ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

শেষ গান রেকর্ডের কয়েক ঘণ্টা পরই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন

শাহ মতিন টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:২০, ৩১ জুলাই ২০২১   আপডেট: ১১:২২, ৩১ জুলাই ২০২১
শেষ গান রেকর্ডের কয়েক ঘণ্টা পরই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন

তার শেষ গানটি ছিল ‘শ্যাম ফির কিউ উদাস হ্যায় দোস্ত’। গানটি ‘আস পাস’ ছবির জন্য গেয়েছিলেন তিনি।  গানটি রেকর্ড করার কয়েক ঘণ্টা পরই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন এই সংগীত শিল্পী।

উপমহাদেশের অমর সংগীত শিল্পী মোহাম্মদ রফির ৪২তম প্রয়াণ দিবস আজ। ১৯৮০ সালের ৩১ জুলাই তিনি প্রয়াত হন।

হিন্দি সিনেমার একটা সময় গান মানেই ছিল মোহাম্মদ রফি’র গান। কোনো একটা গান নয়, তার সব গানই শ্রেষ্ঠ। ৩৫ বছরের সংগীত জীবনে ২৬ হাজারের মতো গান গেয়ে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লিখিয়েছেন।

ছাপ্পান্ন বছরের জীবনে হিন্দি ছবির প্লেব্যাক গায়ক হিসেবে এখনো সেরার শিরোপাটি তারই।

উপমহাদেশ সেরা এই কিংবদন্তী প্লে-ব্যাক গায়ক ১৯২৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর অমৃতসরে জন্মগ্রহণ করেন ।

১২/১৩ বছর বয়সেই কিশোর রফি সে সময়ের সুপারহিট গায়ক ও নায়ক সায়গলের দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হয়েছিলেন।

ঘটনাটি এ রকম- লাহোরের এক স্টেজ প্রোগ্রামে গান গাইবেন সায়গল। হিন্দি ছবির নায়ক-গায়ককে কাছ থেকে দেখতে, তার গান শুনতে লোকে লোকারণ্য। সবাই অপেক্ষায় শুরু হবে কখন? অনুষ্ঠান শুরু হতেই বিদ্যুৎ বিভ্রাট। মাইক অচল। অনুষ্ঠান পণ্ড হওয়ার উপক্রম। হাজার অনুরোধেও সায়গল গাইছেন না। তাই লোকজনকে বসিয়ে রাখার জন্য ডাক পড়ল উপস্থিত স্থানীয় শিল্পীদের। সুযোগ পেয়ে ছুটে গেলেন কিশোর রফি। কয়েকটি গান গেয়ে দিলেন নির্ভয়ে। সায়গল সস্নেহে কাছে ডেকে জানতে চাইলেন নাম। কিশোরটি বললেন, মোহাম্মদ রফি।

সায়গলের আসরে বাজিমাৎ করার পর থেকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি রফিকে। প্লেব্যাক গায়ক হওয়ার সুযোগ এসে যায় মাত্র ১৭ বছর বয়সে। মুম্বাইতে তার প্রথম ছবি ‘গাও কী গোরি’ (১৯৪২) । বৈজু বাওরা ছবির ‘ও দুনিয়াকে রাখোয়ালে’ গানটি রফিকে রাতারাতি মহাতারকা বানিয়ে দেয়। সংগীত পরিচালক নওশাদ আলী বলতেন ভারতের আধুনিক তানসেন।

মান্না দে বলেছিলেন, ‘রফির মতো গায়ক ভারতবর্ষ আর পায়নি।’

রফি এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন যে, সে সময়ে নায়করাই শর্ত জুড়ে দিতেন, তাদের ছবিতে রফির গান রাখতেই হবে। দিলীপ কুমার, রাজেন্দ্র কুমার, রাজ কাপুর, দেব আনন্দ, ধর্মেন্দ্র বা শশি কাপুরদেরও খুব কমই দেখা যেতো অন্য শিল্পীদের গানে ঠোঁট মেলাতে।

গান্ধিজীর প্রয়াণের পরপরই তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রফি গাইলেন ‘সুনো সুনো অ্যায় দুনিয়াওয়ালো, বাপুকি অমর কাহানি’ (১৯৪৮) সে গান শুনে জওহর লাল নেহেরু কেঁদে ফেলেছিলেন।

পাঞ্জাবি, মারাঠি, সিন্ধি, গুজরাটি, তেলেগু, বলতে গেলে ভারতের সব ভাষাতেই গান গেয়েছেন মোহাম্মদ রফি। এমনকি গেয়েছেন ইংরেজিতেও। শ্রোতারা সেই সব গান আজও শোনেন।

ঢাকা/টিপু

সর্বশেষ