ভারী বৃষ্টি ও ভূমিধসে ভারতে নিহত ৩৬
![ভারী বৃষ্টি ও ভূমিধসে ভারতে নিহত ৩৬ ভারী বৃষ্টি ও ভূমিধসে ভারতে নিহত ৩৬](https://cdn.risingbd.com/media/imgAll/2024April/Landslides-2405290603.jpg)
উত্তর-পূর্ব ভারতের চারটি রাজ্যে মঙ্গলবার ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ভারী বর্ষণ ও ভূমিধসের ঘটনায় অন্তত ৩৬ জন নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। একইসঙ্গে এই অঞ্চলের আটটি রাজ্যে সড়ক ও রেল যোগাযোগ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রাও স্থবির হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
বুধবার (২৯ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর মধ্যে কেবল মিজোরামেই ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে রাজ্যটির আইজল জেলায় একটি খনি ধসে ২১ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া নাগাল্যান্ডে চারজন, আসামে তিনজন এবং মেঘালয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
বৃষ্টি, দমকা বাতাসের সাথে, ভূমিধস, গাছ ও বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে পড়ার পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট পরিষেবাও ব্যাহত হয়েছে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের লুমডিং বিভাগের অধীনে নিউ হাফলং-জাটিঙ্গা লামপুর সেকশন এবং ডিটোকচেরা ইয়ার্ডের মধ্যে জলাবদ্ধতার কারণে অনেক ট্রেন হয় বাতিল করা হয়েছে বা না হয় আংশিকভাবে বাতিল এবং যাত্রার সময় পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, মিজোরামের আইজল জেলায় একটি পাথর খনিতে ধসে ২১ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আরও ১০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
এছাড়া জেলার সালেম, আইবাক, লুংসেই, কেলসিহ এবং ফলকাউনে ভূমিধসের ঘটনায় ছয়জন মারা গেছেন এবং আরও অনেকে নিখোঁজ হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
নাগাল্যান্ডে বিভিন্ন ঘটনায় অন্তত চারজন মারা গেছে এবং রাজ্যের বিভিন্ন অংশে ৪০ টিরও বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রাজ্যটির ফেক জেলার লারুরি গ্রামের কাছে নদীতে ডুবে এক নাবালক শিশু মারা গেছে এবং ওখা জেলার ডোয়াং বাঁধেও দুজনের ডুবে যাওয়ার ঘটনা জানা গেছে। এছাড়া ফেকে দেয়াল ধসে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
আসামের কামরূপ, কামরূপ (মেট্রো) এবং মরিগাঁও জেলায় তিনজন নিহত এবং আরও ১৭ জন আহত হয়েছেন। আসাম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (এএসডিএমএ) অনুসারে, রাজ্যের সোনিতপুর জেলার ঢেকিয়াজুলিতে একটি স্কুল বাসের ওপর গাছের ডাল ভেঙে পড়লে ১২ জন ছাত্র আহত হয়। মরিগাঁওয়ে বিভিন্ন ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন।
এএসডিএমএ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বনগাইগাঁও, চিরাং, দাররাং, ধুবরি, হোজাই, কামরূপ, কামরূপ মেট্রো, কার্বি আংলং, কোকরাঝাড়, মরিগাঁও, নগাঁও, সোনিতপুর, দক্ষিণ সালমারা এবং পশ্চিম কার্বি আংলং জেলায় প্রবল ঝড় হয়েছে।
অন্যদিকে মেঘালয় রাজ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে দুই ব্যক্তি মারা গেছেন এবং আরও ১০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে মঙ্গলবার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইস্ট জৈন্তিয়া হিলসে একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং ইস্ট খাসি হিলস জেলায় গাড়ি দুর্ঘটনায় অন্যজনের মৃত্যু হয়েছে। অবিরাম বর্ষণে ১৭টি গ্রামের বিপুল সংখ্যক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শিলং-মাওলাই বাইপাস এবং ওকল্যান্ডের বিভার রোডে ভূমিধসের খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া ল্যাংকাইর্ডিং, পিনথরবাহ, পোলো, সাউফুরলং এবং ডেমসেইয়ং এলাকায় আকস্মিক বন্যা হয়েছে।
ত্রিপুরায় ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিমি বেগে দমকা হাওয়াসহ রাজ্যের বেশিরভাগ অংশে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এতে ৪৭০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৭৫০ জনকে বিভিন্ন জেলায় ১৫ টি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য করেছে।
আগরতলায় সংবাদ মাধ্যমকে ব্রিফিংয়ে খাদ্য ও নাগরিক সরবরাহ মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে গড়ে ২১৫.৫ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে এবং উনাকোটি জেলায় সর্বোচ্চ ২৫২.৪ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
/ফিরোজ/
আরো পড়ুন