ঢাকা     বুধবার   ০৮ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানের স্বীকৃতি দিতে বিশ্বব্যাংকের প্রতি আহ্বান

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:০৪, ২১ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ২২:১৮, ২১ অক্টোবর ২০২০
প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানের স্বীকৃতি দিতে বিশ্বব্যাংকের প্রতি আহ্বান

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল (ফাইল ফটো)

বাংলাদেশসহ বিশ্বের অর্থনীতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানের স্বীকৃতি দিতে বিশ্বব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বুধবার (২১ অক্টোবর) বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বার্ষিক সভার অংশ হিসেবে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সভায় অংশ নিয়ে এ আহ্বান জানান অর্থমন্ত্রী।

ভার্চুয়াল সভায় আইএমফের দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্ট উয়িং শেফার, আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী আবদুল হাদী আরগান্ধিওয়াল, ভুটানের  অর্থমন্ত্রী লায়নপো নামগে শেরিং, ভারতের নারী ও শিশু উন্নয়নমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, মালদ্বীপের অর্থমন্ত্রী ইব্রাহিম আমির, নেপালের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. যুবরাজ খাতিওয়াদা , পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহাকারী এবং দারিদ্র্য দমন ও সামাজিক সুরক্ষাবিষয়ক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ড. সানিয়া নিশতার  এবং শ্রীলংকার শিক্ষামন্ত্রী অধ্যাপক জিএল পিরিস অংশ নেন।

মুস্তফা কামাল বলেন, ‘বাংলাদেশের আছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব এবং দেশে-বিদেশে কঠোর পরিশ্রম করা নাগরিক। বিশ্বব্যাংক এবং অন্যরা অনুমান করেছিল যে, করোনার কারণে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী রেমিট্যান্সের পরিমাণ কমবে। আমি আনন্দের সঙ্গে সবাইকে অবগত করতে চাই যে, বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ সব সময় ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখিয়েছে এবং সম্প্রতি এটি ত্বরান্বিত হয়েছে। আমরা ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ১৮.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছি। চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ৬.৭১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪৯ শতাংশ বেশি। বিশ্বব্যাপী প্রায় ১১.৬ মিলিয়ন বাংলাদেশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করে। মালয়েশিয়ার এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, মালয়েশিয়ায় ব্যবস্থাপক পর্যায়ে যেসব বিদেশি আছেন, তাদের ৩৭ শতাংশই বাংলাদেশি।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কারণে অভিবাসী শ্রমিকদের নিয়ে উদ্বেগ উপেক্ষা করা যায় না। গত ১ এপ্রিল থেকে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে ১ লাখ ৯৫ হাজার ৬৯৮ জন শ্রমিক দেশে ফিরেছেন। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে জুন সময়কালে কোনো নতুন শ্রমিক বিদেশে যেতে পারেননি। যদিও বিশ্বব্যাপী মোট প্রবাসী বাংলাদেশির তুলনায় এটি বড় সংখ্যা নয়। তারপরও চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরের ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত দেশি কর্মসংস্থানের মোট সংখ্যা ২ লাখ ৮৪ হাজার, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৬ শতাংশ বেশি। সাধারণত প্রতি মাসে প্রায় ৬০ হাজার কর্মী বিদেশে যান। আমাদের সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে কর্মীদেরকে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে চাকরি নিয়ে বিদেশে পাঠাতে সহায়তা করে আসছে। আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি যে, ইতোমধ্যে আমাদের প্রবাসী কর্মীরা বিদেশে ফিরে কাজ শুরু করেছেন।’

তিনি জানান, বাংলাদেশ সরকার বিশেষ সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির ব্যবস্থা করেছে। এপ্রিল এবং মে মাসে কোভিড-১৯ ছুটির সময়ে বিদেশগামীদের জন্য ১.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছিল। বিদেশে চাকরি হারানো কর্মীরা ৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেটের পুনর্বাসন কর্মসূচির জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছেন। তাদেরকে অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষা পরিকল্পনাতেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। চলতি অর্থবছরে ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ভবিষ্যতের সম্ভাব্য প্রবাসী শ্রমিকদের লক্ষ্য করে একটি নির্দিষ্ট সামাজিক সুরক্ষার জন্য প্রায় ২৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ‘কর্মসংস্থান সৃষ্টি কর্মসূচি’ শীর্ষক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে-বিদেশে বাংলাদেশি কর্মীরা অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। আমি অত্যন্ত খুশি হবো, যদি বিশ্ব ও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এ অবদান বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে স্বীকৃতি পায়। ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং পূর্ব এশিয়াসহ বিশ্বের প্রতিটি বড় শহরে কর্মরত এসব কর্মীর অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টার প্রশংসা কেবল আমাদের মানুষকে নয়, বিশ্বব্যাপী সব প্রবাসী কর্মীদের উৎসাহিত করবে।’

ঢাকা/হাসনাত/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়