ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

দেশে ফিরে দেখি বাবা নেই: ববি

রাহাত সাইফুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:০৪, ২১ জুন ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
দেশে ফিরে দেখি বাবা নেই: ববি

বাবার সঙ্গে ইয়ামিন হক ববি

বাবার প্রতি সন্তানের ভালোবাসা কিংবা সন্তানের প্রতি বাবার ভালোবাসা প্রকাশের বিষয়টি চিরন্তন। পিতা-সন্তানের ভালোবাসা প্রকাশের বিশেষ কোনো দিনক্ষণ নেই। তারপরও যুগের পরিবর্তনে প্রকাশ ভঙ্গিতে এসেছে পরিবর্তন। এখন বাবার জন্য বছরের একটা দিন রেখে দিতে চান। এজন্য গত শতকের প্রথম দশক থেকেই শুরু হয় বাবা দিবসের প্রচলন।

প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রোববার বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে বাবা দিবস পালন করা হয়। আজ (২১ জুন) বিশ্ব বাবা দিবস। বিশেষ এই দিনটি অন্যদের মতো রুপালি জগতের তারকাদের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ। চিত্রনায়িকা ইয়ামিন হক ববি গত বছরের ৪ এপ্রিল তার বাবাকে হারিয়েছেন।

বাবাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে রাইজিংবিডিকে ববি বলেন, ‌আমাদের বাসার ছাদে অনেক ফলের গাছ রয়েছে। এসব গাছের ফল সবার আগে বাবাকে খাওয়াতে আমার ভালো লাগতো। আমি সব সময় তাই চাইতাম। বাবা যেন আগে স্বাদ নেন। বাবার সঙ্গে ছাদে ঘুরতে ভালো লাগতো। বাবা সবসময় আমাদের এলাকার মসজিদের পাশের কিছু দরিদ্র শিশুদের আমাদের গাছের ফল দিতে পছন্দ করতেন। প্রতি বছর বাবা এই কাজটি করতেন। বাবা সবসময় আমার পছন্দের গুরত্ব দিতেন। আমি কিছু পছন্দ করলে তা কিনে দিতেন-ই। কেন জানি বাবা আমাকে বেশি ভালোবাসতেন।

স্কুল জীবনে বাবার সঙ্গে সিনেমা দেখার স্মৃতি রোমন্থন করে ববি বলেন, স্কুল থেকে এসে বাসার কাজ শেষ করেই বাবার সঙ্গে সিনেমা দেখতে বসে যেতাম। ছোট বেলায় একবার বাবা-মা ও আমাদের পরিবারের সবাই সিনেমা হলে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলাম। হুমায়ূন আহমেদ স্যারের একটা সিনেমা দেখেছিলাম। এর পর আর বাবার সঙ্গে হলে গিয়ে সিনেমা দেখা হয়নি। কারণ তারপর বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন।

চলচ্চিত্রে কাজের ক্ষেত্রে বাবার ভূমিকা কেমন ছিলো? এ প্রশ্নের উত্তরে ববি বলেন, সিনেমায় আমি কাজ করবো, তা পরিবারের কেউ-ই মেনে নিতে পারেননি। এ নিয়ে একদিন বাসার সবাই বসেন। বাবাও চাইতেন আমি ডাক্তার হই। আমি যেহতেু সিনেমা নিয়ে অনেক পরিশ্রম করছি। বাবা বুঝতেছিলেন এটা আমার প্যাশন। সেই দিন একমাত্র বাবা কিছুক্ষণ নীরব থেকে বলেছিলে, ও যেহেতু করতে চায় ওকে করতে দাও। বাবাই আমাকে চলচ্চিত্রে কাজের সম্মতি দেন। বাবা কখনো আমার কোন চাওয়াতে না করতেন না। বাবা আমার কষ্টটা বুঝতেন।

ববির বাবা যখন মারা যান তখন ববি দেশে ছিলেন না। বাবার সঙ্গে শেষ কথার স্মৃতি হাতরে ববি বলেন, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আফসোস আমার থেকেই যাবে। কলকাতায় ‘রক্তমুখী নীলা’ সিনেমার শুটিং করতে গিয়েছিলাম। পয়লা এপ্রিল বাবার জন্মদিন ছিলো। বাবাকে ফোনে উইস করেছি। কেক কেটেছি। এটাই বাবার সঙ্গে শেষ কথা। ৪ এপ্রিল খবর পাই বাবা অসুস্থ। দেশে ফিরে দেখি বাবা আর নেই, খুব আফসোস হয়। বাবার শেষ সময়টায় থাকতে পারিনি।

বাবাকে মনে পড়লেই চোখের পাতা ভিজে ওঠে ববির। এ অভিনেত্রী বলেন, বাবা চলে যাওয়া মানে আমার অর্ধেক চলে গিয়েছে। আমার হার্টের অর্ধেক ওপারে চলে গিয়েছে। বাবা চলে যাওয়ার পর বাসার ছাদেও খুব একটা যাওয়া হয় না। ছাদে গেলেই মন খারাপ হয়ে যায়। চোখে জল চলে আসে। বাবা সন্তানের কাছে কি সেটা একমাত্র যার বাবা নেই সেই বুঝেন। প্রতিটা মুহূর্তে বাবাকে মিস করি। বাবাহীন সবকিছুই আমার অসম্পূর্ণ। বাবার জন্য সব সময় দোয়া করি, বাবা যেন ওপারে ভালো থাকেন।

 

ঢাকা/রাহাত সাইফুল/শান্ত

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