ঢাকা     শুক্রবার   ১৭ মে ২০২৪ ||  জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১

কক্সবাজারে খোলা আকাশের নিচে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান 

কক্সবাজার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:২৫, ৩০ অক্টোবর ২০২৩  
কক্সবাজারে খোলা আকাশের নিচে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান 

ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ তাণ্ডবের ক্ষত এখনো শুকায়নি কক্সবাজারে। পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কুতুবদিয়া পাড়ার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল কুতুব একাডেমিতে চলছে খোলা আকাশের নিচে ‍শিশুদের পাঠদান। কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রতিষ্ঠানটি মেরামতে সরকারি-বেসরকারি কোনো সংস্থা কিংবা জনপ্রতিনিধি এখনো এগিয়ে আসেননি। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকারের নীতি অনুসরণ করে শিক্ষার কাঠামোকে আধুনিকায়নের মধ্য দিয়ে নিয়মিত চলছে শিক্ষার্থীদরে পাঠদান। দারুল কুতুব একাডেমি শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষা কার্যক্রমকে আরও আকর্ষণীয় করার পাশাপাশি তাদের জীবন ও জীবিকা সম্পর্কিত পাঠ শেখানো হয় প্রতিনিয়ত। গত ২৪ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় হামুনে আঘাত হানে কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায়। সেসময় ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি পুনঃনির্মাণে সরকারি বেসরকারি কোনো সংস্থা এগিয়ে আসেনি। ফলে শিক্ষার্থীদের পাঠদানসহ সার্বিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ফলে ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকেই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে খোলা আকাশের নিচে। 

গরিব-অসহায় ও জলবায়ু উদ্বাস্তু জনগোষ্ঠীর শিশুসহ এতিম তিন শতাধিক শিক্ষার্থী এই প্রতিষ্ঠানে বিনা বেতনে পড়ালেখা করেন। আগামী নভেম্বরে বার্ষিক পরীক্ষা দিতে না পারলে শিক্ষার্থীরা ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে মনে করছেন কর্তৃপক্ষ।

বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন সিকদার  জানান, ২০০৪ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০০৭ সালে বিদ্যালয়টি ইআইআইএন-এ অন্তর্ভুক্ত হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান অব্যাহত রয়েছে। বিদ্যালয়ে ১০জন শিক্ষক পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। বিদ্যালয়টি পুনঃ নির্মাণ না হলে আগামী নভেম্বরে বার্ষিক পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত হবেন কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, জনপ্রতিনিধি এবং বিত্তশালীদের বিদ্যালয়ের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান তিনি। 

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাওন বলে, ‘ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে আমরা কষ্ট করে পড়ালেখা করছি। ছাউনি না থাকায় বিদ্যালয়ের ভেতরে বসে ক্লাস করতে পারছি না। খোলা আকাশের নিচে বিদ্যালয়ের উঠানে ক্লাস করছি। অনেক কষ্ট হচ্ছে আমাদের।’

জাহাঙ্গীর আলম নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘২ দশকের প্রতিষ্ঠানটি এলাকায় শিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এ বিদ্যালয়ের ছাত্র মেডিকেল কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, আইনজীবী হয়েছে। এরকম একটি প্রতিষ্ঠান ঘূর্ণিঝড়ে বিলীন হওয়ায় পুনঃনির্মাণে কেউ এগিয়ে না আসা  দুঃখজনক। এজন্য খোলা আকাশের নিচেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে হচ্ছে শিক্ষকদের।’

কক্সবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আকতার কামাল আজাদের মুঠোফোনে একাধিক বার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। 

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) তাপ্তি চাকমা বলেন, এ ব্যাপারে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের কিছু জানায়নি। তারা যদি আমাদের অবগত করে তবে বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তারেকুর/মাসুদ

ঘটনাপ্রবাহ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়