ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০৯ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

১০৭৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩৯, ১২ জানুয়ারি ২০২২   আপডেট: ১৩:৪৪, ১২ জানুয়ারি ২০২২
১০৭৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন

দেশের চাহিদা মেটাতে আলাদা দুটি প্রস্তাবের মাধ্যমে ১৫ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আমদানিসহ ১৩ ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ১০৭৯৪ কোটি ৮৪ লাখ ৮৩ হাজার ২৯৮ টাকা।

বুধবার (১২ জানুয়ারি) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চুয়াল সভায় প্রস্তাবগুলোতে অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষ অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সামসুল আরেফিন।

অর্থমন্ত্রী বলেন,আজ অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১ম এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ২য় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  অর্থনৈতিক বিষয়ক কমিটির অনুমোদনের জন্য ১টি এবং ক্রয় কমিটির অনুমোদনের জন্য ১৩টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়।  ক্রয় কমিটির প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ৭টি, বিদ্যুৎ বিভাগের ৩টি, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ২টি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ১টি প্রস্তাব ছিল।  ক্রয় কমিটির অনুমোদিত ১৩টি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ১০৭৯৪ কোটি ৮৪ লাখ ৮৩ হাজার ২৯৮ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে জিওবি থেকে ব্যয় হবে ৯,৫৮৯ কোটি ৬৬ লাখ ২৬ হাজার ৭৭ টাকা এবং ভারত থেকে ঋণ ১২০৫ কোটি ১৮ লাখ ৫৭ হাজার ২২১ টাকা। 

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সামসুল আরেফিন বলেন, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে জি-টু-জি ভিত্তিতে ২০২২ সালের (জানুয়ারি-জুন) সময়ের জন্য পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে মেয়াদী চুক্তির আওতায় জি-টু-জি ভিত্তিতে নেগোসিয়েশনকৃত বিভিন্ন দেশের ৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠান (পিটিটিটি থাইল্যান্ড, ইএনওসি আরব আমিরাত, পেট্রোচায়না বিএসপি ইন্দোনেশিয়া, পিটিএলসিএল মালয়েশিয়া ও ইউনিপেক চীন) থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে জুন সময়ের জন্য ১৪ লক্ষ ৯০ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল প্রিমিয়াম ও রেফারেন্স প্রাইসসহ ৯৮ কোটি ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৯২৮ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮ হাজার ৪১৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যয় হবে।

ভারতের নুমালীগড় রিফাইনারী লিমিটেড থেকে জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর ২০২২ সময়ে ৯০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। পার্বতীপুর ডিপোতে রেল ওয়াগনের মাধ্যমে এই ডিজেল সরবরাহ করা হবে। এজন্য ব্যয় হবে ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৯৪ হাজার মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫১২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

অতিরিক্ত সচিব সামসুল আরেফিন বলেন, ‘জেলা পর্যায়ে আইটি/হাই-টেক পার্ক স্থাপন (১২টি জেলায়)’ প্রকল্পের আওতায় দুটি প্যাকেজে ৮টি জেলায় আইটি/হাই-টেক পার্ক নির্মাণের একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। জেলাগুলো হচ্ছে রংপুর, নাটোর, জামালপুর, ময়মনসিংহ এবং ঢাকা, খুলনা, গোপালগঞ্জ, বরিশাল। এতে মোট ব্যয় হবে ১২০৫ কোটি ১৮ লাখ ৫৭ হাজার ২২১ টাকা।

তিনি বলেন, ‘বাপবিবোর বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন (খুলনা বিভাগ)’ প্রকল্পের আওতায় ৩২ হাজার ৪০০টি এসপিসি পোল কেনার একটি ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।  এতে মোট ব্যয় হবে ৩১ কোটি ৩৬ লাখ ৩৪ হাজার ৩৪৮ টাকা।

সভায় ‘বাপবিবো’র বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন (খুলনা বিভাগ)’ প্রকল্পের আওতায় ৩২ হাজার ৩৯৬টি এসপিসি পোল কেনার আরও একটি ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হবে ৩১ কোটি ৩৫ লাখ ১৩ হাজার ৬৮৯ টাকা।

তিনি বলেন, সভায় ‘শতভাগ পল্লী বিদ্যুতায়নের জন্য বিতরণ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ (ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট)’ প্রকল্পের আওতায় ১৩ হাজার ৪০টি ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমার কেনার একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।  এতে ব্যয় হবে ৭১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।

সভায় ‘পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তুলাই এবং পুনর্ভবা নদীর নাব্যতা উন্নয়ন ও পুনরুদ্ধার’ প্রকল্পের ৫টি পৃথক প্রস্তাবে নদী খনন কাজের অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। ৫টি প্রস্তাবের আওতায় প্রায় ৩৩ কিলোমিটার নদী খনন করা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ১১৩ কোটি ৯৫ লাখ ৬৯ হাজার ৫৬০ টাকা।

অতিরিক্ত সচিব বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য দুইটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন (প্রতিটি ৫০০০ বিএইচপি/৭০টন বোলার্ড পুল) টাগবোট ক্রয়ের জন্য এক ধাপ দুই খাম পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ২টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে যা টেকনিক্যালি রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান হংকং ভিত্তিক চিওয় লী শিপইয়ার্ড লিমিটেড টাগবোট দুটি সরবরাহ করবে।  এতে ব্যয় হবে ১৮৮ কোটি ৩৯ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।

তিনি বলেন, ‘মোংলা বন্দরের জন্য সহায়ক জলযান সংগ্রহ’ প্রকল্পের আওতায় ২টি টাগবোট ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও সেবা ক্রয়ের অপর একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। হংকং ভিত্তিক চিওয় লী শিপইয়ার্ড লিমিটেড টাগ বোট দুটি সরবরাহ করবে।  এতে ব্যয় হবে ২২২ কোটি ৮৯ লাখ ৫২ হাজার ৪৮০ টাকা।

/হাসনাত/এসবি/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়