মুক্তিযোদ্ধা হত্যা মামলায় দুই আসামির যাবজ্জীবন
নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা || রাইজিংবিডি.কম

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আমিন উদ্দিনকে হত্যার ঘটনায় দায়ের মামলায় দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মীর শফিকুল আলম এ রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. এনামুল হক।
রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- রূপসা উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের বাসিন্দা আমজাদ মিনা ও সাবাজ হালদার।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ১৯ অক্টোবর রাতে শাবাজ হালদার, আমজাদ মিনা ও জলিল হাওলাদারসহ নাম না জানা আরও ৫/৬ জন হাতে রাইফেল ও রামদাসহ ধারালো অস্ত্রের মুখে আমিন উদ্দিন শেখকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। পরে বাড়ির অদূরে একটি পুকুর পাড়ে আমিন উদ্দিনের বুকে গুলি এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা কেটে হত্যা করে আসামিরা। হত্যার পর মাথা পুকুরে ফেলে দেয়। নিহত আমিন উদ্দিনের লাশ ১৯৭১ সালের ২০ অক্টোবর বিকেল ৩ টার দিকে তাদের চাঁদপুর গ্রামের পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হয়। পরে তারা বাড়ি ছেড়ে চলে যান। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশ শত্রুমুক্ত হওয়ার পরদিন নিহতের স্বজনরা চাঁদপুর গ্রামের বসত বাড়িতে ফিরে আসেন। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা ভয়ে মামলা করতে পারেননি।
পরবর্তীতে সরকার নতুন করে আইনানুগভাবে সুযোগ প্রদান করায় নিহত আমিন উদ্দিনের ছেলে অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে তার পিতা হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি জানিয়ে আদালতে নালিশী দরখাস্ত করেন। এ ঘটনায় রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদালতের নির্দেশে এফ.আই.আর ফরম পূরণ করে মামলা নথিভূক্ত করেন।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি শেখ এনামুল হক বলেন, ১৯৭১ সালের ১৯ অক্টোবর আমিন উদ্দিন হত্যাকাণ্ডের পর তার পরিবারের সদস্যদের জীবনের হুমকির মধ্যে ছিলো। তাই তারা তখন মামলা করতে পারেনি। ২০১০ সালে নিহতের ছেলে অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে মামলা করেন। এ মামলার তিন আসামীর মধ্যে জলিল হাওলাদার আগেই মারা গেছেন। সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আসামি শাবাজ হালদার ও আমজাদ মিনাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
নূরুজ্জামান/ মাসুদ
আরো পড়ুন