ইরানের ‘ভিন্ন’ ধরনের হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের পায়ের নিচের মাটি সরে গেছে: বিশ্লেষক
তেহরানভিত্তিক লেখক ও ইরানবিষয়ক বিশেষজ্ঞ তোহিদ আসাদি বলেছেন, ইরান শুক্রবার রাতে ইসরায়েলে যে ধরনের হামলা পরিচালনা করেছে, সেটি খুব হিসেব কষে করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
ইরানি বাহিনী ইসরায়েলে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুর পরিবর্তে সামরিক আঘাত করেছে। এ ঘটনা দেখায় যে, তারা ‘এ অঞ্চলকে সর্বাত্মক যুদ্ধের দিকে টেনে না নেওয়ার’ সতর্কতা অবলম্বন করছে।
তোহিদ আসাদির মতে, ইরান যদিও তার মিত্রদের ও নিজ ভূখণ্ডে ইসরায়েলের হামলায় কয়েক মাস ধরে ধৈর্য প্রদর্শন করেছিল, শেষ পর্যন্ত তেহরান প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য ‘দায়বদ্ধ’ ছিল।
তিনি বলেন, ইরান ‘প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করছে, কিন্তু খুব গণনামূলক উপায়ে’।
আল জাজিরার ওয়াশিংন ডিসির সংবাদদাতা অ্যালান ফিশার মতে, ইরান এবার সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের হামলা চালিয়েছে। তেহরান সর্বশেষ গত ১৩ এপ্রিল ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছিল। দামেস্কে ইরানের বিপ্লবী গার্ডের পাঁচ সদস্যকে ইসরায়েল হত্যা করার প্রায় ১২ দিন পর ওই হামলা চালায় ইরান।
অ্যালান ফিশার বলেন, ইরান তখন যেভাবে সাড়া দিয়েছিল আর গতরাতে আমরা যা দেখেছি, তার থেকে অনেক আলাদা।
চলতি বছরের এপ্রিলে ইরান যখন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করেছিল, যুক্তরাষ্ট্র তখন আরব দেশগুলোর সঙ্গে একটি জোট গঠন করেছিল। ইরানের ছোড়া কিছু ড্রোন ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করতে ইসরায়েলকে সাহায্য করার জন্য ওই জোট গঠন করা হয়েছিল।
আল জাজিরার বিশ্লেষণ বলছে, ওই সময় ইরান ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন উৎক্ষেপণ করেছিল, কারণ এগুলো ইরান থেকে ইসরায়েলে পৌঁছাতে কিছুটা বেশি সময় নেয়। সম্ভবত ইরানের এই পদক্ষেপকে ইসরায়েলকে আরও সময় দেওয়ার একটি পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়েছিল। যা ইঙ্গিত দেয়, এটি সম্ভবত এক ধরনের প্রতীকী হামলা ছিল।
অ্যালান ফিশার মতে, ইরান এবার ইসরায়েলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। যার মানে হলো, এটি একটি ভিন্ন ধরনের আক্রমণ। তেহরানের এই ভিন্ন ধরনের আক্রমণের ঘটনায় বলা যায়, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের পায়ের নিচের মাটি স্পষ্টভাবে সরে গেছে।
/ফিরোজ/