ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

কুষ্টিয়ার ৪ আসনে বিএনপিতে বিরোধ, ফায়দা লুটতে তৎপর জামায়াত

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫  
কুষ্টিয়ার ৪ আসনে বিএনপিতে বিরোধ, ফায়দা লুটতে তৎপর জামায়াত

আগামী বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি হবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে কুষ্টিয়ার চারটি আসনে প্রাথমিক মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী।

তবে, চার আসনেই বিএনপির মনোনয়ন ঘিরে চলছে অস্থিরতা। বিক্ষোভ-সমাবেশের মাধ্যমে দলীয় প্রার্থীর প্রতি নিজেদের অনাস্থার জানান দিচ্ছেন নেতা-কর্মীদের একাংশ। মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের পক্ষে আন্দোলনে নেমেছেন তাদের অনুসারীরা। বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিরোধকে কাজে লাগিয়ে ভোটের মাঠে ফায়দা তুলতে তৎপর জামায়াত।

আরো পড়ুন:

কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর উপজেলা) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দলের উপজেলা কমিটির সভাপতি রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা। ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের আহ্বায়ক শরিফ উদ্দিন জুয়েলও এখানে মনোনয়নপ্রত্যাশী। প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণার পর তিনি দলের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানালেও এখনো সভা-সমাবেশের মাধ্যমে মাঠে সক্রিয় আছেন। ফলে, চাপের মুখে পড়েছেন বাচ্চু মোল্লা। 

জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী দৌলতপুর থানা কমিটির আমির বেলাল উদ্দিন। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হতে পারেন মুফতি আমিনুল ইসলাম। খেলাফত মজলিসের মনোনয়ন পেতে পারেন শরীফুল ইসলাম। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস থেকে আসাদুজ্জামান এবং গণঅধিকার পরিষদ থেকে শাহাবুল মাহমুদ প্রার্থী হতে পারেন। 

এ আসনে ভোট কেন্দ্র ১৩৫ টি। মোট ভোটার ৩ লাখ ৯৯ হাজার ৮৪৩ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৭৬১ ও নারী ১ লাখ ৯৯ হাজার ৮১ জন। দৌলতপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনে ১৪টি ইউনিয়ন আছে।

কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর ও ভেড়ামারা উপজেলা) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী। তবে, তাকে মেনে নিতে রাজি নন দলের আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক সংসদ সদস্য শহীদুল ইসলামের সমর্থকরা। এতে স্থানীয় বিএনপিতে বিভাজন দেখা দিয়েছে। রাগীব রউফ চৌধুরীর মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন শহীদুল ইসলামের অনুসারীরা। তাদের অভিযোগ, দল শহীদুলের দীর্ঘদিনের কাজের মূল্যায়ন করেনি। বিএনপির মিত্র হিসেবে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব ও সাবেক এমপি আহসান হাবীব লিংকনও এখানে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর। বিএনপি ও তার মিত্রদের দ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়ে তিনি ফায়দা তুলতে পারেন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। ইসলামী আন্দোলন থেকে মোহাম্মদ আলী, খেলাফত মজলিস থেকে মো. আব্দুল হামিদ এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে নয়ন আহমেদের প্রার্থী হওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। 

এ আসনে ভোট কেন্দ্র ১৭০ টি। মোট ভোটার ৪ লাখ ৭২ হাজার ৭২৭ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৩৬ হাজার ৯ এবং নারী ২ লাখ ৩৬ হাজার ৭১৫ জন। এ আসন মিরপুর ও ভেড়ামারা উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ আসনে ২টি পৌরসভা ও ১৯টি ইউনিয়ন আছে।

কুষ্টিয়া-৩ (সদর উপজেলা) আসনে বিএনপির প্রার্থী প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার। তবে, তার মনোনয়নে ক্ষুব্ধ আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক এমপি অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনের অনুসারীরা। জামায়াতের প্রার্থী ইসলামী বক্তা মুফতি আমির হামজা। গণঅধিকার পরিষদ থেকে আব্দুল খালেক, খেলাফত মজলিস থেকে সিরাজুল হক, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস থেকে আবদুল লতিফ খান এবং ইসলামী আন্দোলন থেকে আহম্মদ আলী প্রার্থী হতে পারেন। 

এ আসনে ভোট কেন্দ্র ১৪২টি। মোট ভোটার ৪ লাখ ৩৫ হাজার ৩৬০ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ১৪ হাজার ৯৭ এবং নারী ভোটার ২ লাখ ২১ হাজার ২৫৯ জন। কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনে ১টি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়ন আছে।

কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী ও খোকসা উপজেলা) আসনে বিএনপির প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী। তার মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র নুরুল ইসলাম আনসার প্রামাণিকের অনুসারীরা। জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ সাদী, কৃষক দলের হাফেজ মো. মঈন উদ্দিনও এই আসনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী। ফলে, তাদের অনুসারীরাও আসনটিতে প্রার্থী পরিবর্তন চান।

জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন। বিএনপির অন্তঃকোন্দলে এখানে জয়ের আশা দেখছেন জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। খেলাফত মজলিস থেকে আলী আশরাফ, ইসলামী আন্দোলন থেকে আনোয়ার হোসেন খান, গণঅধিকার পরিষদ থেকে শাকিল আহমেদ মনোনয়ন পেতে পারেন। 

এ আসনে ভোট কেন্দ্র ১৫২টি। মোট ভোটার ৪ লাখ ১৯ হাজার ৪০ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ১০ হাজার ২৮৭ ও নারী ২ লাখ ৮ হাজার ৭৪৮ জন। এ আসন কুমারখালী ও খোকসা উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ আসনে ২টি পৌরসভা ও ২০টি ইউনিয়ন আছে।

ঢাকা/কাঞ্চন/রফিক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়