ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মধ্যরাতে আদম পাহাড়ে

উদয় হাকিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:২৩, ২৮ অক্টোবর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মধ্যরাতে আদম পাহাড়ে

মধ্যরাতে টর্চের আলো ফেলে আদম পাহাড়ের পথে

আদম পাহাড়ে ওঠা বেশ কষ্টসাধ্য। তারপরও জায়গাটি মানুষকে আকৃষ্ট করে। আদমের পায়ের ছাপ দেখতে, অথবা পৃথিবীর প্রথম মানবের আগমন হয়েছিল যে স্থানে- তা দেখতে সেখানে ছুটে যান সবাই।

অ্যাডামস পিকে যাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় জানুয়ারি থেকে এপ্রিল। এ সময় বৃষ্টি বাদল কম হয়। আকাশ থাকে পরিষ্কার। সবকিছু দেখা যায় ভালোভাবে। পাহাড়ের চূড়া থেকে সূর্য ওঠার দৃশ্য সত্যিই অপরূপ! বেশির ভাগ আগন্তুক মিস করতে চান না ওটা। বিশেষ করে ওই পবর্তশ্রেণির মায়াময় সৌন্দর্য আকর্ষণ করে পর্যটকদের।

আমরা গিয়েছিলাম জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে। তখন শ্রীলঙ্কায় প্রচুর বৃষ্টি হয়। বৃষ্টির সময় আদম পাহাড়ের খাঁড়া পথ বেয়ে উপরে ওঠা বেশ কষ্টকর। শ্রীলঙ্কাতো আর বাংলাদেশ নয় যে, যখন তখন যাব। তাই মেঘ-বৃষ্টির বাঁধা উপক্ষো করেই নাল্লাথান্নিয়াতে গিয়েছিলাম। পণ করেছিলাম ঢাকা থেকেই- যত কষ্টই হোক ওই ট্যুরেই অ্যাডামস পিক মিস করব না।

ঘড়িতে অ্যালার্ম দেয়া ছিল। রাত দুটোর সময় সেটি বেজে উঠল। একটু আগেই ঘুমিয়েছিলাম। তাই উঠতে ইচ্ছে হচ্ছিল না। তবে অ্যাডামস পিকে সামিট করার রোমাঞ্চ আটকাতে পারল না কিছুই। যথারীতি ঘুম থেকে উঠে গেলাম ওয়াশরুমে। সেখানে ভেন্টিলেটর দিয়ে শুনলাম জলের শব্দ। বৃষ্টি হচ্ছিল। মাই গড! বৃষ্টি হলে তো সব মাটি! সঙ্গীরা কেউ যেতে চাইবে না। মধ্যরাতে গহীন জঙ্গল পেরিয়ে একা যাওয়া সম্ভব না, যতই অ্যাডভেঞ্চার থাকুক তাতে। কি করব! মনটা খারাপ হয়ে গেল।

দাঁত ব্রাশ করে গোসল করার প্রস্তুতি নিলাম। দীর্ঘদিনের অভ্যেস- গোসল না করে বাইরে যাই না কখনো। সেটা মধ্যরাত কিংবা ভোর রাত হোক। সমস্যা দেখা দিল পানি নিয়ে। এত ঠান্ডা পানিতে গোসল করব কীভাবে? হোটেলে গিজার নেই। নেই পানি গরম করার কোনো ব্যবস্থা।

মনে পড়ল ক্রিকেটার ক্রিস গেইলের কথা। একবার সে বরফ জল নিজের গায়ে ঢেলেছিল। বেশ কিছুদিন আগের কথা। নেট দুনিয়ায় ওরকম বেশকিছু ছবি তখন ভাইরাল হয়েছিল। শুধু গেইল নয়, সেলিব্রেটি খেলোয়াড়, অভিনেতারাও তখন ওই কাজটি করছিলেন। একটা হুজুগ উঠেছিল। আমিও ওই বরফ জলে স্নান করার মতো গোসল করলাম। সে কথা মনে হলে এখনো গা শিউরে উঠে। যখন সিএসবি নিউজে সিনিয়র টিভি রিপোর্টার হিসেবে কাজ করতাম। তখন একবার শীতের দিনে শ্রীমঙ্গল গিয়ে ওরকম ঠান্ডা পানিতে গোসল করেছিলাম। বরফ জলে জমে যাওয়া শ্রীহীন ওইসব শ্রী’র কথা শ্রীলঙ্কাতে আর মনে করতে চাই না।

