকে বহিষ্কার করেনি কারণ কংগ্রেসের পুরো ‘ইকোসিস্টেম’ সংখ্যালঘু ভোটের ওপর নির্ভরশীল।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়