‘ফ্যাসিস্ট সরাতে গিয়ে নিজেই ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার চান্স থাকে’
জ্যেষ্ঠ বিনোদন প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর ছোটপর্দার শিল্পীরা বিভিন্ন দাবিতে সংস্কারের ডাক দিয়েছেন। তারা অভিনয়শিল্পী সংঘের সংস্কার চেয়ে আল্টিমেটাম দিয়ে সভা-সমাবেশ করছেন। সংস্কার চাওয়া শিল্পীদের মধ্যে রয়েছেন তরুণ অভিনেতা খায়রুল বাসার। বিষয়টি নিয়ে তিনি ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
খায়রুল বাসার লিখেছেন: ‘অভিনয়টা একটা শিল্প। এটা একটা পেশা। সকলের পেশাই সম্মানের। কিন্তু এটি পেশা হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এখনও আসেনি। … পেশাদার হওয়া শিখতে হবে আমাদের। আমাদের অরাজনৈতিক হতে শিখতে হবে। একটা শিল্পী সংগঠন কখনও পলিটিক্যাল পাপেট হতে পারে না। অভিনয়শিল্পীদের অনেক ধরনের ক্রাইসিস আছে। তাদের স্বার্থ, মর্যাদা এবং অধিকার নিশ্চিত করা তখনই সম্ভব যখন সকল পর্দার অভিনয়শিল্পীরা একটি মাত্র সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত হবে। আর তখনই পুরো সিস্টেম পুনর্গঠন করা সম্ভব।’
রিফর্মেশন একটা পজিটিভ আইডিয়া। একটা মতাদর্শ। পারস্পরিক সম্মান চর্চার মাধ্যমে এর শুরু- উল্লেখ করে এই অভিনেতা আরো লিখেছেন: এতদিন যারা ছিল তারা কেউ থাকবে না, একে বাদ দাও, ওর সঙ্গে কাজ করবো না এমন নয়। এটা যার সঙ্গে যার হবে সেটা ব্যক্তিগত। অভিনয়শিল্পীরা অভিনয় করবেন। এটাই তো কাজ। আমরা যে পরিকল্পনা নিয়েছি তাতে অভিনয়শিল্পীদের সংগঠন হবে বাংলাদেশের একমাত্র কাস্টিং হাব। যেখানে দেশের সকল স্ক্রিন অ্যাক্টররা লিস্টেড থাকবেন তাদের স্কিল এবং ক্যাপাবিলিটি অনুযায়ী। অভিনয়শিল্পীরা নিশ্চিন্তে ক্যারেক্টারের প্রিপারেশন নেবেন, সুন্দর পরিবেশে, নিরাপদভাবে শুটিং করবেন।’
‘রিফর্মেশন মানেই একদল খেয়ে গেল আরেক দল এসে খেতে বসবে এমন নয়। ফ্যাসিস্ট সরাতে গিয়ে নিজেই ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার চান্স বেশি থাকে- এই চর্চা বন্ধ হোক। সিস্টেমের রিফর্মেশনের পাশাপাশি আমরা নিজেদেরও রিফর্মেশন চাচ্ছি। সেল্ফ রিফর্মেশন যেটাকে বলে। অভিনয়শিল্পীরা তো হবে শান্তির দূত, ধ্বংসের দূত নয়। কারণ তারা শিল্পী। শিল্পীদের সার্বজনীন হতে হয়।’
তরুণ এই অভিনেতা লিখেছেন, ‘সারা দেশে যেভাবে একই রকম সিচুয়েশনের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে তার একটাই কারণ। সেটা হলো গত ৫৩ বছর ধরে দেশে শুধু প্রতিশোধ, প্রতিহিংসা এবং ঘৃণার চর্চা হয়েছে। যদি সত্যিই একটা সুন্দর দেশ গড়তে চাই আমরা তাহলে সবাই মিলে সত্য, সুন্দর আর ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সম্মানের চর্চা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমরা এই চর্চাটাই করতে চাই।’
‘আমরা এমন একটা সংগঠন গড়তে চাই যেটা সকল অভিনয়শিল্পীদের জন্য হবে। যেখানে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। এটা একসময় ছিলও এবং এটাই থাকার কথা। এটা ধীরে ধীরে পলিটিক্যাল ইন্টেনশনে নষ্ট হয়েছে। যেমন নষ্ট হয়েছে বটতলার নিচে বাউল গান, পালা গান বা পুথি পাঠ।’ ।
রাহাত//