ঢাকা     বুধবার   ০৮ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

রংপুরের ৬ আসনে আ.লীগের প্রার্থী যারা

রংপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪৮, ২৭ নভেম্বর ২০২৩  
রংপুরের ৬ আসনে আ.লীগের প্রার্থী যারা

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গতকাল রোববার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। 

রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া ও আংশিক সিটি) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ছিলেন।

এর আগে রেজাউল করিম ২০১৯ সালে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া রংপুর- ৩ আসনের উপ-নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে জোটগত রাজনৈতিক সমীকরণে দলীয় নির্দেশে তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন।

এরপর থেকে আলোচনায় ছিলেন অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু। এবার তিনি দলীয় প্রতীকে রংপুর-১ আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা।

রংপুর-২ (বদরগঞ্জ ও তারাগঞ্জ) আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাওয়া আবুল কালাম মোহাম্মদ আহসানুল হক চৌধুরী এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য। এলাকায় তিনি ডিউক চৌধুরী নামে বেশি পরিচিত। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে অংশগ্রহণ করেন। ওই নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন। দশম সংসদের মেয়াদে ডিউক চৌধুরী শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন।

সবশেষ ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগ থেকে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য।

রংপুর-৩ (সদর ও সিটি করপোরেশন) আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন তুষার কান্তি মণ্ডল। তিনি বর্তমানে রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। রংপুর কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান পদে তিনি রয়েছেন। তিনি রংপুর ভূমি উন্নয়ন ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক জাতীয় পরিষদ সদস্য তিনি। বর্তমানে রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির তিনি সদস্য হিসেবে রয়েছেন।

রংপুর-৪ (পীরগাছা ও কাউনিয়া) আসনে চতুর্থবারের মতো প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশি। তিনি ২০০৮ সাল থেকে এ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বর্তমান সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী।

পেশায় শিল্পপতি টিপু মুনশি ১৯৬৬ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন। ১৯৬৯ সালে ঢাকায় জোয়ারসাহারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে ভূমিকা রাখেন। তিনি তৎকালীন সরকারি জিন্নাহ কলেজ (বর্তমান তিতুমীর কলেজ) ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্ব দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে লড়াই করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের তেজগাঁও উত্তরাঞ্চলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনে এবারই প্রথম দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন রাশেক রহমান। তার বাবা বর্তমান সংসদ সদস্য এইচ এন আশিকুর রহমান এবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। তিনি আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও পাঁচবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী।

রাশেক রহমান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির সদস্য। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকার তারুণ্যের সঙ্গে মেলবন্ধন তৈরি করে জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।

রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনে গতবারের মতো এবারো নৌকার হাল ধরতে মনোনয়ন পেয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি সবশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্বশুরবাড়ির আসন পীরগঞ্জ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং সেইসঙ্গে সিপিএ নির্বাহী কমিটির চেয়ারপার্সন।

এদিকে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে গত ১৮ থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত চার দিনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন ৩ হাজার ৩৬২ জন। মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে দলটির আয় হয়েছে ১৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর মধ্যে রংপুর জেলায় ছয়টি সংসদীয় আসনে মনোনয়ন ফরম কেনেন ৩৮ জন।

প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ৩০ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। মনোনয়ন আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৮ ডিসেম্বর এবং নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত চলবে। ভোটগ্রহণ ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। সংসদ নির্বাচনের জন্য ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং ৫৯২ জন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছে।

আমিরুল/মাসুদ

ঘটনাপ্রবাহ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়