বিশ্বকাপের আগে মালিঙ্গা-ধাঁধায় শ্রীলঙ্কা
আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে নিজেদের বোলিং বিভাগকে শাণিত করতে কিংবদন্তি লাসিথ মালিঙ্গাকে ফিরিয়ে এনেছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট (এসএলসি)। তবে লঙ্কান বোর্ডের এই সিদ্ধান্তে আনন্দের চেয়ে বিস্ময়ই বেশি ছড়িয়েছে ক্রিকেট মহলে। কারণ, বিশ্বকাপের ঠিক আগমুহূর্তে মালিঙ্গাকে বড় দায়িত্ব দেওয়া হলেও টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই তার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে!
এক মাসের ‘শর্ট টার্ম’ মিশন:
শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড জানিয়েছে, মালিঙ্গাকে দলের ‘স্পেশাল কনসালট্যান্ট’ বা পরামর্শদাতা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ১৫ ডিসেম্বর থেকে তার কাজ শুরু হয়েছে এবং এই দায়িত্বের মেয়াদকাল রাখা হয়েছে মাত্র এক মাস, অর্থাৎ ১৫ জানুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত। প্রশ্ন উঠছে, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ঘরের মাঠে শুরু হতে যাওয়া বিশ্বকাপের চূড়ান্ত লড়াইয়ের সময় কেন ডাগ-আউটে রাখা হচ্ছে না এই ক্রিকেট মস্তিষ্ককে?
সিদ্ধান্ত নিয়ে জল্পনা ও সমালোচনা:
মালিঙ্গার মতো একজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার, যিনি আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ও রাজস্থান রয়্যালসের বোলিং কোচ হিসেবে নিজের দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন। তাকে বিশ্বকাপের ঠিক আগে সরিয়ে দেওয়ার যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন না বিশ্লেষকরা। সমালোচকদের মতে, বোলারদের মানসিকভাবে তৈরি করা এবং ম্যাচের মাঝপথে তাৎক্ষণিক পরামর্শ দেওয়ার জন্য মালিঙ্গার উপস্থিতি ডাগ-আউটে অপরিহার্য ছিল। মাত্র ৩০ দিনের এই সংক্ষিপ্ত মেয়াদে তিনি লঙ্কান বোলিং ইউনিটে কতটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারবেন, তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন চিহ্ন থেকেই যাচ্ছে।
লঙ্কান ক্রিকেটে মালিঙ্গা অধ্যায়:
২০০৭ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার সোনালী সময়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন মালিঙ্গা। তার হাত ধরেই ২০১৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল দ্বীপরাষ্ট্রটি। এছাড়া ২০০৭ ও ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ এবং ২০০৯ ও ২০১২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের রানার্স-আপ দলেও তিনি ছিলেন প্রধান সেনানি। সেই বিশাল অভিজ্ঞতাকে বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে কেন কাজে লাগানো হচ্ছে না, তা এখন লঙ্কান ক্রিকেটের সবথেকে বড় ধাঁধা।
বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার সূচি (গ্রুপ পর্ব):
ঘরের মাঠের চেনা কন্ডিশনে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে শ্রীলঙ্কা। তাদের গ্রুপ পর্বের লড়াইগুলো হলো—
৮ ফেব্রুয়ারি: আয়ারল্যান্ড (উদ্বোধনী ম্যাচ),
১২ ফেব্রুয়ারি: ওমান,
১৬ ফেব্রুয়ারি: অস্ট্রেলিয়া,
১৯ ফেব্রুয়ারি: জিম্বাবুয়ে।
মালিঙ্গার এক মাসের ‘ক্র্যাশ কোর্স’ লঙ্কান বোলারদের বিশ্বকাপে কতটা অপ্রতিরোধ্য করে তোলে, এখন ক্রিকেট বিশ্ব তাকিয়ে আছে সেদিকেই। তবে ভক্তদের মনে একটাই আক্ষেপ রয়ে গেল- বিশ্বকাপের উত্তাপে মালিঙ্গার সেই পরিচিত হাসি হয়তো ডাগ-আউটে দেখা যাবে না।
ঢাকা/আমিনুল