ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

অতিরিক্ত রান্না হলেও বিশেষ খাবার পায় না রাবির অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা

রাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:২৩, ২৭ মার্চ ২০২৪   আপডেট: ১৬:৩০, ২৭ মার্চ ২০২৪
অতিরিক্ত রান্না হলেও বিশেষ খাবার পায় না রাবির অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা

২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হলগুলোতে দেওয়া হয় বিশেষ খাবার। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ৩০ টাকার বিনিময়ে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা এ খাবার পান। সিটের তুলনায় আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য শতাধিক প্যাকেট বেশি আয়োজন করা হয়। কিন্তু হিসেবে রাখা হয় না অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের। এবারও খাবারের এমন বণ্টন নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা সমালোচনা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্যাম্পাস ছুটির কারণে হলের অনেক শিক্ষার্থী আগেই বাড়ি চলে যায়। আবার হলের সিট সংখ্যার তুলনায় অতিরিক্ত খাবার প্যাকেট করা হয়। কিন্তু অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের এতে যুক্ত করা হয় না। এমনকি শেষ পর্যায়ে খাবার সংকট দেখা দেয়। তাহলে এই অতিরিক্ত খাবারগুলো যায় কোথায়? আর শুধু আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা কোনোভাবেই উচিত নয়।

হল সূত্রে জানা যায়, এবার শহিদ হবিবুর রহমান হলে ৭২৮ জন আবাসিক শিক্ষার্থীর বিপরীতে খাবার রান্না হয়েছে প্রায় ১০০০ প্যাকেট। শহিদ জিয়াউর রহমান হলের সিট সংখ্যা ৫৯৮, কিন্তু খাবার করা হয়েছে ৭০০ প্যাকেট। একই চিত্র দেখা গেছে মেয়েদের হলেও। মন্নুজান হলে ৭০০ সিটের বিপরীতে খাবার করা হয়েছে ৮৬০ জনের, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ৭০০ সিটের বিপরীতে রান্না হয়েছে ১০৩২ প্যাকেট। একইভাবে ১৭টি হলেই আবাসিক শিক্ষার্থীর তুলনায় শতাধিক খাবার প্যাকেট অতিরিক্ত করা হয়েছে।

এই অতিরিক্ত খাবার কে বা কারা নেয়, কোথায় যায়, এটা নিয়ে হল প্রশাসনের ভূমিকা কি- এসব নিয়ে শিক্ষার্থীদের মনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে এর আগে ২০২২ সালের ২৬ মার্চ আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করা হলে শহিদ ড. শামসুজ্জোহা হল থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শতাধিক খাবার প্যাকেট ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

আবাসিক শিক্ষার্থীর সংখ্যার চেয়ে বেশি খাবার রান্নার বিষয়ে একাধিক হলের প্রাধ্যক্ষদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে কেউ সাড়া দেননি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক একরামুল ইসলাম বলেন, ২৬ মার্চ আমাদের মহান স্বাধীনতা দিবস এবং জাতীয় দিবস। আমাদের ইতিহাসে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি দিন। এ দিবস উপলক্ষে আমরা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করেছি। এ খাবারটা শুধু যারা আবাসিক হলে অবস্থান করছে তাদের জন্যই। কারণ যারা হলের বাহিরে থাকে তাদের জগৎটা আলাদা এবং যারা হলে থাকে তাদের জগৎটাও আলাদা, দুটা ভিন্ন অবস্থা। আর খাবারটা এখানে বড় কথা না, আমাদের হলে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে খাবারটা খেলে নিজেদের মধ্যে একটা ভ্রাতৃত্ব তৈরি হবে। কিন্তু যারা বাইরে থাকে, তারা কিন্তু খাবারটা নিয়ে চলে যায়।

তিনি আরও বলেন, আমরা যখন হল সমাপনী করি তখন কিন্তু আবাসিক-অনাবাসিক সব শিক্ষার্থীর জন্যই খাবারের আয়োজন করা হয়। কারণ সেটা হলে দেওয়া হয় না। তাছাড়া আমাদের বরাদ্দেরও একটা বিষয় থাকে। এই বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থীর খাবারের জন্য আলাদা কোনো বরাদ্দ নেই। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বরাদ্দ থেকেই এটা সমন্বয় করা হয়।

হলগুলোতে সিট সংখ্যার চেয়ে বেশি রান্নার বিষয়ে তিনি বলেন, এটা হয়তো কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য কিছুটা অতিরিক্ত রান্না করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষরা ভালো বলতে পারবেন।

/শাকিবুল/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়