শূন্যের সমস্যায় বাংলাদেশ
ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
এই তো শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গত মাসেই ৬ শূন্যের ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড করেছিল বাংলাদেশ। মানে কি! এটাও আবার রেকর্ড? ক্রিকেট এমনই এক খেলা যেখানে ভালো করলেও রেকর্ড, খারাপ করলেও রেকর্ড!
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৬ জন ব্যাটসম্যান আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে। মুশফিক ও লিটনের ব্যাটে চড়ে বাংলাদেশ করেছিল ৩৬৫ রান। হঠাৎ ওই আলোচনা টেনে আনার কারণ, বাংলাদেশ আবারও সেই পথেই হাঁটছে।
অ্যান্টিগায় স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে ভয়ংকর সকাল কাটাল বাংলাদেশ। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানের দুজনই আউট শূন্য রানে। জয় ও শান্তকে ফিরিয়ে শুরুতেই ধাক্কা দেন কেমার রোচ। এরপর সিলসের শিকার মুমিনুল। চার বছর পর টেস্টে ফিরে কাজী নুরুল হাসান সোহানেরও একই দুর্দাশা।
শেষ কয়েক সিরিজ ধরেই বাংলাদেশের ইনিংসে শূন্যর মিছিল। রান তোলা তো দূরের কথা, রানের খাতা খোলাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যাটসম্যানদের জন্য। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঢাকায় ওই টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের আরো তিন ব্যাটসম্যান আউট শূন্য রানে।
এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় দুই টেস্টেই একই পরিণতি। প্রথম ইনিংসে ২টি করে এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ জন করে ব্যাটসম্যান রানের খাতা খুলতে পারেননি।
বাংলাদেশের ব্যাটিং দুর্দাশার বড় কারণ শুরুর ব্যাটসম্যানদের রান না পাওয়া। টপ অর্ডার ‘টপলেস’। ইনিংসের মধ্যভাগেও আসছে না প্রতিরোধ। তাতে সাদা পোশাকের ভরাডুবির চিত্রনাট্যগুলো নিয়মিত লিখা হচ্ছে ২২ গজে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের আগে চার টেস্টে ২১ ইনিংসে টপ অর্ডারে (১-৩) রান করেছে মাত্র ৫৪১। ব্যাটিং গড় ২৫.২৮। আর মিডল অর্ডারে (৪-৭) ২৮ ইনিংসে রান ৮৮৪। গড় মাত্র ৩২.৭৪। মুশফিকের জোড়া ও লিটনের এক সেঞ্চুরি বাদ দিলে মধ্যভাগে কারো রান-ই নেই।
অবশ্য এই সমস্যা আজকের নয়। শেষ ১২ মাসে ৬৫ ইনিংসে মিডল অর্ডারে রান হয়েছে ২১৩৪, গড় রান ৩৪.৯৮। আর টপ অর্ডারে ৫৪ ইনিংসে ১২৫০ রান এসেছে ২৪.৫০। ব্যাটিং গড়ে অনান্য দেশগুলো থেকে পিছিয়ে বাংলাদেশ। শেষ ১২ মাসে ভারতের টপ অর্ডারের ব্যাটিং গড় যেখানে ৩৩.৮২, বাংলাদেশের ২৪.৫০। পাকিস্তানের এই গড় আবার ৪৯.৮২। অস্ট্রেলিয়ার ৪২.৩৪। মধ্যভাগেও দলগুলোর প্রায় একই অবস্থা।
পরিসংখ্যানগুলো সাদা পোশাকে বাংলাদেশের অবস্থান বুঝিয়ে দিচ্ছে। স্পষ্ট করে বলছে, টেস্ট ক্রিকেটে ২২ বছর কাটিয়ে দিলেও খেলাটাই আয়ত্বে করতে পারেনি বাংলাদেশ। নয়তো এভাবে দিনের পর দিন একই ভুল কিভাবে করে?
ঢাকা/ইয়াসিন
আরো পড়ুন