ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছায়নি সহায়তা

নোয়াখালী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০১, ২৮ আগস্ট ২০২৪   আপডেট: ১৮:২০, ২৮ আগস্ট ২০২৪
নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছায়নি সহায়তা

টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালীর বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে থেকে বুধবার (২৮ আগস্ট) সকাল পর্যন্ত বৃষ্টির কারণে দেড় ফুটের মতো পানি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সবচেয়ে বেশি পানি বেড়েছে নোয়াখালী সদর উপজেলার কিছু এলাকা, বেগমগঞ্জ, চাটখিল, সেনবাগ উপজেলায়। এসব উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে এখনো সরকারি-বেসরকারি সহায়তা পৌঁছায়নি বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। যে কারণে সেখানকার মানুষ কষ্টে দিন যাপন করছেন।  

নোয়াখালীর ৮টি উপজেলার ৮৭টি ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ২১ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছেন। ১ হাজার ১৬৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন প্রায় সোয়া দুই লাখ মানুষ। বিভিন্ন জায়গায় সড়কের আশপাশের আশ্রয়কেন্দ্রের মানুষ সহযোগিতা পেলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছায়নি বলে জানিয়েছেন বন্যার্তরা। 

আরো পড়ুন:

জেলা প্রশাসন সূত্র জানা যায়, নোয়াখালীর ৮৭টি ইউনিয়নে সরকারিভাবে নগদ ৪৫ লাখ টাকা, ৮৮২ টন চাল, ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ৫ লাখ টাকার শিশু খাদ্য ও ৫ লাখ টাকার পশুখাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।

জেলা শহরের হাউজিং স্টেট এলাকার মোজাম্মেল হোসেন নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘গতকাল মধ্যরাত থেকে টানা বৃষ্টি হয়েছে। বজ্রপাতও হয়। বন্যার পানি আরো বেড়ে গেছে। নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।’

সুবর্নচরের চরজুবলী গ্রামের সিরাজ মিয়া বলেন, ‘অতিরিক্ত পানির কারণে রোপা আমন ধানের বীজ নষ্ট হয়ে যাবে। সামনের আমন মৌসুম নিয়ে চিন্তায় আছি। রাস্তা ও বাড়ি পানিতে তলিয়ে আছে। এখনো মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন।’

নোয়াখালী সদর উপজেলার নোয়ান্নই ইউনিয়নের আকবর হোসেন বলেন, ‘আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে খাবার সংকট রয়েছে। বিশেষ করে প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় বেশি পানি থাকায় নৌকা ছাড়া যাওয়া যাচ্ছে না। সেখানে সহায়তা পৌঁছাচ্ছে না। ওই সব এলাকায় মানুষ না খেয়েও আছেন বলে জানতে পেরেছি। বিশেষ করে কষ্টে আছে শিশু, বয়স্ক ও অসুস্থরা।’

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজনের) জেলা সাধারণ সম্পাদক আবু নাছের বলেন, ‘সমন্বয়হীনতার কারণে ত্রাণ দুর্গম অঞ্চলে পৌঁছাচ্ছে না। বিভিন্ন জেলা থেকে যে সব ত্রাণ আসছে সেগুলো সঠিকভাবে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাচ্ছে না।’

জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার মধ্য রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নতুন করে আরেকটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেজন্য বজ্রসহ বৃষ্টি হচ্ছে।

নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘নোয়াখালীতে স্মরণকালের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন কাজ করছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের  পক্ষে দুর্গম এলাকাগুলোতে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া, বিভিন্ন জেলা থেকে সহায়তা আসছে। তারা বন্যার্তদের সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছেন। বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাসেবীরা নিরলসভাবে কাজ করছেন। বৃষ্টি না হলে আমাদের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।’

সুজন/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়