টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রে বাংলাদেশের লক্ষ্য ‘৪-৫-৬’

‘‘পাল্লেকেলের আগে আমাদের গল, কলম্বোতে খেলা আছে। পাল্লেকেলে জয়ের ধারায় ফিরলে আগেরগুলো মিস হয়ে যাবে।’’ – কথা বলা শেষে মুখে চওড়া হাসি বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর।
২০২১ সালে পাল্লেকেলেতে ১৬৩ রানের নজরকাড়া ইনিংস খেলেছিলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। মুগ্ধতা ছড়ানো সেই টেস্ট শতকের পর শান্তকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দলে নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করার পাশাপাশি অধিনায়কত্বও পেয়ে যান। তিন বছর পর তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আবার টেস্ট খেলতে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কায়। এবার শুধু শান্তই নয়, পুরো দলই খারাপ সময় কাটাচ্ছে। পাল্লেকেলেতে এবারও ম্যাচ আছে বাংলাদেশের। এর আগে অবশ্য খেলা আছে গল ও কলম্বোতে।
পাল্লেকেলে জয়ের ধারায় ফেরার আগে গল ও কলম্বোতেও জয় চান বাংলাদেশের অধিনায়ক। তাই তো পাল্লেকেলের সুখস্মৃতি থেকে আত্মবিশ্বাস পাবেন কি না—প্রশ্নের উত্তরে ওপরের কথাগুলো বলেছেন তিনি।
২০১৭ সালের পর বাংলাদেশ পূর্ণাঙ্গ সফরে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কায়। দুই টেস্টের পর তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ। আজ দশজনের একটি বহর দ্বীপরাষ্ট্রে উড়াল দিয়েছে। আগামীকাল যাবেন বাকিরা। এই টেস্ট সিরিজ দিয়ে বাংলাদেশ প্রবেশ করতে যাচ্ছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ চক্রে।
আগের চক্রে ১২ টেস্টে চার জয় পাওয়া বাংলাদেশ এবার জয়ের সংখ্যা বাড়াতে চায়। শান্তকে এক বছরের জন্য পাকাপাকিভাবে টেস্ট অধিনায়কত্ব দেওয়া হয়েছে। তার বিশ্বাস, দীর্ঘ সময়ের জন্য অধিনায়কত্ব পাওয়ায় দলকে পরিচালনা করার কাজটা সহজ হবে তার জন্য।
মিরপুরে বৃহস্পতিবার দুপুরে শান্ত বলেছেন, ‘‘প্রতিটি অধিনায়ক যদি দীর্ঘ সময় পায়, তাহলে খুবই ভালো। এর আগে আমি একটা বছর পেয়েছিলাম, দেড় বছরের মতো করেছি। আবার এক বছরের জন্য দেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি, এখানে যে-ই অধিনায়ক থাকবে, তাকে যদি দীর্ঘ সময়ের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়—একটা বিশ্বকাপ বা একটা টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্র মাথায় রেখে—তাহলে পরিকল্পনা করা খুবই সহজ। আমার সঙ্গে বোর্ডের যে আলোচনা হয়েছে, তাতে আমি খুশি। তারা আমাকে আরও এক বছর সময় দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত যে পরিকল্পনা বোর্ড ও আমি করেছি, সেটা নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। পরিকল্পনা করা সহজ হবে।’’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিকট অতীতে যতবারই খেলা হয়েছে, সেটা টেস্ট হোক বা ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি, সবক্ষেত্রেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে। নিদাহাস ট্রফি থেকে শুরু করে ২০২৩ বিশ্বকাপের টাইমড আউট ম্যাচ—সবকিছুতেই একটা যুদ্ধ-যুদ্ধ ভাব ছিল। দীর্ঘ সময় পর বাংলাদেশ যাচ্ছে দ্বীপরাষ্ট্রটিতে। এবারও তেমন আবেগ তৈরি হতে পারে। মানসিকভাবে সেই প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছেন শান্ত, ‘‘হোক না, হলে তো ভালোই, খারাপ কী, হোক।’’
শান্তর স্কোয়াডে ১৭ মাস পর জাতীয় দলে ফিরেছেন ইবাদত হোসেন। তার ফেরায় বেশ উচ্ছ্বসিত অধিনায়ক, ‘‘এখন কামব্যাক করেছে, সুযোগ এলে আবার খেলবে। এটা দলের জন্য বাড়তি একটি শক্তি হিসেবে কাজ করবে। আশা করব, সুযোগ এলে সেখানেও ভালো পারফর্ম করবে। প্রস্তুতি ম্যাচে দারুণ বোলিং করেছে, ফিট আছে। আশা করব, ফিট থাকবে এবং দলের হয়ে ভালোভাবে অবদান রাখবে।’’
সবশেষ টেস্ট চক্রে বাংলাদেশ তিনটি ম্যাচ দেশের বাইরে একটি দেশের মাটিতে জিতেছে। এবার শুধু জয়ের সংখ্যা বাড়াতেই নয়, দেশেও বিজয়ের পতাকা উড়াতে চায় বাংলাদেশ। থাকতে চায় ৪-৫-৬ নম্বরে।
“টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে আমরা গত বছর (চক্রে) ৭ নম্বরে শেষ করেছি। এই বছর তো অবশ্যই লক্ষ্য থাকবে যেন ৪-৫-৬ নম্বরের মধ্যে আসতে পারি। তাহলে খুব ভালো হয়।”
“গত বছর (চক্রে) জয়ের হার সম্ভবত ৪৫ শতাংশ (আসলে ৪৫ পয়েন্ট ও ৩১.২৫ শতাংশ) ছিল। এখান থেকে যদি বাড়াতে পারি—৫০-৫৫ বা ৬০ শতাংশ হলে, একজন অধিনায়ক হিসেবে আমার মনে হয়, ভালো একটা ফল হবে আমাদের।” – যোগ করেন শান্ত।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল