ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ডিজিটাল সখিপুরের তরুণ স্বপ্নদ্রষ্টা কনক

সৌরভ শাহরিয়ার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০০, ১ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ১৫:১৪, ১ অক্টোবর ২০২০
ডিজিটাল সখিপুরের তরুণ স্বপ্নদ্রষ্টা কনক

‘মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়’ কথাটির যথার্থতা প্রমাণ করতে কাজ করছেন টাঙ্গাইলের এক তরুণ। 

১৯৯৮ সালের ৭ জুন টাঙ্গাইল জেলার সখিপুরে জন্ম নিয়েছেন তিনি। কে জানতো এই ছোট্ট শিশুটিই একদিন হয়ে উঠবেন স্বপ্নের সখিপুর গঠনের কারিগর! বলছিলাম কামরুজ্জামান কনকের কথা। তিনি ‘ডিজিটাল সখিপুর’ অ্যাপের প্রতিষ্ঠাতা। 

কামরুজ্জামান কনক পড়াশোনা করছেন স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। শিক্ষার্থী অবস্থায় যুক্ত আছেন বেশকিছু সমাজসেবামূলক সংগঠনের সঙ্গে। নিজের ক্যারিয়ারের পথকে সুদৃঢ় করতে কাজ করছেন বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানেও। 

তারুণ্যনির্ভর প্রতিষ্ঠান এক্সিলেন্স বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত আছেন হেড অব ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট হিসেবে, বিল্ডিং এক্সিস বাংলাদেশের একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এই তরুণ। 

মানুষ মানুষের জন্য এই কথাটি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন। কনক তার নিজ এলাকার রক্তদান সংগঠন ‘সখিপুর ব্লাড ডোনেশন ক্লাব’-এর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।  

নিজের জন্মস্থান নিয়ে প্রতিটি মানুষের স্বপ্ন থাকে, কিন্তু সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে ক’জনই বা কাজ করেন। ডিজিটাল বাংলাদেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যেন নিজের অঞ্চল এগিয়ে থাকে, ঘরে বসে যেন নিজের আপনজন তথা এলাকার মানুষজন তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা গ্রহণ করতে পারেন, এসব চিন্তা থেকে এই তরুণ তৈরি করেন ‘ডিজিটাল সখিপুর অ্যাপ’। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, কৃষি ব্যবস্থাপনা, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, পোস্ট অফিস, পর্যটন ও ঐতিহ্য, সরকারি অফিস, জাতীয় সংসদে সখিপুর, বর্তমান জনপ্রতিনিধি, গুণীজন, ডিজিটাল সেন্টার, ব্যবসা বাণিজ্যে সখিপুর, যোগাযোগ ব্যাবস্থায় সখিপুর, সখিপুট উপজেলা প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবী পেশাজীবী সংগঠন, ব্যাংক, মোবাইল ব্যংকিং, এনজিও, উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা এসব  তথ্য এবং সেবা গ্রহণ করতে পারবে সখিপুরের প্রতিটি মানুষ এই একটি মাত্র অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে। নিজের এলাকার মানুষের কথা চিন্তা করে প্রতিটি সেবা জনমানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে এই যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন স্বপ্নদ্রষ্টা কনক।

রক্তদান, রক্ত সংগ্রহ থেকে শুরু করে সমাজসেবামূলক কোনো কাজে পিছিয়ে নেই এই তরুণ। জনসাধারণের নানা সমস্যায় সবসময় দিয়েছেন নিজের সেরাটা, প্রমাণ করেছেন মানুষ মানুষের জন্য জীবন জীবনের জন্য।

কনক বলেন, ‘আমি পরিবর্তনে বিশ্বাসী, আর সেটা শুরু হতে হবে নিজ থেকেই। আমি মনে করি, প্রতিটি মানুষ যদি অন্তত তার আশেপাশের মানুষগুলো নিয়ে একটু ভাবেন, যেমন আমি একটি অ্যাপের মাধ্যমে সব ধরনের গ্রাহক সেবা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষুদ্র চেষ্টা করছি, ব্যক্তি উদ্যোগে তেমনি সবার নতুন কোনো পরিবর্তন নিয়ে ভাবা উচিৎ। ভবিষ্যতে এমন একটি অ্যাপ দেশজুড়ে সব ধরনের গ্রাহকসেবা পৌঁছে দেবে মানুষের দোরগোড়ায় আশা রাখি। আর এভাবেই গড়ে উঠবে আধুনিক দেশ।’

জনমানুষের জন্য কামরুজ্জামান কনকের এমন উদ্যোগ মাইলফলক হয়ে থাকবে। বর্তমান তরুণ প্রজন্মের জন্য যারা স্বপ্ন দেখেন একটি ডিজিটাল, স্বনির্ভর সোনার বাংলা গড়ার, তাদের মধ্যে কনক অন্যতম। যতদিন এমন স্বপ্নদ্রষ্টা তরুণদের হাতে দেশ, তত দিন পথ হারাবে না এই সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ। 

লেখক: শিক্ষার্থী, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

পবিপ্রবি/মাহি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়