বিসিবির জরুরী সভা
‘সিদ্ধান্ত’ নেওয়ার পরও ‘অপেক্ষা’ কেন?
জরুরী সভার আগে বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে ফটোসেশন করেন সভাপতিসহ বিসিবি পরিচালকরা। ছবি: বিসিবি।
বিশেষ কোনো অ্যাজেন্ডা থাকলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) জরুরী সভা ডাক দেয়। জাতীয় দলের অধিনায়ক বাছাই তেমন-ই জরুরী কিছু। নয়তো বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অধিনায়ক বাছাইয়ের জন্য আনুষ্ঠানিক বোর্ড সভা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।
এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের আগে অধিনায়ক নির্বাচন এতোটাই জরুরী যে, বিসিবি মঙ্গলবার জরুরী সভা ডাকতে বাধ্য হয়। কিন্তু সেই সভার আউটকাম কী তা নিয়ে যত ধুম্রজাল!
মধ্যাহ্ন ভোজের পর ঘণ্টা দেড়েকের জরুরী সভা শেষে বেরিয়ে বিসিবি পরিচালক ও ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস গণমাধ্যমে যা বলেছেন তাতে দাঁড়ায়, এই জরুরী সভায় কেবল জাতীয় দলের সম্ভাব্য নতুন ওয়ানডে অধিনায়কের নাম (সাকিব আল হাসান, লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজ) পরিচালকদের জানানো হয়েছে এবং দলের নেতা নির্বাচনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে।
কিন্তু আদতে এর চেয়েও বেশি কিছু হয়েছে বোর্ড সভায়। মঙ্গলবার অনুষ্ঠেয় এই জরুরী বোর্ড সভায় পরিচালকরা অধিনায়ক বাছাইয়ে নিজেদের মত দিয়েছেন। প্রত্যেকেই নিজেদের পছন্দ জানিয়েছেন। পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। সবশেষে বিসিবি সভাপতিসহ বোর্ড পরিচালকরা এক বিন্দুতে মিলিত হয়েছেন ওয়ানডে অধিনায়ক বাছাইয়ে।
সামনে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ থাকায় প্রায় প্রত্যেকে চাচ্ছেন ওয়ানডে সংস্করণেও সাকিব আল হাসান দায়িত্ব নিক। তবে তাদের কিছু প্রশ্নও রয়েছে। সাকিব কি তিন সংস্করণেই নেতৃত্ব দেবেন নাকি কোনো একটা বাদ দেবেন আর বাদ দিলে সেটা কোনটা?
সাকিবের বক্তব্য শুনতে চায় বোর্ড। সাকিব যদি নেন তার কি পরিকল্পনা থাকবে সেটিও জানতে চান নীতি-নির্ধারকরা। সব প্রশ্নের উত্তর ব্যাটে-বলে মিললে-ই অধিনায়ক হিসেবে সাকিবের নাম ঘোষণা করা হবে।
বিসিবির এক পরিচালক রাইজিংবিডিকে বলেছেন, ‘আমরা প্রায় সবাই সাকিবের ব্যাপারে পজিটিভ। কিন্তু তার বিস্তারিত পরিকল্পনা জানতে হবে। মাননীয় সভাপতি সেটি শুনবেন, বোর্ডে জানাবেন তারপর নাম ঘোষণা হবে। সাকিব যদি কোনো কারণে পিছিয়ে যান তাহলে অন্যদের নিয়ে ভাবা হবে।’
অন্যরা বলতে লিটন দাস ও মেহেদি হাসান মিরাজ। সাকিব যদি নেতৃত্বে না আসেন তাহলে লিটনের কাঁধেই উঠবে ভার। মিরাজও আছেন সেই তালিকায়। এ ছাড়া সাকিব যদি শুধু সাদা বলে করে তাহলে লিটনকে দেওয়া হতে পারে লাল বলে, তার ডেপুটি হতে পারেন মিরাজ। কিন্তু এসব হবে সাকিব-নাজমুল কথোপকথনে, যদি দুজন এক বিন্দুতে না আসেন।
‘আমরা চাই সাকিবই দায়িত্ব নিক। এখন দেখি সে কী বলে। সে যদি এক ফরম্যাট বাদ দেয় তাহলে সেক্ষেত্রে লিটন-মিরাজ আসবে। তাদের সঙ্গে কথা বলার পরই সব পরিস্কার হবে। দুয়েক দিনের বেশি লাগার কথা না। আমরা অধিনায়ক পেয়ে যাবো’-বলছিলেন এই পরিচালক।
জালাল ইউনুস জরুরী সভা শেষে অবশ্য নিজের কথায় পরিস্কার করেছেন সাকিবের কাছ থেকে তার পরিকল্পনা শুনেই বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে, ‘আমরা চাচ্ছি যে, তাকে ভালোভাবে বুঝে শুনে…এখানে ফরম্যাটগুলো আছে, কাউকে সব ফরম্যাটে দিবো বা দুই ফরম্যাটের জন্য কি না।’
১২ সেপ্টেম্বরের আগে ঘোষণা করতে হবে এশিয়া কাপের দল। বিসিবির হাতে আছে ৭২ ঘণ্টা। এর মধ্যেই বিসিবিকে নতুন অধিনায়ক বেছে নিতে হবে।
সাকিবের ব্যালটে বেশিরভাগ পরিচালকের ভোট পড়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠতায় দলের সেরা তারকাই এগিয়ে। আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগ নাটকীয় কোনো পরিবর্তন না আসলে ফের পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটে নেতৃত্বে ফিরবেন তিনি।
ঢাকা/রিয়াদ/ইয়াসিন
আরো পড়ুন