গোসল শেষ করে ডাকলাম ইমনকে। সফরসঙ্গী ভোরের ডাকের সাংবাদিক ইমন। এরপর গেলাম পাশের রুমে। সেখানে ছিলেন ফিরোজ আলম এবং মিলটন। তারা সবাই দাঁত ঘষাঘষি শুরু করল। আমি কাপড় পরে রেডি। সঙ্গে কোনো ব্যাগ নেব না। জিন্স প্যান্ট, টি শার্ট আর কেডস পড়লাম। হাতে টর্চ লাইট। পকেটে নিলাম নোট বুক আর একটা কলম। মোবাইল ফোন ফুল চার্জ করা। পর্যাপ্ত ছবি বা ভিডিও তুলতে হবে সে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম।

মুখে একটু ক্রিম মাখার জন্য আবার ওয়াশরুমে গেলাম। কানে ভেসে এল একটানা বৃষ্টির শব্দ। মুষলধারে বৃষ্টি! সর্বনাশ! কোনোভাবেই বাইরে বের হওয়া সম্ভব না। হঠাৎ মনে হলো কোনো একটা গণ্ডগোল হচ্ছিল। নইলে একটানা একই রকমের বৃষ্টির শব্দ। বৃষ্টি কমছিলও না, বাড়ছিলও না। এত বৃষ্টি একটানা! কীভাবে সম্ভব?

ওহ মাই গড! বুঝতে তখন আর বাকি নেই। আসলে বৃষ্টি নয়। পানির শব্দ বটে- সেটা হোটেল রুমের পাশের ওই খাল বা নদীর। ঝরনার পানি অনবরত পাথুরে পথ বেয়ে নিচে পড়ছিল, আর বৃষ্টির মতো শব্দ হচ্ছিল!

রাত ঠিক পৌনে তিনটায় রওনা হলাম। হোটেল গেইটের বাইরে গিয়ে দেখলাম বৃষ্টি নেই। অথচ এই বৃষ্টি জুজু সারা রাত তাড়িয়ে বেড়িয়েছিল। হোটেলের বাইরে খোলা জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালাম। আকাশে কোনো তারা নেই। তার মানে মেঘে ঢাকা। দূরে অন্ধকার। ওই অন্ধকারের দিকেই পথ বাড়ালাম।

চারদিক নীরব। ঠান্ডা। ঘুঁটঘুঁটে আঁধার। ইউটিউবে দেখেছিলাম রাতের এই সময়টাতে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয় নাল্লাথান্নিয়ার এই জায়গাটাতে। কপাল খারাপ; আমরা দেখছিলাম আশে পাশে কেউ নেই। শুধু আমরা চারজন। পাশের খালটাতে একটা ব্রিজ। সেখানে উঠতেই ওই শব্দটা জোড়াল হলো। রাতে যে শব্দ শুনে বৃষ্টির ভয় জেঁকে বসেছিল।

ওই জায়গাটাতে অসংখ্য ঝরনা। সেসব ঝরনার জলে অনেক দামি পাথর পাওয়া যায়। জায়গাটা সে কারণেও কিছুটা বিখ্যাত। পান্না, রুবি, নীলকান্তমনি- এরকম বহু পাথর মেলে ওই এলাকায়। শ্রীলঙ্কা এসব পাথরের জন্য বিখ্যাত। জেমস পাথর একটা ভালো ব্যবসা। বিশেষ করে টাকাওয়ালাদের বোকা বানানোর জন্য এই পাথর ব্যবসা শ্রীলঙ্কা এবং থাইল্যান্ডে বেশ জনপ্রিয়।

আগের দিন বিকেল বেলা যে ঝরনাকে মনে হচ্ছিল অপরূপা, এখন সেটি অন্ধকারে ঢাকা। কেবল কূল কূল জলধ্বনি। পাশের দোকানগুলি বন্ধ। সিজনে এগুলো খোলা থাকে। শুনশান নীরবতা। জোর কদমে হাঁটছিলাম। ওই নদী পার হয়ে যেখান থেকে অ্যাডামস পিকে উঠার পথ শুরু সেখানেই একটা মন্দির। সবচেয়ে বেশি ভিড় হয় ওই জায়গটাতেই।

মন্দিরের সামনে দোকানগুলো বন্ধ। শুরুর জায়গাটাতে বিজলী বাতির আলো ছিল। সিঁড়ি বেয়ে সামান্য উপরে উঠতে হয়। তারপর কয়েকশ গজ সমতল। কিছুটা সরু রাস্তা। দুপাশে যত দোকানপাট ছিল সবই বন্ধ। সেই একই কাহিনি, সিজনে খোলা থাকে। কয়েক মিনিট সামনে যেতেই সেই বৌদ্ধ মন্দির। মন্দিরের বাইরে দিয়ে মূল রাস্তা। কিন্তু সেটি অন্ধকার করে রাখা হয়েছে। মন্দিরের ভেতরের রাস্তা আলোকিত। যে কেউ ভেতর দিয়েই যাবেন। ভেতরে গেলেই অদৃশ্য ফাঁদ পাতা, ফাঁদের নাম প্রণামী।

