ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

প্রবণতা বেড়েছে ‘প্রাকৃতিক’ জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির, কতটা কার্যকর?

লাইফস্টাইল ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৩৯, ১ নভেম্বর ২০২২   আপডেট: ২৩:০৩, ১ নভেম্বর ২০২২
প্রবণতা বেড়েছে ‘প্রাকৃতিক’ জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির, কতটা কার্যকর?

জন্মনিয়ন্ত্রণে নানা ধরনের কার্যকর হরমোনাল পদ্ধতি রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী বিবাহিত অনেক নারীদের মধ্যে ‘প্রাকৃতিক পরিবার পরিকল্পনা’র প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। বলা যায়, জন্মনিয়ন্ত্রণে ‘প্রাকৃতিক’ পদ্ধতির একটা ট্রেন্ড শুরু হয়েছে। কিন্তু এই পদ্ধতি আসলে কতটা কার্যকর?

‘প্রাকৃতিক পরিবার পরিকল্পনা’ পদ্ধতি ‘উর্বরতা সচেতনা’ পদ্ধতি নামেও পরিচিত। এটি জন্মনিয়ন্ত্রণের এমন একটি রূপ, যা আপনি কখন ডিম্বস্ফোটন করছেন তা জানার উপর নির্ভর করে এবং সেই সময়ে অরক্ষিত সহবাস এড়িয়ে চলা লাগে।

টিকটকে এই পদ্ধতি নিয়ে নতুন ট্রেন্ড শুরু হয়েছে। বেস্ট হেলথ ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শর্ট ভিডিও তৈরির জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম টিকটকে #naturalbirthcontrol হ্যাশট্যাগটিতে ভিউ হয়েছে ৩৪.৬ মিলিয়ন। যেখানে নারীরা বলছেন, জন্মনিয়ন্ত্রণে তারা হরমোনজনিত কোনো পদ্ধতি ব্যবহার না করে বরং ‘প্রাকৃতিক পদ্ধতি’র উপর নির্ভর করছেন।

এ প্রসঙ্গে কুইন্স ইউনিভার্সিটির প্রসূতি ও স্ত্রীরোগবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক অ্যাশলে ওয়াডিংটন বলেন, প্রাকৃতিক পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতিতে মূলত নিজের মাসিক চক্র, সেই চক্রের দৈর্ঘ্য ও ডিম্বস্ফোটনের সময়কাল সম্পর্কে জ্ঞান প্রয়োজন।

খাতায় তারিখ লিখে রেখে বা মোবাইলে অ্যাপের সাহায্যে মাসিক চক্র ট্র্যাক করা যায়। গর্ভধারণ এড়ানোর জন্য প্রাকৃতিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির ক্ষেত্রে ডিম্বস্ফোটনের সময়কাল সম্পর্কে সচেতন থাকতে হয়। কিছু শারীরিক লক্ষণের মাধ্যমেও মাসিক চক্রে ডিম্বস্ফোটনের সময়কাল সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

ডা. ওয়াডিংটন বলেন, ডিম্বস্ফোটনের সময়কালে নিরাপদ সহবাসের মাধ্যমে গর্ভধারণ এড়ানো যায়। প্রাকৃতিক এই জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি প্রায় ৭৬ থেকে ৮৮ শতাংশ কার্যকর। কিন্তু সমস্যা হলো, এই পদ্ধতি নির্ভুল হওয়া বেশ কঠিন। কেননা, বেশিরভাগ নারীরই নিখুঁত ২৮ দিনের মাসিক চক্র থাকে না এবং মাসিক চক্র পরিবর্তিত হতেও থাকে। ফলে ডিম্বস্ফোটনের দিন এক চক্র থেকে আরেক চক্রে ভিন্ন হতে পারে।

ডা. ওয়াডিংটনের মতে, প্রাকৃতিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিখুঁত নয়। ডিম্বস্ফোটনের সময়কাল নিয়ে গরমিল করে অনিরাপদ সহবাসের করলে গর্ভধারণের ব্যাপক সম্ভাবনা থাকে। এটা আর্কষণীয় ব্যাপার যে, অনেক নারী এই পদ্ধতির দিকে ঝুঁকছেন। হতে পারে তারা হরমোনজনিত জন্মনিয়ন্ত্রণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগেছে অথবা আইইউডি পদ্ধতিতে বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা রয়েছে। কিংবা এটি সম্পূর্ণ তাদের নিজস্ব পছন্দ এবং তারা গর্ভাবস্থার ঝুঁকি নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।

‘কিন্তু এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, এই পদ্ধতি আইইউডি, পিল বা প্যাচের মতো কার্যকর নয়। অনলাইনে যেসব তথ্য ছড়াচ্ছে তা ভালোভাবে যাচাই করা উচিত। আপনাকে মেনে নিতে হবে যে, প্রাকৃতিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যর্থতার উচ্চ ঝুঁকি হতে চলেছে, কারণ এটি নির্ভুল করা বেশ কঠিন।’- বলেন ডা. ওয়াডিংটন।

তথ্যসূত্র: বেস্ট হেলথ ম্যাগাজিন

/ফিরোজ/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়