ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বিভাজন নয়, ঐক্যের চেতনায় শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের আহ্বান: ঢাবি উপাচার্য

ঢাবি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৪৭, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫   আপডেট: ১৮:৪৭, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
বিভাজন নয়, ঐক্যের চেতনায় শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের আহ্বান: ঢাবি উপাচার্য

শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতির ঐক্য রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। তিনি বলেন, দেশ বর্তমানে একটি কঠিন ও ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এ সময় জাতির ঐক্য ধরে রাখা অত্যন্ত জরুরি।  রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

উপাচার্য বলেন, “শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস জাতির জন্য শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও মমতার দিন। এক গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, চিন্তাবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। তাদের আত্মত্যাগ ইতিহাসে চির ভাস্বর হয়ে আছে।”

আরো পড়ুন:

তিনি আরো বলেন, “যুগে যুগে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ এ জাতিকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে অনুপ্রাণিত করেছে। সেই ধারাবাহিকতায় জাতি ১৯৯০ ও ২০২৪ সালের গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়েছে।”

শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, “১৯৫২, ১৯৬৯, ১৯৭১, ১৯৯০ ও ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক ঘটনাগুলো পরস্পর বিরোধী নয়; বরং এসব ঘটনাই বাংলাদেশের জাতীয় সত্তা ও ইতিহাস নির্মাণ করেছে। এসব ঘটনাকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে বিভাজন সৃষ্টির রাজনৈতিক অপচেষ্টা সম্পর্কে জাতিকে সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”
শহিদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ শুধু অতীতের স্মৃতি নয়, এটি আমাদের জাতীয় পরিচয়, ঐক্য ও অস্তিত্বের ভিত্তি। এই আত্মত্যাগ যতদিন স্মৃতিতে জীবিত থাকবে, ততদিন জাতি হিসেবে আমাদের ঐক্য অটুট থাকবে।  শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস কেবল আনুষ্ঠানিক কোনো দিবস নয়; এটি আত্মত্যাগের দায় স্বীকার করার উপলক্ষ। বর্তমান সংকটময় সময়ে শিক্ষক, চিকিৎসক, সাংবাদিকসহ সবাই নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের মাধ্যমেই শহিদদের প্রতি ঋণের কিছুটা হলেও শোধ করতে পারে, বলেও জানান তিনি।

শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচিতে সর্বস্তরের মানুষের আরো বেশি অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, “এসব আয়োজন স্মরণের পাশাপাশি দায়িত্ব পালনের একটি সম্মিলিত অঙ্গীকার।”

আলোচনা সভায় উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শহিদ গিয়াস উদ্দিন আহমদের ছোট বোন অধ্যাপক সাজেদা বানু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদু, ডাকসুর ভিপি আবু সাদিক কায়েমসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ।

এ সময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, ইনস্টিটিউট পরিচালক, প্রক্টর, প্রভোস্ট, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। সভার শুরুতে শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে উপাচার্য ভবনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোতে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণের কবরস্থান, জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণের স্মৃতিসৌধ, বিভিন্ন আবাসিক এলাকার স্মৃতিসৌধ এবং মিরপুর ও রায়ের বাজার শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ ও বিভিন্ন হল মসজিদে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল এবং বিভিন্ন উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।

ঢাকা/সৌরভ/জান্নাত

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়