আবু সাঈদ হত্যার বিচার এই সরকারের আমলেই: আইন উপদেষ্টা
রংপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
বক্তব্য রাখছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল
জুলাই আন্দোলনে শহীদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ হত্যার বিচার চলতি অর্ন্তবর্তী সরকারের আমলেই সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরে রংপুরে জুলাই শহীদ দিবস ও আবু সাঈদের প্রথম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘‘আমরা বিচার চাই, তবে টাইম ফ্রেম দিলে তা বিচারিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ হতে পারে, তাই সরকার সতর্কভাবে এগুচ্ছে। তবে এই সরকারের সময়ে বিচার কাজ শেষ হবে।’’
আলোচনায় অংশ নিয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “শহীদ সাঈদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে রাষ্ট্রদর্শনে পরিবর্তন আনতে হবে। বিভাগ অনুসারে ন্যূনতম বরাদ্দ নিশ্চিত করা গেলে বৈষম্য দূর হবে।”
এর আগে সকালে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুর গ্রামে আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচি শুরু হয়। দিবসের শুরুতে সকালে আবু সাঈদের গ্রামে মানুষের ঢল নামে। হাতে ফুল নিয়ে জনগণ আবু সাঈদের কবরের পাশে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য দাঁড়িয়ে থাকে। এ সময় আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন ছেলের স্মৃতি স্মরণ করে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। জু
লাই আন্দোলনে অংশ নিয়ে আবু সাঈদ গুলিতে নিহত হয়। তার নিহতের পর আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ হয়।
এ সময় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও জনগণ আবু সাঈদের বিদেহী রুহের মাগফিরাতের মোনাজাতে অংশ নেয়।
এদিকে, সকাল সাড়ে ৯টায় বেরোবি প্রাঙ্গণ থেকে লাল-কালো ব্যানারে শোক শোভাযাত্রা শুরু হয়। এতে জুলাই যোদ্ধা, শহীদ পরিবার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভ, জাদুঘর ও ‘স্ট্রিট স্টাইক মেমোরি’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এরপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনাসভায় অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, শিক্ষা সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নেয়। মঞ্চে শহীদ পরিবারের সদস্যদের আসন দিয়ে অতিথিরা দর্শক সারিতে বসে আলোচনা শোনেন।
আলোচনাসভার আগে জুলাই আন্দোলনের বিভীষিকাময় মুহূর্ত নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। যা দেখে অনেকে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। শহীদ পরিবারের সদস্যরা সন্তান হত্যার বিচার দাবি করেন।
আলোচনা শেষে শহীদদের পরিবারের প্রতিনিধিদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন উপদেষ্টারা। অনুষ্ঠানে উপদেষ্টারা বলেন, ‘‘আন্দোলন ও ত্যাগ বৃথা যায় না। শহীদ সাঈদের আত্মদান জুলাই আন্দোলনের গতিপথ বদলে দেয়, যার ধারাবাহিকতায় সরকারের পতন ঘটে।’’
জুলাই যোদ্ধারা বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের বছর পেরিয়ে গেছে। আর নয় আশ্বাস। প্রয়োজনে আবারো রাস্তায় নামবেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা।
ঢাকা/আমিরুল/বকুল