রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের
সোমবার ডিসি সম্মেলনের অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম
রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতরা ‘জুলাই শহীদ’ এবং আহতরা অভিহিত হবেন ‘জুলাই যোদ্ধা’ নামে। এছাড়া, গঠন করা হচ্ছে জুলাই অধিদপ্তর।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম এসব তথ্য জানিয়ে বলেছেন, “এ সপ্তাহে বা শিগগিরই জুলাই অধিদপ্তর আত্মপ্রকাশ করবে। জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের ‘জুলাই শহীদ’ এবং আহতদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে নাম ঘোষণা করা হবে। সে অনুযায়ী সনদ, পরিচয়পত্র দেওয়া হবে।”
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের তৃতীয় অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ অধিবেশন হয়।
উপদেষ্টা বলেন, “যারা শহীদ হয়েছেন তারা সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে ৩০ লাখ টাকা পাবেন। চলতি অর্থবছরে তাদেরকে ১০ লাখ টাকা দেওয়া হচ্ছে, আগামী অর্থবছরে তারা ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র পাবেন।”
আহতরা তিনটি ক্যাটাগরিতে সহায়তা পাবেন জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “আহতরা আজীবন চিকিৎসা সুবিধা পাবেন এবং ভাতাও পাবেন। যারা গুরুতর আহত তারা এককালীন পাঁচ লাখ টাকা পাবেন এবং প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। একটি অঙ্গহানি হয়েছে এমন আহত যারা আছেন তারা প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা ভাতা পাবেন এবং তারা এককালীন ৩ লাখ টাকা পাবেন। সামান্য আহত ছিলেন চিকিৎসা নিয়েছেন ভালো হয়ে গেছেন, তারা চাকরিসহ পুনর্বাসন কর্মসূচিতে অগ্রাধিকার পাবেন। তারা কোনো ভাতা পাবেন না।”
আহতদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তোলা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “আহতরা বিভিন্ন মাত্রায় প্রশিক্ষণ পাবেন। সরকারি, আধা-সরকারি ও অন্যান্য চাকরিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের কর্মসংস্থান করা হবে। তারা মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ পাবেন।”
নতুন সরকার আসলে জুলাই অধিদপ্তরের অস্তিত্ব নাও থাকতে পারে, সেই আশঙ্কা করছেন কি না- এ বিষয়ে তিনি বলেন, “সরকারিভাবেই অধিদপ্তর করা হয়েছে। পরবর্তীতে যারা নির্বাচিত হয়ে আসবেন তারাও তো জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা নিয়েই আসবেন। আমরা আশা করছি, এটা তারাও লক্ষ্য করবেন। এরা তো দেশ ও জাতিকে বৈষম্য থেকে মুক্তির জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন, ত্যাগ স্বীকার করেছেন।”
আহত-নিহতের তালিকা নিয়ে মাঠ পর্যায়ে বিশৃঙ্খলা রয়েছে। এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে ফারুক-ই আজম বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানে যারা শহীদ তাদের তালিকা আমরা পেয়েছি ১৬ জানুয়ারি রাত ৭টায়। আমরা রাত ৩টায় গেজেট প্রকাশ করে দিয়েছি। তালিকাটাও তৈরি হচ্ছে। মেডিকেল সেল থেকেই এটা করা হচ্ছে। সেটা যখন মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় আসবে, আমরা তাৎক্ষণিক তা গেজেট আকারে প্রকাশ করে দেব। সুতরাং এখানে কারো ঢোকা কিংবা এটা থেকে কারো বের হওয়ার কোনো উপায় থাকবে না।”
ঢাকা/এএএম/ইভা