ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৩ মে ২০২৫ ||  বৈশাখ ৩০ ১৪৩২

আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই পেলেন সেই ফাতেমা বেগম

সাইমুম সাব্বির শোভন, জামালপুর  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৫০, ২৯ এপ্রিল ২০২৫   আপডেট: ২১:০৩, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই পেলেন সেই ফাতেমা বেগম

ফাতেমা বেগমকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে কোলে করে ঘর থেকে বের করে আনেন প্রতিবেশীরা। মঙ্গলবার দুুপুরে প্রশাসনের লোকদের উপস্থিতিতে তাকে ঘর থেকে বাইরে আনা হয়

জামালপুর শহরতলীর হরিপুর থেকে বিদায় নিলেন ফাতেমা বেগম (৭০)। প্রশাসনের উদ্যোগে গাজীপুরের কাশিমপুরের একটি সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই হয়েছে তার। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাকে।

গত ২৪ এপ্রিল থেকে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফাতেমা বেগমকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। গত ২৫ এপ্রিল পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডি ডটকম-এ ‘যে জীবন বহন করাই দায়’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে ফাতেমা বেগমের একাকী, কষ্টময় জীবনের গল্প তুলে ধরা হয়েছিল। 

সংবাদ মাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত ফাতেমা বেগমের গল্প চোখে পড়ে উপজেলা প্রশাসনের। তারা দায়িত্ব নেন ফাতেমার। জোগান দেন খাবার, চিকিৎসা ও অর্থ। পাশাপাশি দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসে আশ্রয়ের প্রস্তাব। সবশেষ, প্রশাসনের উদ্যোগে গাজীপুরের কাশিমপুরের একটি সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে স্থান পেলেন স্বামী হারানো নিঃসন্তান ফাতেমা বেগম।

আরো পড়ুন:

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে বিদায়ের মুহূর্তে ফাতেমা বেগমকে ঘিরে ধরেন এলাকাবাসী। চোখের কোণে জমা অশ্রুর প্রতিটি ফোঁটায় ফুটে ওঠে ফাতেমা বেগমের প্রতি তাদের অগাধ ভালোবাসা, গভীর আবেগ আর হৃদয়ের শ্রদ্ধা।

সুখ-দুঃখে পাশে থাকা প্রতিবেশীদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছেন ফাতেমা 


প্রতিবেশী শফিকুল ইসলাম বলেন, “ফাতেমা খালা চলে যাওয়ায় আমাদের খুব খারাপ লাগছে। তবে, এক হিসাবে ভালোই লাগছে, কারণ তিনি এখন ভালো চিকিৎসা পাবেন। ভালোভাবে থাকতে পারবেন।”

কল্পনা বেগম নামে অপর এক প্রতিবেশী বলেন, “এতোদিন আমরা ফাতেমা চাচিকে দেখেছি। আমার সাধ্যে যতটুকু হয়ছে, ততটুকু দিয়েই তাকে সাহায্য করেছি। এখন তিনি চলে গেলেন। তার চলে যাওয়ায় আমাদের বুকটা ফেটে যাচ্ছে। তিনি ভালো থাকবেন, এটা চিন্তা করে নিজের কাছে ভালো লাগছে।”

কিছুটা খারাপ লাগলেও আশ্রয় কেন্দ্রে ফাতেমা বেগম যেন ভালো থাকেন এতটুকু আশায় বুক বেঁধেছেন প্রতিবেশীরা। ফাতেমা বেগমের শান্তিময় জীবনই তাদের কাছে পরম তৃপ্তির।

ফাতেমা বেগমকে গাজীপুরের কাশিমপুরে নিয়ে যান প্রশাসনের কর্মকর্তারা 


ফাতেমা বেগমের জন্য প্রশাসনের সব দপ্তরকে একসঙ্গে কাজে লাগিয়েছেন জামালপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিন্নাত শহীদ পিংকি। তিনি বলেন, “তাকে (ফাতেমা বেগম) নিয়ে প্রকাশিত সংবাদ নজরে আসার পরই আমি স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কথা বলি। তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। সমাজ সেবা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে তাকে গাজীপুরের কাশিমপুরের একটি সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠানোর ব্যবস্থা করি।” 

তিনি বলেন, “আমি এতেই সন্তুষ্ট যে, আমি আমার প্রয়োজনীয় সব দপ্তরকে কাজে লাগিয়ে ফাতেমা বেগমের চিকিৎসা এবং ভালোভাবে থাকার ব্যবস্থা করতে পেরেছি। যারা এই দুই বছর ফাতেমা বেগমকে দেখভাল করেছেন, তাদের সবাইকে আমি ধন্যবাদ জানাই।”

ঢাকা/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়