 

 

অন্ধকারে কখনো উঁচু কখনো নিচু রাস্তায় পথচলা। উদ্দেশ্য অ্যাডামস পিক

 

মন্দিরের প্রবেশ মুখে একটা টেবিলের ওপর রেজিষ্ট্রার খাতা। পাশেই দুটো কলম। দান বাক্স। আমরা ভেবেছিলাম- যারাই অ্যাডামস পিকে যাবেন তাদের এখানে নাম ঠিকানা লিখতে হবে। গত বছর বান্দরবানে গিয়েছিলাম, কেওকারাডং এ যেতে নাম এন্ট্রি করতে হয়েছিল। মন্দিরের খাতায় লিখতে গিয়ে দেখলাম- একটা ঘরে আছে কোন দেশ থেকে এসেছেন? কত টাকা দান করছেন?

ওই যা! এত দেখি দান খতিয়ান। ফিরোজ আলম নাম ঠিকানা অলরেডি লিখে ফেলেছিলেন। আমি বললাম, বাদ দেন। কেন? আরে এটা ফাঁদ, টাকা দান করতে চাইলে লিখেন, না হলে কেঁটে দেন।

মন্দির থেকে দ্রত বের হয়ে গেলাম। অন্ধকার, পাহাড়ি উঁচু নিচ পথ। মাঝে মাঝে দু একটা বাতি আছে- অনেক দূরে দূরে। সাবধানে পথ চলতে হচ্ছিল। উষ্ঠা খাওয়ার ভয় ছিল।

কোনো জনমানুষের চিহ্ন নেই। কিন্তু মন্দিরের দান খাতায় দেখেছিলাম কিছু লোক আমাদের আগে গিয়েছে। তারা কই? কত আগে গেছে? আমরা কি খুব লেট করে ফেলেছি। সাধারণত আড়াইটা থেকে রওনা হয় পর্যটকরা। ১৫ মিনিটেই এত পেছনে পড়ে গেলাম!

বা দিকে পাহাড়। ডানে খাঁড়া ঢালু। কখনো ছোট ছোট কিছু ঝরনার শব্দ। বাঁ পাশ থেকে ডানে পানি গড়াচ্ছিল। একটা ব্রিজ পার হলাম। জোর কদমে হাঁটছিলাম। আমার টর্চ ছিল ইমনের হাতে। ফিরোজ এবং মিলটনের হাতেও টর্চ ছিল। শ্রীলঙ্কা যাওয়ার আগে ওয়ালটন শোরুম থেকে তিনটা টর্চ লাইট কিনেছিলাম।

মিনিট বিশেক হাঁটার পর ক্লান্ত হয়ে গেলাম। ভয় পাচ্ছিলাম- অন্যরা গেলেও আমি বোধহয় যেতে পারব না। শরীরে কুলাবে না। একটা ছোট মন্দির পেলাম। সেখানে আলো জ্বলছিল। একজন পুরোহিত বসে ছিলেন। আমাদের দান করতে বললেন। তার কথা না শোনার ভান করে সামনে চলে গেলাম। পেছনেও কয়েকটা মন্দির ফেলে গিয়েছিলাম, নানা রকমের মূর্তি ছিল। রাতের বেলা ওসব দেখে কেউ কেউ ভয় পায়। আমার মধ্যে যদিও ওরকম কোনো ভয় ছিল না, ভয় ছিল পথ পেরোনোর।

হঠাৎ থমকে গেলাম। দুটো পথ গেছে দুদিকে। কোন পথে যাব। দুটো পথই সিমেন্টে বাঁধানো। এটা পথ পাহাড়ের উপরে চলে গেছে মনে হলো। আরেকটা পথ পাহাড়ের ডানে। একটা সাইনবোর্ড ছিল। পড়ার চেষ্টা করলাম। কিছু উদ্ধার করতে পারলাম না- শ্রীলঙ্কান ভাষায় লেখা। মনে হচ্ছিল পাহাড়ের উপরের পথটা কোনো চা এস্টেটের বাংলো বা চা বাগানের পথ হবে।

