ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

‘বন্ধকি জমি একাধিকবার বন্ধক কিংবা বিক্রির সুযোগ থাকবে না’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৩৭, ১৩ নভেম্বর ২০২২  
‘বন্ধকি জমি একাধিকবার বন্ধক কিংবা বিক্রির সুযোগ থাকবে না’

বন্ধকি জমি একাধিকবার বন্ধক রাখা কিংবা বিক্রি করে জালিয়াতির সুযোগ থাকবে না বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। তিনি জানিয়েছেন, বন্ধকি (মর্টগেজড) জমি একাধিকবার বন্ধক রাখা, বিক্রি বা নামজারি সংশ্লিষ্ট জালিয়াতি রোধে এ মাসেই চালু করা হচ্ছে মর্টগেজ ডাটা ব্যাংক।

রোববার (১৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভূমি মন্ত্রণালয় ও ভূমি সম্পর্কিত বিভাগীয় কমিশনার সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান। সভায় সভাপতিত্ব করেন ভূমি সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘মর্টগেজ ডাটা ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যাংক, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, ভূমি অফিস বা নাগরিকদেরকে জমির বন্ধক সংক্রান্ত তথ্য অনলাইনে যাচাই করার সুযোগ দেওয়া হবে, যাতে বন্ধককৃত জমি নতুন করে বন্ধক, ক্রয়-বিক্রয় বা নামজারি করার সুযোগ না থাকে। পাশাপাশি, অর্থ ঋণ আদালতের রায়ের ভিত্তিতে নামজারি সহজিকরণে বন্ধকি ডাটাবেজকে ব্যবহার করা যাবে। এতে ব্যাংকের ঋণ ব্যবস্থাপনার জন্য তথ্য সংগ্রহ সহজতর হবে এবং ঝুঁকি হ্রাস পাবে। ফলে, দেশের অর্থনীতিতে সামগ্রিকভাবে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।’

ভূমি কর্মকর্তাদের নাগরিক সেবার মানসিকতা নিয়ে কাজ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করার ব্যাপারে ভূমিমন্ত্রী বিভাগীয় কমিশনারদের তাগিদ দিয়েছেন। ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পুরস্কার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে, উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেছেন, ‘দুর্নীতিবাজ অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক বিচারের আওতায় আনতে হবে।’

এ সময় ভূমি সচিব জানান, চলতি অর্থবছরে প্রথম কোয়ার্টারে অনলাইনে প্রায় ১৬৮ কোটি টাকা ভূমি উন্নয়ন কর আদায় হয়েছে। বর্তমানে প্রায় প্রতি মাসে ২ লক্ষাধিক নামজারি আবেদন অনলাইনে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। আবেদনের ভিত্তিতে, এ পর্যন্ত প্রায় ৬৮ হাজার খতিয়ান এবং ৬০ হাজার জমির ম্যাপ ডাক বিভাগের মাধ্যমে সারা দেশে নাগরিকের ঘরে পাঠানো হয়েছে।

ভূমিসেবা ডিজিটালাইজেশন, আন্তঃজেলা/উপজেলা সীমানা বিরোধ, ভূমি অফিস সংস্কার, অবৈধ দখল উচ্ছেদ, জলমহাল ও বালুমহালের ইজারা কার্যক্রমসহ বিভিন্ন বিষয়ে মতামত দেন সভায় উপস্থিত বিভাগীয় কমিশনাররা।

সভায় উপস্থিত থাকা বিভাগীয় কমিশনাররা হলেন—মো. খলিলুর রহমান (ঢাকা), মো. আশরাফ উদ্দিন (চট্টগ্রাম), জি এস এম জাফরউল্লাহ্ (রাজশাহী), মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী (খুলনা), মো. আমিন উল আহসান (বরিশাল), ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন (সিলেট), মো. সাবিরুল ইসলাম (রংপুর) এবং মো. শফিকুর রেজা বিশ্বাস (ময়মনসিংহ)। এছাড়া, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

পরে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় চিংড়িমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন ভূমি মন্ত্রী। এক পরিবারের একাধিক সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের স্বামী/স্ত্রী এবং চিংড়িমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা চিংড়িমহাল যেন ইজারা নিতে না পারেন, সে ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন ভূমিমন্ত্রী। কমিটির সদস্যদের সম্মতিক্রমে এ নির্দেশ দেন ভূমিমন্ত্রী।

সভায় এই সময় উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য জাফর আলম। আরও উপস্থিত ছিলেন ভূমি সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান; ভূমি মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, কক্সবাজার ও সাতক্ষীরা জেলার মাঠ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং চিংড়ি চাষ ও ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তিসহ বিভিন্ন অংশীজন।

আজকের সভায় বিভিন্ন জেলার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে চিংড়িমহালের নতুন ইজারার প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় এবং অনুমোদনের জন্য অপেক্ষারত চিংড়িমহাল ইজারা নিয়ে আলোচনা করা হয়। উল্লেখ্য, সারা দেশে প্রায় ১৫৯৬টি চিংড়ি মহাল আছে, যা কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আয়ের উৎস।

নঈমুদ্দীন/রফিক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়