ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

দুর্দান্ত বোলিংয়ে খুলনাকে ফাইনালে নিলেন মাশরাফি

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৩৫, ১৪ ডিসেম্বর ২০২০   আপডেট: ২২:০৬, ১৪ ডিসেম্বর ২০২০
দুর্দান্ত বোলিংয়ে খুলনাকে ফাইনালে নিলেন মাশরাফি

প্রথম কোয়ালিফায়ারে নামার আগে সতীর্থ সাকিব আল হাসানকে নিয়ে ইমরুল কায়েস বলেছিলেন, ‘বড় খেলোয়াড়েরা বড়-বড় ম্যাচে ভালো খেলে।’ নিশ্চিতভাবেই সেই তালিকার বাইরে নন মাশরাফি মুর্তজা। ইমরুলের কথাই যেন ঠিক হলো। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে জ্বলে উঠলেন জেমকন খুলনার পেসার। বল হাতে ক্যারিয়ার সেরা ৫ উইকেট নিলেন, তাতে উড়তে থাকা গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের কাছে দুই হারের প্রতিশোধ নিয়ে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের ফাইনালে খুলনা।

নড়াইল এক্সপ্রেসের ধাক্কা সামলে ২১১ রানের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি চট্টগ্রাম। ৪৭ রানের পরাজয়ে ফাইনালের লড়াই থেকে একটু পিছিয়ে গেল মোহাম্মদ মিথুনের দল। সবকটি উইকেট হারিয়ে চট্টগ্রাম ১৯.৪ ওভারে ১৬৩ রানে অলআউট হয়ে যায়। এখনও ফাইনালের আশা শেষ হয়ে যায়নি তাদের। মঙ্গলবার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে বেক্সিমকো ঢাকার বিপক্ষে জিততে হবে চট্টগ্রামকে। আর ১৮ ডিসেম্বরের ফাইনালের মঞ্চে এই ম্যাচ বিজয়ীর জন্য অপেক্ষা করবে খুলনা। 

২১০ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতে সৌম্য সরকার ও লিটন দাশের ব্যাটের দিকে চেয়ে ছিল চট্টগ্রাম। কিন্তু দুই ব্যাটসম্যানকে ফেরানোর কৌশল জানা ছিল মাশরাফির। প্রথম ওভারে শর্ট বলে সৌম্যকে ডিপ মিড উইকেটে শামীম হোসেনের তালুবন্দি করানোর পর পরের ওভারে লিটনকে দারুণ কাটারে বোল্ড করেন। ২৭ রানে ২ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে হারানোর পর ঘুরে দাঁড়ায় চট্টগ্রাম। 

অধিনায়ক মিথুন ও মাহমুদুল হাসান জয় ৭৩ রানের জুটি গড়েন। প্রতি আক্রমণে তারা রানের চাকা ঘোরাতে থাকেন। কিন্তু দ্বিতীয় স্পেল করতে এসে এ জুটি টিকতে দেননি মাশরাফি। মাশরাফির শর্ট বল ডিপ কভার দিয়ে উড়াতে গিয়ে ইমরুলের হাতে ধরা পড়েন মাহমুদুল। ২৭ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৩১ রান করেন তিনি। 

মিথুন একপ্রান্ত আগলে খেলে যান আপন ছন্দে। সাকিব আল হাসানকে পরপর দুই ছক্কা উড়ান চোখের পলকে। হাসান মাহমুদকে ডিপ পয়েন্ট দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকান দারুণ শটে। টুর্নামেন্টের প্রথম হাফ সেঞ্চুরিও তুলে নেন দারুণ দৃঢ়তায়। কিন্তু তার ৫৩ রানের ইনিংসটি কাটা পড়ে বাজে শটে। আরিফুল হক ৫৩ রানে মিথুনকে বোল্ড করেন। ৩টি করে চার ও ছক্কা হাঁকান চট্টগ্রাম অধিনায়ক। 

এরপর চট্টগ্রামের রানে গতি আনতে পারেননি কেউ। বাকিরা কেবল পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়েছেন। মাশরাফি শেষ স্পেলে এসে পেয়েছেন শামসুর রহমান শুভর উইকেট। রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে তার লেন্থ বল উড়াতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। উড়ন্ত এনামুল হক বিজয় বল গ্লাভসবন্দি করেন চোখের পলকে। পরবর্তীতে স্পেলের শেষ বলে মোস্তাফিজুর রহমানের উইকেট নিয়ে প্রথম পাঁচের স্বাদ নেন মাশরাফি। ৩৫ রানে ৫ উইকেট পেয়ে ম্যাচসেরা তিনি।

এর আগে টি-টোয়েন্টিতে মাশরাফ ক্যারিয়ার সেরা ১১ রানে পেয়েছেন ৪ উইকেট, ২০১৮ সালের বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের হয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেরা বোলিং ১৯ রানে ৪ উইকেট, ২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্টে স্বাগতিকদের বিপক্ষে। 

বোলিংয়ে অনন্য মাশরাফি, হাসান মাহমুদদের কাজটি সহজ করে দিয়েছিল খুলনার ব্যাটসম্যান জহুরুল ইসলাম অমি, সাকিব আল ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা। জহুরুল মাত্র ৫১ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৮০ রানের নজরকাড়া ইনিংস উপহার দেন। মাহমুদউল্লাহ ক্রিজে ছিলেন অল্প সময়। তাতেই নিজের কাজ পূর্ণ করেন। ৯ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৩০ রান করে দলের রান চূড়ায় নিয়ে যান। সাকিব নিজের কারিশমা দেখিয়েছেন শেষে। দলের রান দুইশ পার করার পর বোল্ড হন মোস্তাফিজের বলে। ১৫ বলে দুটি করে চার ও ছয়ে এই প্রতিযোগিতায় নিজের সর্বোচ্চ ২৮ রান করেন তিনি।

চট্টগ্রামের বিপক্ষে অনবদ্য পারফরম্যান্সই বলা চলে খুলনার। কারণ গ্রুপ পর্বে খুব একটা পরীক্ষায় পড়তে হয়নি এই চট্টগ্রামকে। ৮ ম্যাচের ৭টিই তারা জিতেছিল। কিন্তু ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে হার মানলো খুলনার কাছে। মঙ্গলবার শেষ সুযোগটি কাজে লাগাতে পারবে তো চট্টগ্রাম?

ঢাকা/ইয়াসিন/ফাহিম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়