ডান দিকের পথ নিলাম। পরে বুঝলাম সঠিক পথেই ছিলাম। ওই পাহাড়ের শুরু থেকে আর কোনো দোকান পাট বা বাতির ছিল না। অমাবস্যার নিকষ কালো অন্ধকার। চারদিকে পোকা মাকড়ের অচেনা শব্দ। অজানা জঙ্গলের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া জলের শব্দ। ছোট বড় গাছ গাছড়ায় ছাওয়া। টর্চ লাইটের আলোয় কুয়াশা-ধুয়াশার খেলা। রাস্তা কখনো কাঁচা, কখনো পাকা। মাঝপথ দিয়ে যাচ্ছিলাম। আর যাই হোক এটুকু বুঝছিলাম, একবার পথ থেকে ছিঁটকে পড়লে নিচে গভীর খাঁদ! বাঁচার কোনো সম্ভাবনা নেই। খোঁজ মিলবে না দেহের।

আধা ঘণ্টা হেঁটেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। খুব কষ্ট হচ্ছিল। মুখে বলছিলাম না কিছুই। কারণ ওখানে যাওয়ার ব্যাপারে আমারই বেশি আগ্রহ ছিল। আমিই অন্যদের প্ররোচণা দিয়েছি। টিমের মধ্যে ইমন কিছুটা বাল্কি- মোটা। সে বেশ হাঁপিয়ে উঠেছিল। মুখে অবশ্য বলছিল যত কষ্টই হোক- আদম পাহাড়ে উঠবেই।

পাহাড়ে উঠতে গেলে প্রথম আধা ঘণ্টা খুব কষ্ট হয় আমার। ওই যে কেওকারাডং এর কথা বললাম। মিনিট পনেরো হাঁটার পর মনে হচ্ছিলে যেতে পারব না। পরে ঠিকই আমি আর মিলটন সবার আগে পৌঁছেছিলাম পাহাড়ের মাথায়।

ভুতুরে রাস্তা ধরে যাচ্ছিলাম। মনে হচ্ছিল কোনো অনন্ত রাস্তা। পথের শেষ কারো জানা নেই। একটা মন্দির দেখলাম। সাইনবোর্ডে লেখা জাপানিজ টেম্পল। অনেক জায়গা নিয়ে মন্দির চত্বর। রাস্তার দুপাশেই তার বিস্তৃতি। সেখানেও বড় স্থাপনাই ছিল। রাস্তার একপাশে মন্দির, অন্য পাশে থাকার ঘর।

আরো মিনিট দশেক (মোট ৪০ মিনিটের মতো) হাঁটার পর বড় একটা মন্দিরের দেখা পেলাম। সব। পাহাড়ি এলাকা হিসেবে সেটি বড় চত্বর। ওই মন্দিরে বুদ্ধের একটি মূর্তিকে ঘিরে অসংখ্য ভক্তকূলের মূর্তি বানানো। সাদা মূর্তি সব। কোনো মন্দিরে একসঙ্গ এত মূর্তি আমি দেখিনি। অবশ্য বাগেরহাটে একটা দুর্গাপূজা হয়, সেখানে বিশাল এলাকা নিয়ে শত শত মূর্তি বানানো হয়। এত বড় আয়োজনে কোনো পূঁজা পৃথিবীর আর কোথাও হয় কি না, আমার জানা নেই।

মন্দিরের ছাউনির নিচে বেঞ্চ পাতা ছিল। অনেক লোক একসঙ্গে থাকার মতো বাঁধানো চত্বর। হঠাৎ সেখানে গিয়ে বসে পড়ল ইমন। বলল, আমি আর যাব না। কেন? আর পারছি না। কি বলেন? এখনই এ অবস্থা। সবে তো শুরু। চলেন, আস্তে আস্তে যাবেন। আমরা হেল্প করব। জোয়ান মানুষ। আপনার চেয়ে বয়সে আমরা বড়। আপনি এ কথা বললে হয়?

অনেক বোঝানোর চেষ্টা করলাম। ইমন অনড়। যাবে না। এই মধ্য রাতে পাহাড়ি জঙ্গলে তাকে একা রাখাও নিরাপদ না। ভূত-প্রেত জন্তু জানোয়ারের ভয় ছিল।

কি করবেন আপনি? ইমন বলল, বসে থাকব এখানে। সকাল হলে নিচে নেমে যাব, হোটেলে চলে যাব। এক উইকেট পড়ে গেল। ভয়ে ছিলাম। পরের পালা আমার। তবু যা থাকে কপালে।

ইমনকে রেখে রওনা হলাম। কখনো উঁচু, কখনো নিচু এরকম বন্ধুর পথ ধরে চলছিলাম। যে করেই হোক- অ্যাডামস পিকে উঠবই।

কিন্তু, আদম পাহাড়ে ওঠা কি এত সোজা!


**



শ্রীলঙ্কা/উদয় হাকিম/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়