ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

সহিংসতায় জেরবার, মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি

কলকাতা ব্যুরো || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৪২, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ২১:৫৭, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সহিংসতায় জেরবার, মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি

প্রায় দুই বছর ধরে উত্তাল মণিপুরে অবশেষে জারি হলো রাষ্ট্রপতি শাসন। কিছু দিন আগেই মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন এন বীরেন সিংহ। তার ইস্তফার পরে নতুন কোনো মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করতে পারেনি বিজেপি। এ অচলাবস্থার মাঝে বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) মণিপুরে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি করা হয়েছে।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর পদে ইস্তফা দেন বীরেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পর ইম্ফলে ফিরেই মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন তিনি। গত রোববার ইম্ফলে মণিপুরের রাজ্যপাল অজয়কুমার ভল্লার সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগপত্র জমা দেন বীরেন। 

আরো পড়ুন:

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞপ্তিতে মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির কথা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর বয়ানে লেখা রয়েছে, “আমি মণিপুরের রাজ্যপালের থেকে রিপোর্ট পেয়েছি। ওই রিপোর্ট দেখে এবং অন্য তথ্যগুলোর ভিত্তিতে আমার মনে হয়েছে, সংবিধান অনুসারে সেখানে সরকার চালানো সম্ভব হচ্ছে না।”

বীরেনের ইস্তফার পর মণিপুরে নতুন মুখ্যমন্ত্রী বাছার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা চালিয়েছে বিজেপি। উত্তরপূর্বে বিজেপির দায়িত্বে থাকা সম্বিত পাত্র বেশ কয়েক দফা বৈঠক করেছেন সে রাজ্যের বিধায়কদের সঙ্গে। গত দুই দিনে রাজ্যপাল ভল্লার সঙ্গে দুই দফায় বৈঠকও সেরেছেন সম্বিত। গত মঙ্গলবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি এ সারদা দেবীকে নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করেন সম্বিত। বুধবার আবার দেখা করতে যান রাজ্যপালের সঙ্গে। তবে নতুন মুখ্যমন্ত্রীর নাম চূড়ান্ত করতে পারেননি বিজেপি নেতৃত্ব।

২০২৩ সাল থেকে জনজাতির সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে মণিপুর। প্রাণ গেছে প্রায় ২৫০ মানুষের। ১৯৫১ সালের পর থেকে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় এই রাজ্যে ১১তম বারের মতো রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হলো।

মণিপুরে কখনও অশান্তি কমে, কখনও আবার হু হু করে বাড়তে থাকে অশান্তি। এসবের মধ্য়েই অনেকের মৃত্যু হয়েছে একাধিক ঘটনায়। একের পর এক হিংসার ঘটনা হয়েছে মণিপুরে। হাজার হাজার মানুষ এই অশান্তির কবলে পড়েছিলেন। বার বার তৎকালীন মুখ্য়মন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।

এদিকে, বিরোধীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সরকার পড়ে যেতে পারে এই আশঙ্কাতেই এন বীরেন সিংকে ইস্তফাপত্র জমা দিতে বাধ্য় করে বিজেপি।

মণিপুরের মুখ্য়মন্ত্রী ইস্তফা দেওয়ার পরে মুখ খুলেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তিনি লিখেছিলেন, প্রায় দুই বছর ধরে বিজেপির মুখ্য়মন্ত্রী বীরেন সিং মণিপুরে বিভাজনে উসকানি দিচ্ছিলেন। হিংসা, জীবনহানি, মণিপুরে ভারতের যে আদর্শ সেটা ধ্বংস হলেও মোদি তাকে কাজ চালিয়ে যেতে দিচ্ছিলেন। মুখ্য়মন্ত্রী বীরেন সিংয়ের ইস্তফা জনতার চাপে হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের তদন্ত, কংগ্রেসের অনাস্থার জেরে কাজ হয়েছে। কিন্তু সবথেকে বড় অগ্রাধিকার হল সেই রাজ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনা। মণিপুরের ক্ষততে প্রলেপ দেওয়া। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একবার মণিপুর সফর করা দরকার। সেখানকার মানুষের কথা শোনা দরকার। এরপর সেখানে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে তার পরিকল্পনার কথা বলা দরকার।

কলকাতা/সুচরিত/এসবি

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়