ঢাকা     বুধবার   ০১ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৮ ১৪৩১

কারাবাখ থেকে শান্তিরক্ষী প্রত্যাহার করে নিচ্ছে রাশিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২৭, ১৮ এপ্রিল ২০২৪   আপডেট: ১৫:৫৪, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
কারাবাখ থেকে শান্তিরক্ষী প্রত্যাহার করে নিচ্ছে রাশিয়া

আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে যেই নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে যুদ্ধ হয়েছিল, সেখান থেকে শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রত্যাহার করে নিচ্ছে রাশিয়া। দুই দেশের মধ্যে শান্তি বজায় রাখতে ওই অঞ্চলে সেনা মোতায়েন করেছিল দেশটি।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়ার শান্তিরক্ষী বাহিনী আজারবাইজানের নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চল ত্যাগ করতে শুরু করেছে বলে নিশ্চিত করেছে ক্রেমলিন ও আজারবাইজান কর্তৃপক্ষ।

ছয় সপ্তাহ ধরে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মাঝে যুদ্ধ চলার পর ২০২০ সালের নভেম্বরে এক চুক্তির আওতায় দক্ষিণ ককেশাসের এই অঞ্চলে ২ হাজার সীমান্তরক্ষী মোতায়েন করে রাশিয়া। সেনাদের উপস্থিতি সত্ত্বেও গত বছরের সেপ্টেম্বরে আজারবাইজান পুনরায় অঞ্চলটি নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় এবং সেখান থেকে ১ লাখ ২০ হাজার আর্মেনীয়কে বিতাড়িত করে ও আর্মেনিয়ার প্রতি সহানূভুতিশীল রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেপ্তার করতে শুরু করে।

সে সময় রাশিয়া আর্মেনিয়ার স্বার্থ রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়, যা রাশিয়া প্রত্যাখান করে। চুক্তি অনুযায়ী ২০২৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত রাশিয়ান সেনাদের কারাবাখে থাকার কথা।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাতে আজারবাইজানের গণমাধ্যম প্রথম ধাপের রাশিয়ান সেনাদের কারাবাখ ত্যাগ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

বুধবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাাদিকদের জানান, আজারবাইজানের কারাবাখ থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘটনাটি সত্য।

আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা হিকমেত হাজিয়েভের বরাত দিয়ে আজেরটেক বার্তা সংস্থা জানায়, ২০২০ সালের ১০ নভেম্বর স্বাক্ষরিত ত্রিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী আজারবাইজানের ভূখন্ডে অবস্থানকারী রাশিয়ান সেনাদের দ্রুত অপসারণের বিষয়ে রাশিয়া ও আজারবাইজান উভয় দেশই সম্মত হয়েছে।

রাশিয়া এমন সময়ে সেনা সরিয়ে নিচ্ছে যখন আর্মেনিয়া সরকার তাদের দেশের প্রধান বিমানবন্দর থেকে রাশিয়ান সীমান্তরক্ষীদের সরিয়ে নিতে চাপ দিচ্ছে এবং পাশ্ববর্তী জর্জিয়ার জনগণ রাশিয়া সমর্থিত সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে।

আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনান তার দেশের সাথে রাশিয়ার ঐতিহাসিক জোটের বিষয়টিকে খোলাখুলি প্রশ্ন করছেন এবং পশ্চিমা বিশ্বের সাথে সম্পর্ক জোরদারের চেষ্টা চালাচ্ছেন।

১ আগস্টের মধ্যে আর্মেনিয়ার রাজধানী ইয়েরেভানের বিমানবন্দর থেকে রাশিয়ার সীমান্তরক্ষীদের সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী।

পাহাড়ী উপত্যকা নাগরনো কারাবাখ নিয়ে সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে সংঘাত চলছে। পূর্বের স্ব-ঘোষিত রিপাবলিক অব নাগরনো-কারাবাখ সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর আজারবাইজানের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল। মূলত আর্মেনিয়ার স্বাধীনতাকামী জনগণের মতের ভিত্তিতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যদিও এরপর থেকে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের ভিতরে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল।

নাগরনো-কারাবাখে মূলত খ্রিস্টান আর্মেনীয়দের বসবাস হলেও ৪ হাজার ৫০০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ভূখন্ডটি মুসলিম অধ্যুষিত আজারবাইজানের ভেতরে অবস্থিত।

নাগরনো-কারাবাখ আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের অংশ হিসেবে পরিচিত। তবে আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে। তাদের সমর্থনে রয়েছে আর্মেনিয়ার সরকার। অঞ্চলটির দখল নিয়ে এর আগে দেশ দুটির মধ্যে ১৯৯০ সালের যুদ্ধে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল।

/ফিরোজ/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়