বৃষ্টিস্নাত দিনে স্বস্তির সঙ্গে আছে শঙ্কাও
ইয়াসিন হাসান, সিলেট থেকে || রাইজিংবিডি.কম

খেলা হওয়ার কথা ছিল ৯০ ওভার। হলো মাত্র ৪৪ ওভার। ম্যাচের মোড় কোন দিকে যাচ্ছে তা নির্ধারণ হয়ে যেতে পারত আজই। কিন্তু বৃষ্টিস্নাত দিনে ব্যাট-বলের লড়াইয়ে পড়ল ছেদ। তাতে অপেক্ষা বাড়ল। যতুটুক খেলা হয়েছে তাতে এগিয়ে রাখার সুযোগ নেই কাউকেই। দুই শিবিরেই রয়েছে স্বস্তি। সঙ্গে শঙ্কাও।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে টেস্টটা ঝুলছে পেণ্ডুলামে। ১ উইকেটে ৫৭ রানে দিন শুরু করা বাংলাদেশ ৪ উইকেটে ১৯৪ রানে দিন শেষ করেছে। দিনের প্রথম সেশন চলে যায় বৃষ্টির পেটে। শেষ সেশনে ৪৫ মিনিট আলোকস্বল্পতায় খেলা বন্ধ। তাতে খেলা হয় মাত্র ৪৪ ওভার। জিম্বাবুয়ের বোলারদের সামলে নিয়ে ৩ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ যোগ করতে পারে ১৩৭ রান। সব মিলিয়ে লিড এখন ১১২। উইকেটে টিকে আছেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও জাকের আলী।
তৃতীয় উইকেটে মুমিনুলের সঙ্গে ৬৫ রানের জুটি গড়ার পর শান্ত জাকেরর সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে তুলেছেন অবিচ্ছিন্ন ৩৯ রান। সাত ইনিংস পর ফিফটি ছোঁয়া শান্ত করেছেন ৬০ রান। জাকের ২১ রানে মিটিয়েছেন দলের চাহিদা। এই দুই জুটির ওপরই নির্ভর করছে চতুর্থ দিন ম্যাচের ভাগ্য। বিশেষ করে দিনের শুরুর ঘণ্টায়। প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও ফিফটির সুযোগ ছিল মুমিনুলের। ৪৭ রান তুলে আলো ছড়িয়েছিলেন। কিন্তু ২৩তম ফিফটি ছোঁয়া থেকে ৩ রান দূরে থাকতে আউট হন। দিন শেষে মুমিনুলের কণ্ঠে ইনিংস বড় করতে না পারার আক্ষেপ ঝরল।
দিন শেষের স্কোরবোর্ডে মুমিনুল স্বস্তি পেলেও তার শঙ্কার জায়গা ভিন্ন। ব্যাটিংয়ে যেকোনো সময় ধস নামতে পারে সেই ধারণা তার রয়েছে। এজন্য শুধু অপরাজিত দুই ব্যাটসম্যান নয়, এরপর মিরাজ এবং লেজের দুই ব্যাটসম্যান হাসান মাহমুদ ও তাইজুল ইসলামের ওপরও ভরসা রাখছেন তিনি। তার বিশ্বাস, জিম্বাবুয়েকে অন্তত ৩০০ রানের টার্গেট দিতে পারলে এই ম্যাচের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ লিখতে পারবে।
তার ভাষ্য, ‘‘৩০০ রানের টার্গেট দিতে পারলে ভালো। এজন্য আমাদের চতুর্থ দিন আরো ভালো বোলিং করতে হবে। যারা অপরাজিত থাকেন তারা ভালো করবেন। পরবর্তীতে মিরাজ, তাইজুল, হাসান আছে। ওরা যদি অবদান রাখতে পারে তাহলে ভালো স্কোর হবে।’’
তবে মুমিনুলের এই আত্মবিশ্বাসের মধ্যে শঙ্কা হলো, ‘‘যদি দ্রুত কয়েকটি উইকেট চলে যায় তাহলে আমরা আবার ব্যাকফুটেও চলে যেতে পারি। এজন্য আমাদেরক ভালো ব্যাটিং করতেই হবে।’’
এদিকে স্কোরবোর্ডে এখনকার যে চিত্র তাতে স্বস্তিতে আছেন তিনি, ‘‘এখন তো আমরা ভালো অবস্থানেই আছি।’’
জিম্বাবুয়ের জন্য দিনটা খারাপ যায়নি। তারা জয়, মুমিনুল ও মুশফিককে আউট করেছেন এক্সটা বাউন্স আদায় করে ফিরিয়েছেন। শর্ট বল একটু লাফিয়ে উঠায় তারা পথ ভুলেছেন ২২ গজে। জয় শেষ নয় ইনিংসেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন। সাতটি স্লিপে, দুইটি উইকেটকিপারকে। মুশফিকের শেষ চার ইনিংসে রান ০, ২, ৪ ও ৪। রান খরায় থাকা এই ব্যাটসম্যানও বাড়তি বাউন্সেই কুপোকাত। আগামীকাল এই বাউন্সেই ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষায় নিতে চায় অতিথিরা। এই পরীক্ষা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা কতটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে দিতে পারেন সেটা দেখার।
ঢাকা/আমিনুল