ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

রায়হান হত্যা:  এসআই আকবরসহ ৫ পুলিশের বিরুদ্ধে চার্জশিট

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৪১, ৫ মে ২০২১   আপডেট: ১২:২০, ৫ মে ২০২১
রায়হান হত্যা:  এসআই আকবরসহ ৫ পুলিশের বিরুদ্ধে চার্জশিট

এসআই আকবর হোসেন

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান আহমদের মৃত্যুর ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) আদালতে দাখিল তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

প্রায় সাত মাস পর বুধবার (০৫ মে) সকাল সোয়া ১১টায় সিলেটের আদালতে আলোচিত এ মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয় বলে জানান পিবিআই সিলেট জেলা পুলিশ সুপার খালেদ-উজ-জামান।

অভিযোগপত্রে ফাঁড়ির ইনচার্জ সাময়িক বরখাস্ত উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেনকে প্রধান করে ৫ পুলিশ সদস্যসহ ৬ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

দীর্ঘ তদন্ত শেষে চার্জশিট দাখিলের খবরে খুশি রায়হানের মা সালমা বেগম। ছেলেকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তিনি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দেরিতে হলেও মামলার চার্জশিট প্রস্তুতের খবরে তিনি খুশি। তিনি দ্রুত বিচারকাজ শুরু করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।

গত বছরের ১১ অক্টোবর ভোরে নগরীর আখালিয়ার এলাকার বাসিন্দা রায়হান আহমদকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে এনে নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়াসহ পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে। পরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

ঘটনার পরদিন রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনে মৃত্যু অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার। ওইদিন ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত এবং তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়।

আর ১৪ অক্টোবর পিবিআইকে আলোচিত এ মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়। তদন্তভার পেয়ে ১৫ অক্টোবর কবর থেকে রায়হানের মরদেহ উত্তোলন করে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে পুনরায় ময়নাতদন্ত করা হয়। দুই দফার ময়নাতদন্তে রায়হানের দেহে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১৪টি আঘাত ছিল গুরুতর।

এই ঘটনায় দেশব্যাপী প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝড় ওঠে। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গড়ে ওঠে আন্দোলন। চলে নানা কর্মসূচি। নিহত রায়হানের মা সালমা বেগম রাজপথে নামেন। বন্দর ফাঁড়ির সামনে কাফনের কাপড় মাথায় দিয়ে অনশন করে ছেলে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।

এ নিয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশসহ আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীও বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে। সাময়িক বরখাস্তের পরপরই পুলিশ লাইন থেকে পালিয়ে যান মূল অভিযুক্ত এসআই আকবর। ২০ অক্টোবর ঘটনার তথ্য গোপন ও আকবরকে পালাতে সহায়তার অভিযোগে ফাঁড়ির টু-আইসি এসআই হাসানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

আর ঘটনার এক মাসের মাথায় ৯ নভেম্বর পলাতক ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই আকবরকে সিলেটের কানাইঘাটের সীমান্তবর্তী দনা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে জেলা পুলিশ। এরপর দিন তাকে পিবিআইর কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাকেও দুই দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

রায়হান হত্যার ঘটনায় বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর, এসআই হাসানসহ ৬ পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য চারজন হলেন, এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল হারুনুর রশীদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটু চন্দ্র দাস। দীর্ঘ দিন পর আলোচিত এই মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করলো পিবিআই।

 

নোমান/বকুল 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়