বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদার
মাকসুদ || রাইজিংবিডি.কম
নিজস্ব প্রতিবেদক : হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দ্বিতীয় দিনের মতো পরিদর্শন করেছে যুক্তরাজ্যের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল।
রোববার তারা বিমানবন্দর সরেজমিন পরিদর্শন করেন এবং নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন।
রোববার সন্ধ্যায় আর্মড পুলিশের (এপিবিএন) জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আলমগীর হোসেন শিমুল রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘সকালে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বিমানবন্দর পরিদর্শনে আসেন। তারা বিমানবন্দরের প্রবেশ পথ, বাহির হওয়ার পথ, রানওয়েসহ বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন। তারা নিরাপত্তা সরঞ্জাম দেখেন এবং এগুলো কীভাবে পরিচালিত হচ্ছে, কারা পরিচালনা করছেন, সে সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেন। বিমানবন্দরের আশপাশের নিরাপত্তাসহ আরো কিছু বিষয় তারা খতিয়ে দেখেন। এসব স্থানে নিয়োজিত পুলিশের বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গেও কথা বলেন। তবে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানাননি।
বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা আগের চেয়ে আরো অনেক উন্নত হয়েছে বলে জানিয়েছেন আলমগীর হোসেন শিমুল।
এর আগে গত ৫ মার্চ যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধিদল হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন করে। সে সময়ও তারা কোনো মন্তব্য করেননি। তারা দেশে ফিরে কিংবা এ দেশে ব্রিটিশ হাইকমিশনের মাধ্যমে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা সম্পর্কে জানাতে পারে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে দেন দিল্লিতে কর্মরত যুক্তরাজ্যের বিমান নিরাপত্তাবিষয়ক দফতরের আঞ্চলিক কর্মকর্তা জন লভসি।
বেসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাজ্য উদ্বেগ জানানোর পর বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ইতিমধ্যে শক্তিশালী স্ক্যানিং মেশিন ও বিস্ফোরক চিহ্নিত করার মেশিন বসানো হয়েছে। যাত্রীদের বহির্গমনের সময় নিরাপত্তা তল্লাশির ক্ষেত্রে আরো কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘সরকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিñিদ্র করতে বদ্ধপরিকর। এজন্য প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ, যন্ত্রপাতি সংগ্রহ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার যথাযথ তদারকি নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এটা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।’
জন লভসি এর আগেও দুই দফা ঢাকা সফর করেন। এ সময় তিনি বিমানবন্দর ঘুরে টার্মিনালে যাত্রীদের আসা-যাওয়া, মালামাল পরীক্ষা (স্ক্যানার যন্ত্রের মাধ্যমে), বহির্গমন কাউন্টার ছাড়ার আগে যাত্রীদের মালামালে ট্যাগ লাগানোর প্রক্রিয়া, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং কর্মীরা কীভাবে মালামাল বিমানে নিয়ে যান, এসব খতিয়ে দেখেন। এরপর যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধিদল সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। ওই সফরের পর যুক্তরাজ্যের দেওয়া প্রতিবেদনে শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে খুবই দুর্বল হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, এখানে স্ক্যানিং মেশিন চালানোর মতো দক্ষ জনবল নেই। স্ক্যানিং মেশিনগুলোও ত্রুটিপূর্ণ। এসব যন্ত্রপাতি এবং যন্ত্রপাতি পরিচালনায় যুক্ত লোকজনকে ফাঁকি দিয়ে যেকোনো সময় যেকোনো কিছু অন্য দেশে নিয়ে যেতে পারে। ওই প্রতিবেদনে বিমানবন্দরে লোকজনের যাওয়া-আসা, মালামাল (ব্যাগেজ) ব্যবস্থাপনা, বিস্ফোরক চিহ্নিত করার ব্যবস্থা এবং উড়োজাহাজে খাদ্য সরবরাহব্যবস্থায় নিরাপত্তার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ মার্চ ২০১৬/মাকসুদ/রফিক
রাইজিংবিডি.কম