ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

তরুণরা বিশ্ব বদলাবে, ‘প্রবীণরা’ উপভোগ করবে

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৫৩, ৫ জানুয়ারি ২০২২  
তরুণরা বিশ্ব বদলাবে, ‘প্রবীণরা’ উপভোগ করবে

তরুণদের চিন্তা করতে শেখা উচিত এবং একটি দল হিসেবে কাজ করা উচিত।- বলেছিলেন আর্নেস্তো চে গুয়েভারা। আর জর্জ বার্নার্ড শ বলেছিলেন, 'নতুন কিছু করাই তরুণদের ধর্ম।' বাংলাদেশ ক্রিকেটে বর্তমানে যে স্বস্তির পরশ ও সুবাতাস বইছে, তা তারুণ্যের জয়গানেই সম্ভব হয়েছে। তাদের হাতেই এখন মশাল৷

সেই তারুণ্যের শক্তিতে বাংলাদেশ নিউ জিল্যান্ডে উড়িয়েছে বিজয়ের ঝাণ্ডা৷ প্রথমবার টেস্ট পরাশক্তির শীর্ষ পাঁচ দলের একটিকে তাদের মাটিতে হারিয়ে চমকে দিয়েছে বাংলাদেশ। নিউ জিল্যান্ডের ব্যাটিং অর্ডার স্রেফ এলোমেলো করে দেওয়া ইবাদত হোসেন সেই তারুণ্যের প্রতীক। ম্যাচে ৭ উইকেট নিয়ে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে তিনি বলছিলেন, ’২১ বছরে আমরা কোনো টেস্ট জিতিনি। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য তাদের হারানোর উদাহরণ রেখে যেতে হবে।’ তার কণ্ঠে মিশে থাকা সাফল্যক্ষুধাই বলে দেয়, ড্রেসিংরুমে তরুণরাই ধরেছেন দলের পতাকা।

আরো পড়ুন:

এই সফরে দেশের সেরা ওপেনার তামিম নেই। নেই দলের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। মাহমুদউল্লাহ তো অবসরেই গিয়েছেন। মুশফিকুর রহিম নিজের ছায়া হয়েই ছিলেন। নিশ্চিতভাবেই এটি বাংলাদেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় অর্জন এবং তা এলো দেশের ক্রিকেটে সিনিয়র ক্রিকেটারদের অবদান ছাড়াই। তাদের ছাড়া দল কিভাবে এগোবে সেই প্রশ্ন উঁকি দিয়েছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট আকাশে। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে সেই প্রশ্নের উত্তর মিলেছে ভালোভাবেই।

মাহমুদুল হাসান জয়ের চোয়ালবদ্ধ ৭৮ রানের ইনিংস, শরিফুলের দ্যুতি ছড়ানো বোলিং। তাসকিন ও ইবাদতের মুগ্ধতা ছড়ানো আক্রমণ, লিটনের ধারাবাহিকতা, মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্য বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রতিচ্ছবি। সঙ্গে মুমিনুলের সফল নেতৃত্ব, মুশফিকের পিঠ চাপড়ে দেওয়া সাহস বাংলাদেশকে চোখে চোখ রেখে লড়াইয়ের সাহস জুগিয়েছে।

ম্যাচ শেষে সেই তরুণদের স্তুতিতে ভাসিয়েছেন অধিনায়ক মুমিনুল, ‘যারা জুনিয়র ছিল, তারা সুযোগের জন্য মুখিয়ে ছিল। সুযোগটা পেলে কাজে লাগানোর অপেক্ষায় ছিল। আমার কাছে মনে হয় তারা ওই জিনিসটা প্রকাশ করতে পেরেছে। নতুন এসে জুনিয়ররা যখন পারফর্ম করবে… এটা অবশ্যই ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য ভালো কিছুর দিক নির্দেশনা দেয়। তাদেরকে ভবিষ্যৎ ক্রিকেটে পাবে বাংলাদেশ।’

মুমিনুলের অনভিজ্ঞ দলটি পাঁচ দিনের তীব্র লড়াই শেষে বুঝিয়ে দেয়, ভেতরে জয়ের তাড়না, সেরা হওয়ার প্রচণ্ড জেদ থাকলে বাঁধা হতে পারবে না কেউ। এমন মানসিকতা জয়ের পথ মসৃণ করেছে বলে বিশ্বাস করেন বাংলাদেশের দলপতি, ‘এই সিরিজে মাঠের বাইরের সাহসিকতা, মানসিকভাবে উজ্জীবিত থাকা খুব কাজে দিয়েছে। যখন কোয়ারেন্টাইনে ছিলাম তখন আমরা অনুশীলন করতে পারিনি। ১০ দিন একসঙ্গে ছিলাম, এরপর দল হয়ে অনুশীলন করেছি সেটা খুব কাজে দিয়েছে।’

মুমিনুলরা ২২ গজে হাসল। বাংলাদেশ বিজয় উৎসব করল। গোটা বিশ্ব চেয়ে দেখল। তরুণরা সেই পথ দেখাল। এখন শুধু সামনে এগিয়ে যাওয়ার পালা। তাদের এগিয়ে যাওয়া তাকিয়ে তাকিয়ে দেখুক বাংলাদেশের কিংবদন্তিরা। তাই বুঝি ইন্দোনেশিয়ার ঔপন্যাসিক টোবা বিটা লিখেছিলেন, ‘তরুণরা বিশ্ব বদলাবে। প্রবীণরা তাদের কাজগুলো উপভোগ করবে।’

ঢাকা/ইয়াসিন/ফাহিম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়