ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৪ ১৪৩১

যেকারণে ব্রহ্মপুত্রের বুকে এতো চর 

সাতসতেরো ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১১, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আপডেট: ০৯:১৪, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
যেকারণে ব্রহ্মপুত্রের বুকে এতো চর 

ছবি: সংগৃহীত

ব্রহ্মপুত্রের পানির প্রধান উৎস দক্ষিণ-পশ্চিম তিব্বতের সীমায়ন গাঙ্গ হিমবাহ। তিব্বতের এই বরফগলা নদের নাম সাংপো, আসামে পরিচিতি পেয়েছে দিহাং নামে। এরপর গাঢ় পাহাড় ছুঁয়ে এই নদ বাংলাদেশে ঢোকার সময় নাম পেয়েছে ব্রহ্মপুত্র। 

সারাবিশ্বে নদ-নদীর মধ্যে পানি নিষ্কাশনের দিক থেকে নবম এবং দৈর্ঘ্যের হিসাবে ১৫ তম বৃহত্তম ব্রহ্মপুত্র নদ। হিমালয়ের কৈলাস শৃঙ্গ থেকে জন্ম নেওয়া এই নদ তিব্বতের বুকে প্রবাহিত হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম উপত্যকা পেরিয়ে প্রবেশ করেছে ভারতে। অঞ্চলভেদে সাংপো (তিব্বত), ইয়ারলুং জাংবো (চীন), লৌহিত্য, লোহিত, দিহাং (আসাম), পুরাতন ব্রহ্মপুত্র (বাংলাদেশ) এবং ‘ব্রহ্মপুত্র’ নামে পরিচিত।
 
ভারত সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে ৫৮টি নদ-নদী। তারমধ্যে একটি ব্রহ্মপুত্র। এটি প্রবেশ করেছে বাংলাদেশের কুড়িগ্রামের সীমান্ত জনপদ রৌমারির দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়ন দিয়ে। এই নদের উৎস তিব্বতে। 

বলা হয়ে থাকে, বয়ে চলা জলধারার সবগুলোই নদী নয়, কোনো কোনোটি নদ। উৎস থেকে মোহনা পর্যন্ত বয়ে চলার পথে যে জলস্রোত জন্ম দেয় শাখা-প্রশাখা সেটি বলা হয়ে থাকে নদী। আর উৎসস্থল থেকে আরেকটি নদীর সঙ্গে মিতালি হওয়ার আগ পর্যন্ত যে জলধারার বিস্তার ঘটেনি কোনো শাখা-প্রশাখায় সেটিই হচ্ছে নদ।

বাংলাদেশে এই নদের ক্ষেত্রে তেমনটি ঘটতে দেখা যায়নি। ব্রহ্মপুত্রের যমুনামুখী ধারায় মিলিত হয়েছে দুধকুমার, ধরলা, তিস্তা, করোতোয়া ও আত্রাই। তবুও ব্রহ্মপুত্রকে নদী নয়, নদ বলা হয়। ব্রহ্মপুত্রের আদি ধারা থেকে জন্ম হয়েছে বংশী, বানার, শিরকালী ও সুতিয়া নামের ছোট ছোট শাখা নদী। বলা হয়, পুরনো ব্রহ্মপুত্র ঢাকা বিভাগের প্রধান জলধারা। রৌমারী থেকে ব্রহ্মপুত্রের যমুনামুখী ধারাটি চলে গেছে বাংলাদেশের দক্ষিণে। আর আদি ধারাটি চলে গেছে দক্ষিণ-পূর্বে। 

বাংলাদেশ অঞ্চলে একে নদ বলার আরেকটি কারণ বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তে পাওয়া যায়, পুরুষবাচক নামের ক্ষেত্রে এদেশের মানুষ জলধারাকে নদ হিসেবে ডাকে। আর নারীবাচক নামের জলধারাকে বলে থাকে নদী। সেজন্য ব্রহ্মপুত্র এবং কপোতাক্ষ হলো নদ। অন্যদিকে পদ্মা, মেঘনা যমুনা হচ্ছে নদী। ব্রহ্মপুত্র বাংলাদেশের প্রধান তিনটি প্রণালীর একটি। ব্রহ্মপুত্র, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, যমুনা এবং তিস্তাসহ অনেকগুলো শাখা এবং উপনদীর সমন্বয়ে গঠিত এই প্রণালী গড়ে তুলেছে দেশের বৃহত্তম প্লাবণ ভূমি। 

অন্যসব স্রোতবাহী নদীর মতোই ব্রহ্মপুত্র পলি বহন করে এনে বদ্বীপ গড়েছে হাজার হাজার বছর ধরে। বছরে প্রায় ৭২৫ মিলিয়ন পলি বহন করে আনে ব্রহ্মপুত্র। এজন্যই ব্রহ্মপুত্রের বুকে চর আর চর। কোনো কোনো চর বর্ষা এলেই পানিতে ডুবে যায়। শুকনো মৌসুমে জেগে ওঠা চরই হয়ে ওঠে গবাদি পশুর চারণভূমি। 

লিপি

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়