বর্ষবরণে যৌন হয়রানির মামলায় সাক্ষ্য পেছালো
নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
পয়লা বৈশাখে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে যৌন হয়রানির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। আগামী ২০ মে সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক শওকত আলীর আদালতে মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ছিলো। কিন্তু, এদিন বিচারক ছুটিতে থাকায় এবং কোনো সাক্ষী আদালতে হাজির না হওয়ায় ভারপ্রাপ্ত বিচারক শাহাদাত হোসেন আগামী ২০ মে সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।
২০১৫ সালের পয়লা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসটি এলাকায় কয়েকজন নারীকে যৌন হয়রানি করা হয়। ওই ঘটনায় ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে কেউ মামলা না করায় শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে যৌন হয়রানির অভিযোগে নাম না জানা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। শাহবাগ থানার পুলিশ মামলাটি কয়েকদিন তদন্তের পরই তদন্তভার ডিবি পুলিশকে দেওয়া হয়।
মামলার একমাস পর ১৭ মে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ভিডিও থেকে ৮ জন যৌন হয়রানিকারীকে শনাক্ত ও তাদের ছবি পাওয়ার কথা জানান তৎকালীন পুলিশ প্রধান একেএম শহীদুল হক। শনাক্তকৃতদের ধরিয়ে দিতে ১ লাখ টাকা করে পুরস্কার ঘোষণা করে পুলিশ। কিন্তু, তাদের নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় ২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই দীপক কুমার দাস আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদন গ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল। পরে শনাক্তকৃত আসামিদের মধ্যে মো. কামাল (৩৫) গ্রেপ্তার হলে তাকে প্রথমে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মামলাটি পুনঃতদন্তের আবেদন করা হয়।
২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার তিন নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল মামলাটি পুনঃতদন্তের আদেশ দেন। পুনঃতদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর পিবিআইয়ের পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক একমাত্র আসামি কামালকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৭ সালের ১৯ জুন ঢাকার তিন নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের তৎকালীন বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার ওই আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন। মামলাটিতে ৩৪ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ৯ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
গত ২৩ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ধার্য করেন। পরে রায় পিছিয়ে ১৩ ফেব্রুয়ারি ধার্য করা হয়। ১৩ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করার আবেদন করে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি রায় থেকে উত্তোলন করে সাক্ষীর জন্য রাখা হয়। মামলার একমাত্র আসামি কামাল জামিনে আছেন। হাইকোর্ট থেকে তিনি জামিন পান।
ঢাকা/মামুন/মাসুদ