ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

‘মালিক-শ্রমিকদের তোষামোদিতে ঈদে বাড়ছে ভাড়া ও দুর্ঘটনা’

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৪০, ১০ জুন ২০২৪  
‘মালিক-শ্রমিকদের তোষামোদিতে ঈদে বাড়ছে ভাড়া ও দুর্ঘটনা’

সরকার পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতাদের তোষামোদি করার কারণে প্রতি ঈদে ভাড়া নৈরাজ্য ও সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে। এজন্য আসছে ঈদুল আযহায় যাত্রী হয়রানি, ভাড়া নৈরাজ্য ও সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

সোমবার (১০ জুন) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে ‘ঈদ যাত্রায় ভাড়া নৈরাজ্য ও সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধিতে নাগরিক সমাজের উদ্বেগ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব বিষয় তুলে ধরা হয়। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

সভার ধারণাপত্রে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, সরকার প্রতিবছর ঈদে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিলেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের মুনাফার অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে ঈদের প্রস্তুতি সভা করেন। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে নিয়ন্ত্রক সংস্থা, পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোকে দ্বায়িত্ব দিলেও তারা সবাই মিলেমিশে ভাড়া নৈরাজ্য চালান। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও ফিটনেট বিহীন যানবাহন চলাচল বন্ধে গঠিত মনিটরিং কমিটিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পাশাপাশি পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা দ্বায়িত্বে থাকেন। বাস্তবতা হলো ৯০ শতাংশের বেশি যাত্রীকে প্রতি ঈদে বাড়ি যেতে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ বেশি ভাড়া দিতে হয়। এমনকি বিআরটিএ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ না করে যাত্রীরা স্বল্প দূরত্বে গেলেও তাদের রুট পারমিটের শেষ গন্তব্য পযর্ন্ত ভাড়া দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে থাকেন।

তিনি বলেন, যারা সড়কে চাঁদাবাজিতে জড়িত, তাদের ওপর ঈদ যাত্রায় সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধের দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়। ফলে চাঁদাবাজরাই চাঁদাবাজি বন্ধের সিদ্ধান্ত আটকে দেয়। লক্কড়-ঝক্কড় বাস চালাতে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করেন, তাদের ওপর ঈদ যাত্রায় লক্কড়-ঝক্কড় বাস চলাচল বন্ধের দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রতি ঈদে ফিটনেস বিহীন বাসের ছাদে, খোলা ট্রাকে, পণ্যবাহী পরিবহনে যাত্রী বহন কঠোরভাবে নিষিদ্বের ঘোষণা বিভিন্ন পক্ষ থেকে দেওয়া হয়। কিন্তু পরিবহন সংকট ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কারণে নিম্ন আয়ের লোকজনের এসব পরিবহনে যাতায়াত ঠেকানো যায় না। আবার এসব পরিবহন যাদের বন্ধ করার কথা তারা জায়গায় জায়গায় এসব যানবাহন আটকে উৎকোচ নেয়।

তিনি আরও বলেন, দেশের সড়ক-মহাসড়কে নসিমন-করিমন, ভটভটি, অটোরিক্সা চলাচলে উপকারভোগীদের উপর এসব যানবাহন চলাচল বন্ধের দ্বায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। এতে করে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বরং সড়ক দুর্ঘটনা, পরিবহনে বিশৃঙ্খলায় প্রাণহানি, মানুষের যাতায়াতে হয়রানি ও ভাড়া নৈরাজ্য দফায় দফায় বেড়েই চলছে। লক্ষকোটি টাকা খরচ করে সড়কে অবকাটামো উন্নত করলেও পরিবহনে বিশৃঙ্খলা ও সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধে সরকারের ইমেজ চরমভাবে প্রশ্নবিদ্ধ।

এসময় আরও বক্তব্য দেন, বিশিষ্ট সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, বিশিষ্ট আইনজীবি আবদুল্লাহ আল হাসান সাকিব, যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি তাওহিদুল হক লিটন, যুগ্মমহাসচিব এম.মনিরুল হক প্রমুখ।

ঢাকা/মামুন/মেহেদী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়