ভারত কখনোই বাংলাদেশের বন্ধু ছিল না: অধ্যাপক দিলারা
বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী বলেছেন, “একটি রাষ্ট্র কখনোই আরেকটি রাষ্ট্রের বন্ধু হতে পারে না। ভারত কখনোই বাংলাদেশের বন্ধু ছিল না।”
““ক্যান্টনমেন্টে র’য়ের অফিস ছিল। বাংলাদেশ সবসময় ‘র’ এর থাবা ছিল। কালচারাল ফ্যাসিস্ট, সাংস্কৃতিক ফ্যাসিস্ট বিভিন্ন উইংসের মাধ্যমে বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে ‘র’।”
‘র’ অর্থাৎ ভারতের রাষ্ট্রপতির অধীন্থ রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানাইলাইসি উইংকে (আরএডব্লিউ) বোঝানো হয়।
বুধবার (২৪ নভেম্বর) বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ আজাদী মুভমেন্টের আয়োজনে ‘গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি ও নয়া বন্দোবস্ত’ শিরোনামে আলোচনা ও প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভারত ও ‘র’ নিয়ে কঠোর মন্তব্য করেন দিলারা চৌধুরী।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ কখনো সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ছিল না, আমরা অসাম্প্রদায়িক। অনেকেই সাতচল্লিশকে বাদ দিতে চায়, কিন্তু এটাকে বাদ দিলে হবে না। এমনকি একাত্তর সালে আমরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি কিন্তু সেটার ফসল উঠাতে পারিনি ভারতীয় আগ্রাসনের কারণে। আমাদেরকে আমাদের আত্মমর্যাদার ইতিহাস জানতে হবে।”
জামায়াতের ব্যারিস্টার শাহরিয়ার কবির বলেন, “হাদির রক্তের ওপর বেইমানি করে দাড়ি-টুপিওয়ালা গ্রেপ্তার করছে। বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সময় দুটি ডেড বডিকে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। (জুলাই গণঅভ্যুত্থানে) আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানা হয়েছিল। জুলাই যোদ্ধাদের বডিকে পুড়িয়ে ফেলার পরামর্শ পুলিশকে কে দিল? আমরা পুড়িয়ে ফেলার রাজনীতি করি না। আমরা হাদির মতো বলি, মৃত্যুর ফয়সালা জমিনে না আসমানে হয়, সেজন্য আমরা বুক ফুলিয়ে ঘুরি।”
জুলাই রেভলুশনারি জার্নালিস্টস অ্যালায়েন্সের সাধারণ সম্পাদক ইসরাফিল ফরাজী বলেন, “দুটি মিডিয়ায় আগুন নিয়ে অনেকের মায়াকান্না, সুশীলতা দেখা যাচ্ছে। যখন নয়া দিগন্তে আগুন দেওয়া হলো তখন এই চেতনা কোথায় ছিল? সংগ্রামের সম্পাদককে যখন দাড়ি ধরে টান দিয়ে অফিস ভাঙচুর করে, চ্যাংদোলা করে নামানো হলো তখন কোথায় ছিল?”
“আমার দেশ পত্রিকা যখন বন্ধ করে দেওয়া হয়, মাহমুদুর রহমানের ওপর আদালতে হামলা চালানো হয়, তখন এই প্রতিবাদ দেখা যায়নি কেন? শাপলায় গণহত্যা প্রচার করায় দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি যখন বন্ধ করে দেওয়া হয়, তখন কোথায় ছিল এমন সুশীলতা? এগুলো বন্ধ হওয়া দরকার। যারা বাংলাদেশে নতুন করে ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চায়, তারা আবারও জুলাইয়ের মুখোমুখি হবে,” বলেন ইসরাফিল ফরাজী।
জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান বলেন, “অতীতের ফ্যসিবাদকে মানি নাই, নতুন ফ্যাসিবাদকেও মানব না। হিন্দুস্তানের নীলনকশার সামনে মাথা নত করা যাবে না। আগামীতে হিন্দুস্তানকে খুশি করে কেউ বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে না৷”
অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিনুর রহমান বলেন, “আপনি দাড়ি-টুপিওয়ালাকে জঙ্গিবাদী বলছেন অথচ আমাদের হাদি, সাদিক কায়েম, মওলানা ভাসানী সবাই মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ডের এবং তারাই প্রকৃত ভালো মানুষ এবং সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য তারাই।”
অবসরপ্রাপ্ত মেজর শাহিন বলেন, “এক-এগারোর অবৈধ সরকারের কুশীলব হলো প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার। বিগত স্বৈরাচারী আমলে জঙ্গি নাটকের ন্যারেটিভ তৈরি করেছিল এই ভারতপন্থি মিডিয়া। এমনকি বিগত ২০ বছরে বিএনপির সবচেয়ে বেশি চরিত্র হনন ও ক্ষতি করেছে এই দুই পত্রিকা।”
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মঞ্চ ২৪-এর আহ্বায়ক ফাহিম ফারুকী, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মাহবুব, সংগঠক ডিউক হুদা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/রায়হান/রাসেল