কুয়েটের ঘটনায় শিবির ও বৈষম্যবিরোধীদের দায়ী করল ছাত্রদল
ঢাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সংঘর্ষের ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও শিবিরের লোকজন দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
তিনি বলেন, “গত ২৮ ডিসেম্বর ঘোষিত কুয়েটের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মো. ওমর ফারুক ও তাদের কথিত কিছু নেতা এবং গুপ্ত সংগঠন শিবিরের লোকজন মিলেই ছাত্রদলের তিন সমর্থককে ধর ধর বলে তেড়ে যান। কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকলেও বৈষম্যবিরোধীরা নিয়মিত কর্মসূচি পালন করে আসছে। কুয়েট প্রশাসন এ নিয়ে কোন পদক্ষেপ নেয়নি।”
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, “যখন নবীন শিক্ষার্থীরা ছাত্রদলের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে, তখন আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতির অতি উৎসাহী চর্চা, প্রতিঘাতমূলক গুপ্ত কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ। শিবির ছাত্রলীগের মতো কুকর্ম করে তার দায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর চাপাচ্ছে।”
কুয়েটের এ ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ছাত্রদল আহতদের চিকিৎসার দাবির পাশাপাশি এ ঘটনার নিন্দা জানায়। ছাত্রদলের বিরুদ্ধে অনলাইন ও অফলাইনে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ভুক্তভোগীদের বয়ান অনুযায়ী তাদের ধাওয়া দিয়ে কুয়েট গেটের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। একটি দোকানে ভুক্তভোগীরা আশ্রয় নিলে দোকানদারকেও হেনস্তা করা হয়। বিনা উসকানিতে ছাত্রদলের ওপর হামলা চালানো হয়।”
তিনি আরো বলেন, “পাল্টাপাল্টি হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন শতাধিক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনতা। ছাত্রদলের পক্ষ থেকে সর্বপ্রথম আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করার সঙ্গে সঙ্গে এ সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এসব ন্যাক্কারজনক হামলা ও হামলার উস্কানিতে জড়িত যেই হোক না কেন, সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক তাদের বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।”
লিখিত বক্তব্যে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের পরে বাংলাদেশে যারা আত্মপ্রকাশ করতে ভয় পেয়েছে, সেই শিবিরের সন্ত্রাসীরা ছাত্রদলের উপর হামলা চালিয়েছে। তাদের নির্যাতনের মাত্রা এতই ছিল যে, আহত শিক্ষার্থীরা দোকানে আশ্রয় নিলে দোকানদারকেও কথিত বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী ও শিবিরের সন্ত্রাসীরা হামলা করে। পরে গ্রামবাসীর সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর ছাত্রদলের নামে এক ধরনের মব তৈরি করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কথিত শিক্ষার্থী ও শিবিরের সন্ত্রাসী প্রথমে হামলা করেছে। বৈষম্যবিরোধী কথিত শিক্ষার্থীরা যদি অংশগ্রহণ না করতো, তাহলে এরকম সংঘাত কখনো হত না। প্রকাশ্যে রাজনীতি করার অধিকার সবার আছে। কুয়েটে ছাত্রদল প্রকাশ্যে রাজনীতি করতে চাই।”
ছাত্রদল সম্পাদক বলেন, “কুয়েটে শিবিরের কমিটি আছে কিনা শিক্ষার্থীরা তা জানে না। কুয়েটে ছাত্রশিবিরের কমিটি নেই, এটা শিবিরকে নিশ্চিত করতে হবে। কমিটি থাকলে তাদের তা প্রকাশ্যে আনতে হবে। কুয়েটে গতকাল যে ঘটনা ঘটেছে তা কুয়েটর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশৃঙ্খল মব, যার নেতৃত্ব দিয়েছে কুয়েটের বৈষম্যবিরোধী আহ্বায়ক ওমর ফারক এবং কেন্দ্র থেকে মনিটরিং করেছে হাসনাত আবদুল্লাহ।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জাম শিপন, সহ সভাপতি আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক প্রমুখ।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী