বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি না চালাতে আগের রাতেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সেনাবাহিনী
বাংলাদেশে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে দীর্ঘদিনের নেতা শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার আগের রাতে সেনাপ্রধান তার জেনারেলদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। ওই বৈঠকে কারফিউ বলবৎ রাখতে সেনারা বেসামরিক লোকদের ওপর গুলি চালাবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। বৈঠকের আলোচনা সম্পর্কে জানেন—এমন দুজন সেনা কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান পরদিন সকালে শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে যান। প্রধানমন্ত্রীকে তিনি জানান, কারফিউ বলবতে তার সেনারা অপারগ। বিষয়টি সম্পর্কে ব্রিফ করা হয়েছে, এমন একজন ভারতীয় কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।
ওই ভারতীয় কর্মকর্তা জানান, বার্তাটি পরিষ্কার ছিল, শেখ হাসিনার প্রতি আর সেনাবাহিনীর সমর্থন নেই।
ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যকার অনলাইন বৈঠকের বিশদ বিবরণ এবং শেখ হাসিনার কাছে দেওয়া বার্তার বিষয়টি আগে প্রকাশিত হয়নি। ওই বৈঠক আর বার্তায় ফুটে উঠেছিল, শেখ হাসিনা সেনাবাহিনীর সমর্থন হারিয়েছেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, গত রোববার দেশব্যাপী সংঘর্ষে কমপক্ষে ৯১ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়। এরপর দেশব্যাপী অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছিল। জুলাইয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ছাত্র নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর সবচেয়ে প্রাণঘাতী দিন ছিল এটি।
সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল সামি উদ দৌলা চৌধুরী রোববার সন্ধ্যার আলোচনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বিষয়টিকে যেকোনো বিশৃঙ্খলার পর হালনাগাদ তথ্য প্রদানে নিয়মিত বৈঠক হিসেবে বর্ণনা করেন। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে আরও প্রশ্ন করলে তিনি বিস্তারিত জানাননি।
শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তার ছেলে ও উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদের মন্তব্য পাওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ জানানো হলেও তিনি সাড়া দেননি বলে রয়টার্সের ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঢাকা/শাহেদ