ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

নাটোরে ‘বাংলার মিস্টার বিন’

এম এম আরিফুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩৫, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৪:০৭, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১

মেরুন রঙের কোট পরা এক ব্যক্তি অদ্ভুত অদ্ভুত কাণ্ড ঘটান। সেসব কাণ্ড দেখতে তার পেছনে পেছনে ঘুরছেন শিশু থেকে বৃদ্ধরাও। তার কর্মকাণ্ড দেখে হাসিতে লুটিয়ে পড়ছেন শিশুরা। তার সঙ্গে সেলফি তুলছেন সব বয়সী মানুষ। হাতে ছোট একটি পান্ডা পুতুল— তার সঙ্গেই ভাব জমিয়ে গল্প জুড়েছেন। নাটোরের উত্তরা গণভবন প্রাঙ্গণ ঘুরে বেড়াচ্ছেন মেরুন রঙের কোট পরা ব‌্যক্তিটি। ভিড় ঠেলে সামনে গিয়ে দেখা যায়, জনপ্রিয় কমেডিয়ান ‘বাংলার মিস্টার বিন’।

তবে প্রখ‌্যাত বৃটিশ কমেডিয়ান মিস্টার বিন নন তিনি। বাংলার এই মিস্টার বিন গিয়েছিলেন নাটোরে। তার নাম রাশেদ শিকদার। তিনি একজন জাদুশিল্পী। কিন্তু চেহারা, গড়ন, হাসি ও আচরণে রাশেদ শিকদার হয়ে উঠেছেন ‘মিস্টার বিন’। বাংলাদেশ টেলিভিশনে নিয়মিত জাদু প্রদর্শন করেন। অনেকে তাকে ম্যাজিশিয়ান রাশেদ নামেই চেনেন।

রাশেদের জাদুর হাতেখড়ি ২০১০ সালে জাদুশিল্পী প্রিন্স আকাশের হাত ধরে। তারপর অনেকের কাছেই জাদু শিখেছেন তিনি। ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) জাদু বিষয়ক ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘চোখের পলকে’ অনুষ্ঠানে জাদু দেখান তিনি। এরপর আমিনপুর গ্রাম থেকে সারাদেশে নাম ছড়িয়ে পড়ে ম্যাজিশিয়ান রাশেদ শিকদার নামে।

বাংলার মিস্টার বিন হওয়ার গল্প শুনিয়েছেন রাশেদ। তিনি বলেন, ‘মি. বিনকে অনুকরণের কথা কখনো আমার মাথায় ছিল না। আমার শ্রদ্ধেয় জাদুশিল্পী এম রহমান আমাকে একদিন বললেন—রাশেদ, তুমি তো জাদুশিল্পী। কিন্তু তোমার চেহারার সাথে মি. বিনের চেহারার মিল আছে। তুমি যদি চেষ্টা করো, তাহলে বাংলার মি. বিন হতে পারবে। তারপর থেকেই চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে এটাকে অনুকরণ বলবো না। তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে গত এক বছর ধরে আমি তাকে অনুসরণ করছি।’

ছোটবেলায় রাশেদকে দেখে অনেকে মিস্টার বিন বলতো। আর এতে রেগে যেতেন তিনি। স্মৃতিচারণ করে রাশেদ বলেন, ‘আমি বাংলার মি. বিন হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করার আগে থেকেই লোকে বলতো, আপনাকে দেখতে মি. বিনের মতো লাগে। যারা আমার সম্পর্কে কিছুই জানেন না; তারাও প্রথম দেখাতে মি. বিন বলে আখ্যায়িত করতেন। তবে ছোটবেলায় কেউ যদি আমায় মি. বিন বলতো, আমার খুব রাগ হতো। এখন সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই, বিশ্বখ‌্যাত এমন একজন মানুষের চেহারার সাথে আমার চেহারার মিল রেখেছেন।’

গত ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে রাশেদ ঘুরে বেড়িয়েছেন নাটোরের উত্তরাগণ ভবন, মিনিক্সবাজার খ্যাত হালতিবিল। এ সময় নৌকা ভ্রমণও করেন তিনি। তার সফরসঙ্গী হয়েছিলেন তারই চাচাতো ভাই ছবিরুল ইসলাম। একদিন নাটারে কাটিয়ে নিজ জেলা পাবনায় ফিরে যান রাশেদ। তাকে দেখে মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় মানুষ।

রাশেদ শিকদারের জন্ম ১৯৯৮ সালের ৫ অক্টোবর পাবনা জেলার আমিনপুর উপজেলার (বেড়া) খানপুরা গ্রামে। বাবা মো. আব্দুল মান্নান শিকদার ও মা মোছা. আসমা বেগম। ২০০৮ সালে পাইকান্দী খানপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক, ২০১৪ সালে পাবনার আমিনপুর কাজিরহাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ২০১৮ সালে নাটোরের দিঘাপতিয়া এম কে কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। বর্তমান পাবনার সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। রাশেদ সাধারণভাবে জীবনযাপন করতে চান। সমাজের নানাবিধ কল্যাণকর কাজ করার স্বপ্ন দেখেন তিনি।

নাটোর/শান্ত

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়